মহানবীকে (স.) নিয়ে ‘কটূক্তি’ করার অভিযোগে এক সহকর্মীর ফাঁসির দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছিলেন কোহিনূর কেমিক্যালসের কর্মীরা।
Published : 22 Apr 2025, 09:14 PM
টানা পাঁচ ঘণ্টা রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক আটকে বিক্ষোভ দেখানোর পর রাস্তা ছেড়েছেন কোহিনূর কেমিক্যাল কোম্পানির শ্রমিকেরা।
তারা অবরোধ তুলে নেওয়ার পর মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে সাত রাস্তা থেকে মহাখালীর পথে যান চলাচল শুরু হয়েছে, তবে শ্রমিকরা তখনো ভেতরের সড়কগুলোতে জটলা পাকিয়ে অবস্থান করছিলেন।
তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) রফিকুল ইসলাম রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই তো ১৫-২০ মিনিট আগে রাস্তাটা স্বাভাবিক হয়েছে।”
এর আগে বেলা ৩টার দিকে তেজগাঁওয়ের তিব্বত ক্রসিংয়ে সড়কে অবস্থান নেন কোহিনূর কেমিক্যালসের কর্মীরা। তাদের অভিযোগ, তাদেরই এক সহকর্মী মহানবীকে (স.) নিয়ে ‘কটূক্তি’ করেছেন। তার বিচার ও ফাঁসির দাবি করতে থাকেন শ্রমিকরা।
তখন থেকেই দুই পাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে তীব্র যানজটে পড়ে হাজারো মানুষ।
যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে শ্রমিকদের অভিযোগ, অবরোধ শুরুর কিছুক্ষণ পরই তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার ঘোষণা দেয় কোহিনূর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকেরা তারপরও রাস্তা আটকে রাখেন।
তারা সেই সহকর্মীর ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ গিয়ে অনেক বুঝিয়েও তাদের সরাতে পারেনি।
বিকেলে সেখানে বিপুল সংখ্যাক পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়। জলকামানসহ দাঙ্গা দমনের সরঞ্জাম নিয়ে পুলিশ সদস্যরা সেখানে অবস্থান নেন।
পরে সাড়ে ৭টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ধাওয়ায় শ্রমিকরা মূল সড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল শুরু হয়। আশপাশের অলি-গলিতে জটলা করে থাকা শ্রমিকদের বাঁশি বাজিয়ে, লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও সেনাসদস্যরা রাত ৮টার দিকে কারখানার ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে থাকা সেই ব্যাক্তিকে ঘিরে ধরে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় নিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
শিল্পাঞ্চল থানার ওসি গাজী শামীমুর রহমান বলেন, “শ্রমিকরা যেসব দাবি জানিয়েছেন, সেসব দাবি প্রতিষ্ঠানটি মেনে নিয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কোম্পানি থেকে বহিস্কার ও বিচারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই ব্যক্তির ফাঁসি ও প্রকাশ্যে জুতার মালা গলায় দিয়ে কোম্পানি থেকে বের করার দাবি জানিয়ে তারা অবস্থান অব্যাহত রাখেন। শ্রমিকরা সরে যাওয়ার পর যান চলাচল শুরু হয়েছে।”