স্প্যানিশ ফুটবল
Published : 04 May 2025, 03:02 AM
অনেক পরিবর্তন আনা বার্সেলোনা পিছিয়ে পড়ল শুরুতেই। অবনমন নিশ্চিত হয়ে যাওয়া রেয়াল ভাইয়াদলিদের জমাটরক্ষণের জন্য প্রথমার্ধে গোলরক্ষকের তেমন পরীক্ষাই নিতে পারল না হান্সি ফ্লিকের দল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ঠিকই ছন্দে ফিরল দলটি। ঘুরে দাঁড়িয়ে পেল দারুণ জয়।
লা লিগায় পয়েন্ট টেবিলের দুই প্রান্তে থাকা দুই দলের ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। শনিবার রাতে ইভান সানচেসের গোলে এগিয়ে যায় ভাইয়াদলিদ। দ্বিতীয়ার্ধে রাফিনিয়া সমতা ফেরানোর পর দলকে তিন পয়েন্ট এনে দিয়েছেন ফের্মিন লোপেস।
ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৩-৩ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচ থেকে ৯ পরিবর্তন আনেন ফ্লিক। টিকে যান কেবল পেদ্রি ও জেরার্দ মার্তিন। এতো পরিবর্তনের খুব বেশি প্রভাব পড়েনি বার্সেলোনার খেলায়।
গত অগাস্টে দুই দলের সবশেষ দেখায় রাফিনিয়ার হ্যাটট্রিকে ৭-০ গোলে জিতেছিল বার্সেলোনা। চলতি মৌসুম এখন পর্যন্ত যা তাদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। প্রতিপক্ষের মাঠে সবশেষ ম্যাচে অবশ্য তিক্তি অভিজ্ঞতা হয়েছিল কাতালান ক্লাবটি। ২০২৩ সালে ৩-১ গোলে হেরেছিল তারা।
সেই ম্যাচে বার্সেলোনা দ্বিতীয় মিনিটে পিছিয়ে পড়েছিল আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টিয়ানসেনের আত্মঘাতী গোলে। এবার ষষ্ঠ মিনিটে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। সেখানে থাকল ভাগ্যের প্রবল ছোঁয়া। সানচেসের আপাত সাদামাটা শট রোনাল্দ আরাউহোর পায়ে লেগে অদ্ভূত বাউন্সে হয়ে উঠল ভয়ঙ্কর। কিছুই করার ছিল না চোট কাটিয়ে ২২২ দিন পর মাঠে ফেরা বার্সেলোনা অধিনায়ক ও গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের।
দশম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট রাখতে পারে সফরকারীরা। পাউ ভিক্তরের বাইসাইকেল কিক যায় সরাসরি গোলরক্ষক আন্দ্রে ফেরেইরার হাতে।
পরের মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে দারুণ সুযোগ পান রাউল মোরো। একটু এগিয়ে এসে তার শট ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি টের স্টেগেন।
পঞ্চদশ মিনিটে লোপেসের দারুণ ক্রসে ভিক্তরের হেড কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান ভাইয়াদলিদ গোলরক্ষক। ১৫ মিনিট পরে আনসু ফাতির বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে ফেরান ফেরেইরা।
কাঁধে চোট পেয়ে ৩৬তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন দানিয়েল রদ্রিগেস। মিনিট দুয়েক ওয়ার্ম আপ করে ৩৮তম মিনিটে মাঠে আসেন লামিনে ইয়ামাল।
ডি বক্সে ভাইয়াদলিদের অসংখ্য খেলোয়াড়ের উপস্থিতিতে গোলরক্ষের খুব একটা পরীক্ষা নিতে পারছিল না বার্সেলোনা। ইয়ামাল, ফাতি, লোপেসদের শট ঠেকিয়ে দিচ্ছিলেন স্বাগতিকদের কেউ না কেউ।
পিছিয়ে থাকার হতাশা নিয়ে বিরতিতে যায় বার্সেলোনা। ৮২ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১৫টি শট নেয় সফরকারীরা, এর কেবল তিনটি ছিল লক্ষ্যে। অন্য দিকে ভাইয়াদলিদের দুটি শটই ছিল লক্ষ্যে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রাফিনিয়া, ফ্রেংকি ডি ইয়ংকে মাঠে নামান বার্সেলোনা কোচ। তাতে বাড়ে সফরকারীদের আক্রমণের ধার। ৫১তম মিনিটে রাফিনিয়ার দারুণ ফ্রি কিক কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ভাইয়াদলিদ গোলরক্ষক।
গোলের জন্য এরপর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বার্সেলোনার। ৫৪তম মিনিটে ইয়ামালের ক্রসে একটুর জন্য হেড করতে পারেননি আরাউহো। এগিয়ে এসে ফিস্ট করে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেন ফেরেইরা। বল পেয়ে যান রাফিনিয়া। বুক দিয়ে বল নামিয়ে ঠাণ্ডা মাথার শটে জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। ম্যাচে ফেরে সমতা।
ছয় মিনিট পর চমৎকার গোলে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন লোপেস। মার্তিনের ক্রসে ডি বক্সের ঠিক ভেতর থেকে দূরের পোস্ট ঘেঁষে জাল খুঁজে নেন এই তরুণ। ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি ভাইয়াদলিদ গোলরক্ষক।
৬৯তম মিনিটে পায়ের দুর্দান্ত কারিকুরিতে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন এক্তর ফোর্ত। ডিফেন্ডাররা ঘিরে রাখলেও জায়গা করে নিয়ে শট নেন তিনি। পোস্টের ভেতর দিকে লেগে বল ফেরে মাঠে!
৭৪তম মিনিটে সমতা ফেরানোর দারুণ সুযোগ পায় ভাইয়াদলিদ। অরক্ষিত হুয়ানমি লাতাসার শট দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে হাত বাড়িয়ে ঠেকিয়ে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক টের স্টেগেন।
ছয় মিনিট পর গোললাইন থেকে ইয়ামালের শট ফিরিয়ে দেন ইতালিয়ান ডিফেন্ডার আন্তোনিও কান্দেলা। ৮৭তম মিনিটে ওলমোর ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়দে দেননি ফেরেইরা।
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে ফ্রি-কিক লক্ষ্যে রাখতে পারেননি রাফিনিয়া। ষষ্ঠ মিনিটে ফের একই চেষ্টায় ব্যর্থ হন তিনি।
৩৪ ম্যাচে ২৫ জয় ও চার ড্রয়ে ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে চূড়ায় বার্সেলোনা। এক ম্যাচ কম খেলা রেয়াল মাদ্রিদ ৭২ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুই নম্বরে।