মুমিনুল হকের অপরাজিত ১৭৫ রানে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বাংলাদেশ।
Published : 31 Jan 2018, 08:03 AM
মুমিনুলের ব্যাটে বাংলাদেশের দারুণ দিন
মুমিনুল হকের সেঞ্চুরি আর তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমের ফিফটিতে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। দিনের খেলা শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৭৪ রান। টেস্টে যে কোনো এক দিনে বাংলাদেশ এরচেয়ে বেশি রান তুলেছে মাত্র দুইবার।
তামিম-ইমরুলের উদ্বোধনী জুটি বাংলাদেশকে এনে দেয় ভালো শুরু। দুই ব্যাটসম্যান নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি। কিন্তু সুযোগ দুই হাতে কাজে লাগিয়েছেন মুমিনুল। বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান অপরাজিত ১৭৫ রানে। ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানি তার সামনে। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ খেলছেন ৯ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ৩৭৪/৪ (তামিম ৫২, ইমরুল ৪০, মুমিনুল ১৭৫*, মুশফিক ৯২, লিটন ০, মাহমুদউল্লাহ ৯*; লাকমল ১৭-৩-৪৩-২, কুমারা ১২-১-৬৪-০, দিলরুয়ান ২৪-৪-৯৮-১, হেরাথ ২০-১-১০০-০, সান্দাকান ১৩-১-৫৮-১, ধনঞ্জয়া ৪-০-১১-০)
টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ
টেস্টের প্রথম দিনে নিজেদের সর্বোচ্চ রান পেয়েছে বাংলাদেশ। টেস্টের শুরুর দিনে তাদের আগে সেরা ছিল ২০১২ সালে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৩৬৫ রান।
৮৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৭৩ রান। মুমিনুল হক ১৭৪ ও মাহমুদউল্লাহ ৯ রানে ব্যাট করছেন।
আবার বল ছেড়ে আউট লিটন
দক্ষিণ আফ্রিকায় টানা দুই টেস্টে বল ছেড়ে আউট হয়েছিলেন লিটন দাস। কিছুই যেন শিখেননি এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। আবার আউট হলেন বল ছেড়ে দিয়ে।
লিটনকে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ দেন সুরঙ্গা লাকমল। অফ স্টাম্পের একটু বাইরে পিচ করা বল ভেতরে ঢুকে অফ স্টাম্প উড়িয়ে দেয়। সেই বল কেন লিটন ডিফেন্স না করে ছেড়ে দিলেন তিনিই বলতে পারবেন।
৮৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩৫৬/৪। ক্রিজে মুমিনুল হকের সঙ্গী অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
দ্বিতীয় নতুন বলে ভাঙল জুটি
দ্বিতীয় নতুন বলে বাংলাদেশের ২৩৬ রানের বিশাল জুটি ভেঙেছে শ্রীলঙ্কা। মুশফিকুর রহিমকে কট বিহাইন্ড করেছেন সুরঙ্গা লাকমল।
অফ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটকিপার নিরোশান ডিকভেলাকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মুশফিক। ১৯২ বলে খেলার তার ৯২ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসটি গড়া ১০টি চারে। ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো আউট হলেন নব্বইয়ের ঘরে।
দুই হাজারে বাংলাদেশের দ্রুততম মুমিনুল
দ্বিতীয় নতুন বলের প্রথম ওভারে রঙ্গনা হেরাথকে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের টেস্ট রানকে দুই হাজারে নিয়ে গেছেন মুমিনুল হক। ১ হাজার ৮৪০ রান নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্ট শুরু করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। হেরাথকে লং অফ দিয়ে উড়িয়ে তৃতীয় সেশনে স্পর্শ করেন মাইলফলক।
বাংলাদেশের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে দুই হাজার রান করলেন মুমিনুল। একটা জায়গায় তিনি বাকি সবার চেয়ে এগিয়ে। সবচেয়ে কম- ৪৭ ইনিংসে তিনি ছুঁয়েছেন মাইলফলক। ৫৩ ইনিংসে দুই হাজার ছুঁয়ে রেকর্ড ছিল তামিম ইকবালের অধিকারে।
মাত্র ২২ ইনিংসে দুই হাজার ছুঁয়ে বিশ্বরেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ডন ব্র্যাডম্যানের।
মুমিনুলের দেড়শ
ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো দেড়শ রানের দেখা পেলেন মুমিনুল হক। তার ব্যাটে প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহের পথে বাংলাদেশ।
লাকশান সান্দাকানের বলে সিঙ্গেল নিয়ে দেড়শ রানে যান মুমিনুল। এই রান করতে তার খেলতে হয়েছে ১৭০ বল। ২০১৩ সালে চট্টগ্রামেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দেড়শ ছুয়ে ১৮১ রান করেছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
দেড়শ করার পথে দারুণ এক কীর্তি গড়েছেন মুমিনুল। টেস্টের প্রথম দিনে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের কৃতিত্ব এখন তার। ২০০৬ সালে ফতুল্লা টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শাহরিয়ার নাফীসের ১৩৮ ছিল আগের সেরা।
৭৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩২৮/২। মুমিনুল ১৫১ ও মুশফিকুর রহিম ৮০ রানে ব্যাট করছেন।
মুমিনুল-মুশফিক জুটিতে দুইশ
বিশাল জুটিতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে ৫০ ওভারে দুই জনে গড়েছেন ২০১ রানের জুটি।
লাহিরু কুমারাকে চার হাঁকিয়ে জুটিকে দুইশ রানে নিয়ে যান মুশফিক। টেস্টে এটি বাংলাদেশের সপ্তম দুইশ ছোঁয়া জুটি। চট্টগ্রামে তৃতীয়।
৭৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩২৩/২। মুমিনুল ১৪৮ ও মুশফিক ৭৮ রানে ব্যাট করছেন।
বাংলাদেশের তিনশ
৭১তম ওভারে তিনশ পেরিয়েছে বাংলাদেশের সংগ্রহ। এক প্রান্তে উইকেটের চারপাশে শট খেলছেন মুমিনুল হক, আরেক প্রান্তে মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে নির্ভরতা। দুই জনের জুটি ছুটেছে দুইশ রানের দিকে।
৭১ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩০১/২। মুমিনুল ১৩৪ ও মুশফিক ৭০ রানে খেলছেন।
মুশফিকের ফিফটি, জুটির দেড়শ
একদমই ঝুঁকি নিচ্ছেন না এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নিচ্ছেন দলকে। লাকশান সান্দাকানের বলে কাট করে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ারের ১৯তম টেস্ট ফিফটি স্পর্শ করেন মুশফিক।
অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে মুমিনুলের সঙ্গে দেড়শ রানের জুটি গড়েছেন মুশফিক। এ জন্য তাদের লেগেছে ২১২ বল। টেস্টে এটাই তাদের জুটিতে প্রথম দেড়শ। এর আগে দুই জনে ২০১৩ সালে এই মাঠেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে করেছিলেন ১২১ রান।
৬৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৭০/২। মুমিনুল ১২২ ও মুশফিক ৫১ রানে অপরাজিত।
বাংলাদেশের দারুণ সেশন
প্রথম সেশনের শেষ ঘণ্টায় বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে উইকেটবিহীন দ্বিতীয় সেশনে আবার টেস্টে দৃঢ় অবস্থানে স্বাগতিকরা।
২৭.৪ ওভারে প্রথম সেশনে দুই উইকেটে ১২০ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে ২৮.৪ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে যোগ করেছে ১৩০ রান।
চা-বিরতিতে যাওয়ার সময় স্বাগতিকদের সংগ্রহ ২৫০/২। মুমিনুল হক ১০৩ বলে ১০৭ ও মুশিফিকুর রহিম ১০৭ বলে ৪৭ রানে ব্যাট করছেন। অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে দুই জনে গড়েছেন ১৩০ রানের জুটি।
উইকেটের চারপাশে শট খেলছেন মুমিনুল। স্পিনের বিপক্ষে বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের ফুটওয়ার্ক ছিল দারুণ। দুই পেসার সুরঙ্গা লাকমল, লাহিরু কুমারার বাউন্সারের ফাঁদ এড়িয়েছেন চমৎকারভাবে।
প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এক হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়া মুশফিক খেলছেন নিজের মতো করে। ত্রিদেশীয় সিরিজে কয়েকবার সুইপ করে আউট হওয়া এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকে এখন পর্যন্ত খুব একটা সুইপ করতে দেখা যায়নি।
মুমিনুলের পঞ্চম সেঞ্চুরি
চট্টগ্রামে ফিফটি পেলে সেটাকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করাকে অভ্যাসে বানিয়ে ফেলেছেন মুমিনুল। জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে এ নিয়ে তার পঞ্চাশ ছোঁয়া চারটি ইনিংসই গেল তিন অঙ্কে।
তিন বছরের বেশি সময় পর সেঞ্চুরি পেলেন মুমিনুল। ৯৬ বলে গেলেন তিন অঙ্কে। তার শেষ ৭৫ রান আসে মাত্র ৫৭ বলে।
কাভারের ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে বল পাঠিয়েই সেঞ্চুরি উদযাপন শুরু করেন মুমিনুল। বল বাউন্ডারি পার হওয়ার পর ছুটতে ছুটতে সীমানার অনেকটা কাছে চলে যান তিনি। এর আগে এমনভাবে সেঞ্চুরি উদযাপন করতে দেখা যায়নি তাকে।
স্পিনে মুমিনুলের পায়ের কাজ ছিল চোখ জুড়ানো। বাংলাদেশের সাবেক কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ব্যাপারে বলেছিলেন, অফ স্পিনে দুর্বল। শ্রীলঙ্কা সফরে বাংলাদেশের শততম টেস্ট থেকে বাদ পড়েছিলেন।
বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ একদমই ভাবাতে পারেননি মুমিনুলকে। অফ স্পিনার দিলরুয়ান পেরেরা সুবিধা করতে পারেননি তার ফুটওয়ার্কের সামনে। চায়নাম্যান লাকশান সান্দাকানকেও সহজেই খেলছেন মুমিনুল।
৫৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৪৩/২। ৯৯ বলে ১০৩ রানে অপরাজিত মুমিনুল। ৯৩ বলে ৪৪ রানে খেলছেন মুশফিকুর রহিম।
দ্রুত মুমিনুল-মুশফিক জুটিতে একশ
অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট শতরানের জুটি গড়েছেন মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে তৃতীয় উইকেটে তিন অঙ্কের জুটি পেল বাংলাদেশ।
১২৬ বলে আসে মুমিনুল-মুশফিকের শতরানের জুটি। জুটিতে অগ্রণী বাঁহাতি মুমিনুল। প্রচুর শট খেলে এলোমেলো করে দিচ্ছেন লঙ্কান বোলিংকে। সাবধানী ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন মুশফিক।
৫০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২২৮/২। মুমিনুল ৮৩ বলে খেলছেন ৮৮ রানে। মুশফিক ৮৭ বলে অপরাজিত ৪৩ রানে।
৪৪ ওভারে বাংলাদেশের দুইশ
সুরঙ্গা লাকমলকে কাট করে চার হাঁকিয়ে দলকে দুইশ রানে নিয়ে গেছেন মুশফিকুর রহিম। ২০ ওভারে তিন অঙ্কে যাওয়া স্বাগতিকদের স্কোর দুইশ রানে গেছে ৪৩.৪ ওভারে।
৪৪ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ২০৩/২। মুমিনুল হক ৭৩ বলে ৭৬ ও মুশফিক ৬৫ বলে ৩১ রানে ব্যাট করছেন।
দ্রুত বাংলাদেশের একশ
তামিম ইকবালের বিদায়ের কোনো প্রভাব দলের ওপর পড়তে দেননি ইমরুল কায়েস-মুমিনুল হক। দুই জনের ব্যাটে দ্রুত রান তুলছে বাংলাদেশ। ২০ ওভারে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছে স্বাগতিকদের সংগ্রহ।
দিলরুয়া পেরেরাকে বেরিয়ে এসে পুল করে বাউন্ডারিতে দলকে একশ রানে নিয়ে যান মুমিনুল।
২০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১০১/১। ইমরুল ৫১ বলে ২৯ রানে অপরাজিত। মুমিনুল ১৭ বলে খেলছেন ১৮ রান নিয়ে।
প্রথম ঘণ্টায় ৬৭ রান
বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিয়েছেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ঘণ্টায় বিনা উইকেটে উঠেছে ৬৭ রান।
জমে উঠতে সময় নেয়নি দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের উদ্বোধনী জুটি। পেসাররা একদমই ভোগাতে পারেননি তাদের। স্পিনারদেরও তারা খেলছেন সাবলীলভাবে।
অফ স্পিনার দিলরুয়ান পেরেরাকে তামিম হাঁকিয়েছেন ছক্কা-চার। ত্রয়োদশ ওভারে আক্রমণে আসা রঙ্গনা হেরাথ নিজের প্রথম ওভারে পরীক্ষা নিতে পারেননি দুই ব্যাটসম্যানের।
১৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৬৭/০। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে তামিম ৪৫ বলে অপরাজিত ৪৯ রানে। ইমরুল ৪০ বলে খেলছেন ১৭ রানে।
অষ্টম ওভারে স্পিন
দুই পেসার সুরঙ্গা লাকমল ও লাহিরু কুমারা খুব একটা পরীক্ষা নিতে পারেননি তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের। শুরুর জুটি ভাঙতে অষ্টম ওভারে অফ স্পিনার দিলরুয়ান পেরেরাকে আক্রমণে এনেছেন দিনেশ চান্দিমাল।
বেরিয়ে এসে এক্সট্রা-কাভার দিয়ে চার হাঁকিয়ে দিলরুয়ানকে স্বাগত জানিয়েছেন তামিম।
শুরুর জুটিতে দ্রুত এগোচ্ছে বাংলাদেশ। ৮ ওভারে ৪৫ রান তুলে ফেলেছেন দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তামিম ৩৪ ও ইমরুল ১১ রানে ব্যাট করছেন।
তামিমের টানা তিন চার
টেস্টে ফেরা লাহিরু কুমারাকে টানা তিন চারে স্বাগত জানান তামিম ইকবাল। প্রথম বলে ফ্লিক করে সিঙ্গেল নিয়ে সঙ্গীকে স্ট্রাইক দেন ইমরুল কায়েস।
পরের তিনটি বল সীমানার বাইরে পাঠান তামিম। প্রথম চারে আছে ভাগ্যের ছোঁয়া। ব্যাটের কানায় লেগে দ্বিতীয় স্লিপের পাশ দিয়ে হয়ে যায় বাউন্ডারি।
কুমারার পরের দুটি বল ছিল ফুল লেংথের। প্রথমটি লেগ স্টাম্পে, গ্ল্যান্স করে বাউন্ডারি তুলে নেন তামিম। পরেরটি অফ স্টাম্পে, স্ট্রেট ড্রাইভে আবার পাঠান সীমানার বাইরে।
৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২২/০। তামিম ২০ ও ইমরুল ২ রানে ব্যাট করছেন।
তিন স্পিনার নিয়ে শ্রীলঙ্কা
পিঠের চোট কাটিয়ে ফিরেছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ। অতিথিদের স্পিন ত্রয়ীর অন্য দুই জন দিলরুয়ান পেরেরা ও লাকশান সান্দাকান।
দুই পেসার নিয়ে খেলছে শ্রীলঙ্কা। সুরঙ্গা লাকমলের সঙ্গী লাহিরু কুমারা।
শ্রীলঙ্কা দল: দিমুথ করুনারত্নে, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, কুসল মেন্ডিস, দিনেশ চান্দিমাল, রোশেন সিলভা, নিরোশান ডিকভেলা, দিলরুয়ান পেরেরা, রঙ্গনা হেরাথ, সুরঙ্গা লাকমল, লাকশান সান্দাকান, লাহিরু কুমারা।
সাকিবকে হারানোর মূল্যে মাহমুদউল্লাহর স্বপ্নপূরণ
নেতৃত্বের গুণটা তার মাঝে সহজাত। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ সফল অধিনায়ক। জাতীয় দলের সহ-অধিনায়ক প্রথমবার হয়েছিলেন সাড়ে ৬ বছর আগে। এক দিন দেশকে নেতৃত্ব দিতে চান, সেটি নানা সময়ে বলছেন বেশ কবার। তবে সেই সুযোগটা যেভাবে এলো, সেভাবে চাননি মাহমুদউল্লাহ।
ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে চোট পেয়ে প্রথম টেস্ট থেকে ছিটকে যান সাকিব আল হাসান। তাই বাংলাদেশের দশম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকের অপেক্ষায় মাহমুদউল্লাহ। বুধবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টে টস করবেন। খেলা শুরু হবে সকালে সাড়ে নয়টায়।
মাহমুদউল্লাহর কাছে সাকিবকে হারানো দলের জন্য বড় একটা বিপর্যয়। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডাকে না পাওয়া দলের জন্য বড় ক্ষতি।
টার্নিং উইকেট
১৬ জনের বাংলাদেশ দলে বিশেষজ্ঞ স্পিনারই ছয়জন। প্রয়োজনে স্পিন করতে পারেন, এরকম আরও কয়েকজন তো আছেনই। চট্টগ্রাম টেস্টের উইকেট কেমন হবে, সেটির ধারণা দল দেখেই বুঝে নিতে বললেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল এক কথায়ই রায় দিয়ে দিলেন, ‘টার্নিং উইকেট।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের জন্য বাংলাদেশের প্রথম ঘোষিত দলে বিশেষজ্ঞ স্পিনার ছিলেন সাকিব আল হাসান, নাঈম হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। পরে সাকিব ছিটকে যাওয়ার পর বিকল্প হিসেবে দেওয়া হয় সানজামুল ইসলাম ও তানবীর হায়দারকে। পরে নেওয়া হয় অভিজ্ঞ স্পিনার আব্দুর রাজ্জাককেও।
উইকেট নিয়ে ভালো ধারণা আছে চন্দিকা হাথুরুসিহের। বাংলাদেশের সদ্য সাবেক কোচ নিয়ে এসেছেন চারজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ, দিলরুয়ান পেরেরা, লাকশান সান্দাকান ও আকিলা দনঞ্জয়াকে।
বাংলাদেশের কৌশলে অবাক নন হাথুরুসিংহে
উপমহাদেশের দলগুলির বিপক্ষে টার্নিং উইকেট বানানোর কৌশল হতে পারে আত্মঘাতী। বাংলাদেশ হাঁটছে সেই ঝুঁকির পথেই। তবে বাংলাদেশ এমন ঝুঁকি নেওয়ায় অবাক নন শ্রীলঙ্কান কোচ চন্দিকা হাথরুসিংহে।
বাংলাদেশের এই কৌশলের শুরু হাথুরুসিংহে কোচ থাকার সময়। ভয়াবহ টার্নিং উইকেট বানিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা। দেশের মাটিতে টেস্ট জয়ের এই ব্যবস্থাপত্র তৈরির অন্যতম কারিগর ছিলেন হাথুরুসিংহেই। এই চট্টগ্রামেই ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল টার্নি উইকেট বানানোর কৌশলের।
টার্নিং উইকেট বানিয়ে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। উপমহাদেশের কন্ডিশনে ওই দলগুলির স্পিনে দুর্বলতা সবারই জানা। এজন্যই কৌতুহলের ব্যাপার ছিল, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোন পথে হাঁটে বাংলাদেশ।
কিন্তু হাথুরুসিংহে চলে গেলেও তার পরিকল্পনাতেই আছে বাংলাদেশ। উপমহাদেশের দলের বিপক্ষেও বেছে নিয়েছে টার্নিং উইকেট। এতে অনেকে অবাক হলেও অবাক হননি হাথুরুসিংহে।
বাংলাদেশের সামনে লঙ্কানদের হেরাথ চ্যালেঞ্জ
পিঠের চোট কাটিয়ে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে ফিরছেন রঙ্গনা হেরাথ। পুরানো এই শত্রু টেস্ট সিরিজে হতে পারেন বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক নিশ্চিত, অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনারকে সামলানো টেস্টে স্বাগতিকদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে।
৩৯ বছর বয়সী হেরাথ বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ সফল। ৮ টেস্টে ২২.৬৩ গড়ে বাঁহাতি স্পিনারের উইকেট ৪১টি। পাঁচ উইকেট আছে তিনবার, ১০ উইকেট একবার।
শ্রীলঙ্কায় দুই দলের সবশেষ লড়াইয়ে দেখা গেছে হেরাথের বোলিং দ্যুতি। ২ টেস্টে ১৮ গড়ে নিয়েছিলেন ১৬ উইকেট। তার সাফল্য সব দেশের মাটিতে। বাংলাদেশে সুবিধা করতে পারেননি দুই ম্যাচের কোনোটিতেই। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সফরে দুটি টেস্ট খেলে ৫৩ গড়ে নেন ৪ উইকেট। প্রতিটি উইকেটের জন্য করতে হয় ৮৭ বল করে।
বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছেন মাহমুদউল্লাহ
ভারতে সবশেষ টেস্ট সিরিজে ভালো করেছে শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে প্রথম টেস্টের আগে বাংলাদেশ হারিয়েছে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে। মাহমুদউল্লাহ মনে করেন, দুটি ব্যাপার মিলিয়েও এগিয়ে নেই শ্রীলঙ্কা। দেশের মাটিতে এগিয়ে বাংলাদেশই।
ভারত সফরে শ্রীলঙ্কা ১-০ ব্যবধানে হারে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। মাহমুদউল্লাহ মনে করেন, ভারতে দুটি ড্র থেকে অনুপ্রেরণা পেতে পারেন লঙ্কানরা। চিরচেনা মাঠে স্বাগতিকদের সুযোগ বেশি দেখেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।