ম্যাচ বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণেই দেখছেন মিরাজ

প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে গুটিয়ে গেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৫০ থেকে ৪০০ রান করে ম্যাচ জেতার লক্ষ্যের কথা বললেন বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক।

নাহিদ রানাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন মিরাজ ও তাইজুল। ছবি: বিসিবি।

মেহেদী হাসান মিরাজের হালকা ঝুলিয়ে দেওয়া বল সোজা ছক্কা মেরে দিলেন ৯ নম্বরে নামা রিচার্ড এনগারাভা। স্টাম্প মাইকে হতাশাভরা কণ্ঠে কিপার জাকের আলিকে বলতে শোনা গেল, 'আটকে রাখ ভাই, রান বেড়ে যাচ্ছে। রানগুলো আবার করতেও হবে…!'

ওই ছক্কায় জিম্বাবুয়ের লিড বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫ রানে। শেষের ২ উইকেটে পরে আরও ৩৭ রান যোগ করে সফরকারীরা। সব মিলিয়ে ৮২ রানের লিড!

পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা শুরু করে অল্প রানেই সাদমান ইসলামের উইকেট হারানোর ধাক্কা। দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরতে পারতেন মাহমুদুল হাসান জয়ও। দুবার জীবন পেয়ে দিনটা অপরাজিত থেকে শেষ করতে পেরেছেন তরুণ ওপেনার। জিম্বাবুয়ে এখনও এগিয়ে ২৫ রানে। তবে দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ বললেন, ম্যাচ এখনও তাদের মুঠোতেই আছে।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিন বেশ পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবে তিন পেসারের সঙ্গে মিরাজের দারুণ বোলিংয়ে রোববার লড়াইয়ে ফিরিয়েছে তারা। এদিন ২০৬ রানে জিম্বাবুয়ের ১০ উইকেট নিয়েছে বাংলাদেশ। পরে সাদমানের উইকেট হারিয়ে তারা করেছে ৫৭ রান।

দিনের শুরুতে নাহিদ রানার গতির সঙ্গে বাউন্সের মিশেলে এলোমেলো হয় জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডার। পরে নিয়ন্ত্রিত অফ স্পিনে ক্যারিয়ারে একাদশতম ৫ উইকেট নিয়ে সফরকারীদের লিড একশর নিচে রাখেন মিরাজ। আরও কমেও হয়তো আটকান যেত জিম্বাবুয়েকে। কিন্তু লেজের লড়াইয়ে কিছু রান বাড়িয়ে নেয় তারা।

পরে দেড় ঘণ্টার জন্য ব্যাটিংয়ে নেমে সাদমানের উইকেট হারায় তারা। এটি নিয়ে অবশ্য চিন্তিত নন মিরাজ। নিজেদের সম্ভাবনাই বেশি দেখছেন তিনি।

“আমি মনে করি, ম্যাচ এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণেই আছে। ওরা সম্ভবত ৮২ রানের লিড পেয়েছে। আমরা (দ্বিতীয় ইনিংসে) একটা ভালো শুরু পেয়েছি, ২৫ রানে পিছিয়ে আছি। যেহেতু ১ উইকেট গিয়েছে, আরও ব্যাটসম্যান আছে। আমরা যদি ভালো একটা লক্ষ্য দিতে পারি তাদের, চার নম্বর দিন ওদের জন্য অনেক কঠিন হবে এই উইকেটে।”

সেই ভালো লক্ষ্যটা কত? শুরুতে নির্দিষ্ট করে কোনো সংখ্যা বলতে চাননি মিরাজ।

“এই উইকেটে কত সংগ্রহ করবেন, এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যত বেশি রান করতে পারি আমরা। আগে থেকে ঠিক করা যাবে না যে, আমরা এত রান ডিফেন্ড করব। আরও তিন দিন খেলা আছে। আমাদের ব্যাটসম্যান আছে। আশা করব, বোলারদের জন্য আমরা যত রান দিতে পারি।”

“প্রথম ইনিংসে আমরা ভালো করতে পারিনি। তবে এই ইনিংসে যেন এমন একটা স্কোর করতে পারি যাতে বোলাররা যথেষ্ট রান পায় এবং নির্ভার থেকে ভালোভাবে বোলিং করতে পারে।”

পরে অবশ্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের কথাও বললেন বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক।

“আমাদের প্রথমে লক্ষ্য থাকবে, লিড যেন পার করতে পারি। তারপর ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব নিয়ে যেন বড় একটা স্কোর করতে পারি। এখন যে উইকেট আছে, যদি যথাযথ ব্যাটিং করতে পারি... ৩৫০–৪০০ রান করতে পারি, এটা আমাদের দলের জন্য অনেক ভালো হবে।”

“টেস্ট ক্রিকেটে যদি ৩০০ রান লক্ষ্য দেওয়া হয়, প্রতিপক্ষের জন্য অনেক কঠিন। কারণ উইকেটে অনেক চেঞ্জ আসবে। আমাদের ওই দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে।”