Published : 03 Jan 2023, 11:24 PM
বান্দরবানের লামা উপজেলায় ম্রো জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের ঘরবাড়ি ‘ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
সংবাদ মাধ্যমে এই ঘটনার খবর দেখে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, রোববার রাতে উপজেলার সরই ইউনিয়নের রেংয়েন ম্রো পাড়ায় ‘বর্বরোচিত ও নৃশংস’ হামলার ঘটনা ঘটে। এর সাথে লামা রাবার ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানির লোকজন জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন পাড়াবাসী। ওই এলাকায় ম্রো জাতিগোষ্ঠীর জুম জমিতে রাবার বাগান করা নিয়ে গত বছরের শুরু থেকেই দ্বন্দ্ব চলছে।
“২০২২ সালের ২৬ মার্চ লামা সরই ইউনিয়নে লাংকম ম্রো পাড়া, জয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়া ও রেংয়েন ম্রো পাড়া মিলে ৩৬টি পরিবারের বসবাস করা ৪০০ একর জায়গায় রাবার ও কাজু বাদাম চাষের লক্ষ্যে লামা রাবার কোম্পানি আগুন দেয়। আগুনে প্রায় ৩৫০ একর বনভূমি পুড়ে বিরান হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।"
বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ঘটনার পর কয়েক দিন ধরে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে পড়ে তিনপাড়ার ৩৬টি পরিবার। এরপর থেকেই ৪০০ একর জমি রক্ষায় আন্দোলন করে আসছে পাড়াবাসী। এর মধ্যে রেংয়েন ম্রো পাড়ার একটি ঝিরিতে বিষ ঢালা ও ৩০০টি কলাগাছ কেটে ফেলার অভিযোগও ওঠে রাবার কোম্পানির লোকজনের বিরুদ্ধে।
লামায় রাতের আঁধারে ম্রোদের বাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের অভিযোগ
"রোববার রাতের হামলায় ম্রোদের রেংয়েন ম্রো পাড়ার তিনটি ঘর আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আরো তিনটি ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলা হয়েছে। পাড়ার অন্য দুটি ঘরে ভাঙচুর ও ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে ফেলা হয়। ঘরের ভেতরে চাল, রান্না করা ভাত ও শীতের কাপড় এলোমেলো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোন অগগ্রতি হয়নি।"
সাংস্কৃতিক সংগঠনটির বিবৃতিতে বলা হয়, এর আগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় আদিবাসী ও সংখ্যায় কম জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি এবং জমি দখলের জন্য এ ধরনের হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
“সেগুলোর কোনটির ক্ষেত্রেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় আবারো এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস পেয়েছে দুর্বৃত্তরা।”
লামায় ম্রো জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।