Published : 03 May 2025, 03:11 PM
জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা দেশটির প্রধান বিরোধীদল অলটারনেটিভ ফর জার্মানিকে ‘উগ্রবাদীদের’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
এর ফলে তারা কট্টর ডান এ রাজনৈতিক দলের ওপর ব্যাপক নজরদারি চালানোর সুযোগ পাবে, সঙ্গে দলটি নিষিদ্ধের দাবিও নতুন করে সামনে আসবে।
এএফডি বলেছে, এই পদক্ষেপ ‘গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত’।
ইউরোপের বিভিন্ন ডানপন্থি রাজনীতিক ও দলের পাশাপাশি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বার্লিনের এমন পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বিশেষজ্ঞদের এক হাজার ১০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এএফডিকে ‘বর্ণবাদী’ ও ‘মুসলিমবিরোধী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যে কারণে তাদেরকে ‘উগ্রবাদী’ তালিকায় ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে জার্মান অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা বিএফভি।
এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এখন দলটির নেতাকর্মীদের ফোন ও ইমেইলে আড়ি পাততে পারবেন এবং তাদের সম্বন্ধে তথ্য জানতে চর নিয়োগের সুযোগ পাবেন।
জার্মানিতে ‘উগ্রবাদী’ তালিকায় এখন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) মতো নব্য-নাৎসিবাদী বিভিন্ন দল, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো ইসলামপন্থি সশস্ত্র দল এবং মার্কসিস্ট-লেনিনিস্ট পার্টি অব জার্মানির মতো কট্টর-বাম দলগুলো রয়েছে।
বিএফভি এর আগে এএফডিকে ‘সন্দেহভাজন উগ্রবাদী’ সংগঠনের তালিকায় ফেলেছিল, এ নিয়ে এই মুহূর্তে জার্মানির সবচেয়ে বড় বিরোধী দলটি আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েও সুবিধা করতে পারেনি।
ইউরোপজুড়ে গত কয়েক বছর ধরে কট্টর-ডানপন্থিদের ব্যাপক উত্থান লক্ষ্য করা গেলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তারা একের পর এক ধাক্কা খাচ্ছেন। ফ্রান্সে মারিন লো পেনকে ২০২৭ সালের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, প্রথম রাউন্ডে এক ডানপন্থি প্রার্থী জেতার পর রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। তার ধারাবাহিকতায় এবার জার্মানিতেও এএফডি ‘উগ্রবাদী’ তালিকায় ঢুকল।
“খুবই গুরুতর ঘটনা। ফ্রান্স ও রোমানিয়ার পর, (তথাকথিত) গণতন্ত্রের আরেকটি ছিনতাই?” এক্সে এমনটাই লিখেছেন ইতালির কট্টর ডান দ্য লিগের নেতা ও দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী মাতিও সালভিনি।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স লিখেছেন, জার্মান শাসকরা চাইছে দলটিকে শেষ করে দিতে।
“পশ্চিমারা একত্রে বার্লিন ওয়াল ভেঙে ফেলেছিল। এখন সেটি পুনর্নির্মিত হচ্ছে। রাশিয়া বা সোভিয়েত ইউনিয়ন তা করছে না, করছে জার্মান শাসকগোষ্ঠী,” বলেছেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও লিখেছেন, “এটা মোটেও গণতন্ত্র নয়, ছদ্মবেশি নির্দয় শাসন।”
তার এ এক্স পোস্টের জবাবে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লিখেছে, “এটাই গণতন্ত্র।” স্বতন্ত্র ও বিস্তারিত তদন্তের পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
“ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে যে, ডানপন্থি উগ্রবাদ থামানো দরকার,” বলেছে তারা।
এএফডির আরেক সমর্থক মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক বলেছেন, এএফডিকে নিষিদ্ধ করা হলে তা হবে গণতন্ত্রের প্রতি ‘চরম আঘাত’।
এএফডি বলছে তারা ‘গণতন্ত্রকে বিপদাপন্ন করে’ এমন মানহানিকর আক্রমণের বিরুদ্ধে তাদের আইনি লড়াই অব্যাহত রাখবে।
সর্বশেষ নির্বাচনে তারা পার্লামেন্টের ৬৩০টি আসনের ১৫২টি জিতেছিল, মোট ভোটের ২০ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যাগে পুরেছিল।