শুধু হজম প্রক্রিয়া নয়- মেজাজ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখার পাশপাশি প্রদাহ কমাতেও পর্যাপ্ত প্রোবায়োটিকের দরকার রয়েছে।
Published : 30 Oct 2022, 02:40 PM
কম্বুচা, কিমচি, কেফির, টক দই- এই খাবারগুলো তৈরি হয় গাঁজানো পদ্ধতিতে। আর এসব খাবার অন্ত্রের জন্য উপকারী।
যেভাবে কাজ করে
নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘ইন্টেগ্রেটিভ অ্যান্ড ফাংশনাল মেডিসিন’য়ের ডা. রাফায়েল কেলম্যান বলেন, “প্রোবায়োটিক’ হল জীবন্ত ‘মাইক্রো-অর্গানিজম’ বা মাইক্রোবায়োম যা বেশি পরিমাণে খেলে অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়ার ভারসাম্য বজায় থাকে।”
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “আমাদের অন্ত্রে যে ব্যাক্টেরিয়া থাকে সেগুলোর মধ্যে উপকারী ও ক্ষতিকর দুই ধরনেরই রয়েছে। এই উপকারী ব্যাক্টেরিয়াগুলোর অন্ত্রের সুস্বাস্থ্যে জন্য খুবই জরুরি। কারণ এদের মাত্রা অন্ত্রের থাকা ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়ার তুলনায় বেশি হতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রোবায়োটিক’ ‘ইন্সুলিন রেজিস্ট্যান্স’ থেকে মুক্তি দেয়, প্রদাহ কমায়, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। হজমতন্ত্র আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সচল ও জোরদার করে।”
অন্ত্রের এদের মাত্রা বেশি হলেই সেখানে ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়ার মাত্রা কম থাকবে। প্রতিদিন ‘প্রোবায়োটিক’ গ্রহণ করলে তা শরীরের জন্য রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।”
প্রোবায়োটিক কি আসলেই দরকার?
ডা. কেলম্যান বলেন, “প্রতিটি মানুষের ‘প্রোবায়োটিক’ দরকার অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য। অন্ত্রের সঙ্গে মানুষের মেজাজ, বিপাকক্রিয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হজম, হরমোন, প্রদাহ, জিনগত বৈশিষ্ট্য গভীরভাবে সম্পর্ক যুক্ত।”
অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়া ভালো রাখার উপায় হল, তাদের কী খাবার দেওয়া হচ্ছে সেটায় পরিবর্তন আনা। তাই খাদ্যাভ্যাসে পর্যাপ্ত পরিমাণে ‘প্রিবায়োটিক’ ও ‘প্রোবায়োটিক’ দুটোই থাকতে হবে।
‘প্রোবায়েটিক’ পাওয়া যাবে ‘সাওয়ারক্রাউট’, টক দই, কেফির, কম্বুচা ইত্যাদি থেকে। ‘প্রিবায়োটিক’ পাওয়া যাবে পেঁয়াজ, রসুন, ‘অ্যাসপারাগাস’, ‘লিকস’, ‘জিকামা’ ইত্যাদি থেকে।
‘সাপ্লিমেন্ট’ হিসেবেও ‘প্রোবায়োটিক’ গ্রহণ করা যেতে পারে। এত কিছুর ভীড়ে কোনটা আপনার জন্য প্রযোজ্য সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমানো, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রন এবং দিনের মধ্যে শান্ত একটা সময় কাটানোও জরুরি।
যতটুকু দরকার
যুক্তরাষ্ট্রের ‘কেয়ার অফ’য়ের ‘মেডিকাল ডিরেক্টর’ ম্যাগি লুথার বলেন, “প্রোবায়োটিক’য়েল ভোজ্য উৎসগুলো প্রতিবার খাওয়া সঙ্গে শরীরে অন্তত ১শ’ কোটি ‘মাইক্রো-অর্গানিজম’ শরীরে প্রবেশ করে। ‘সাপ্লিমেন্ট’ থেকে ‘প্রোবায়োটিক’য়ের চাহিদা মেটাতে হলে এই মাত্রায় তা গ্রহণ করতে হবে।”
দুটি প্রজাতি হয় ‘প্রোবায়োটিক’য়ের- ‘ল্যাক্টোব্যাসিলাস’ ও ‘বিফিডোব্যাক্টেরিয়াম’। ‘ল্যাক্টোব্যাসিলাস’ কাজ করে ক্ষুদ্রান্ত্রে আর ‘বিফিডোব্যাক্টেরিয়াম’ বৃহদান্ত্রে।
অন্ত্রের সুস্বাস্থ্যের জন্য দুটোই পর্যাপ্ত পরিমাণে দরকার।
আরও পড়ুন: