নির্বাচকদের চোখে অনভিজ্ঞ সানজামুলেই দলের আস্থা

টেস্ট শুরুর একদিন আগেও সানজামুল ইসলামের ওপর ঠিক ভরসা রাখতে পারছিলেন না নির্বাচকরা। প্রধান নির্বাচকের মতে, “সানজামুল নতুন, একদম অনভিজ্ঞ।” অভিজ্ঞতার প্রয়োজন অনুভব করেই চার বছর পর ডাকা হয়েছিল আব্দুর রাজ্জাককে। কিন্তু একাদশে দেখা গেল সেই অনভিজ্ঞ সানজামুলকেই। নেই অভিজ্ঞ রাজ্জাক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2018, 05:48 AM
Updated : 31 Jan 2018, 10:40 AM

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষেক হয়েছে সানজামুলের। জায়গা হয়নি রাজ্জাকের। টসের আগে সানজামুলকে টেস্ট ক্যাপ পরিয়ে দিয়েছেন রাজ্জাকই। একাদশে সুযোগ পাননি যুব বিশ্বকাপ থেকে ফিরিয়ে আনা ১৭ বছর বয়সী অফ স্পিনার নাঈম হাসানও।

মেহেদী হাসান মিরাজের একাদশে থাকা নিশ্চিতই ছিল। তার সঙ্গে বাকি দুই স্পিনার সানজামুল ও তাইজুল ইসলাম।

অথচ সানজামুল ও তাইজুল, দুজনকে নিয়েই টেস্টের আগে নির্বাচকদের ছিল সংশয়। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে চোট পেয়ে সাকিব প্রথম টেস্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার পর সেদিনই রাতে বদলি হিসেবে দলে নেওয়া হয় সানজামুল ও তানবীর হায়দারকে। পরদিন হুট করে দলে যোগ করা হয় রাজ্জাককে।

রাজ্জাককে নেওয়ার ব্যাখ্যায় প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন গত সোমবার সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন অভিজ্ঞতার কথাই।

“রাজ্জাক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। আমাদের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব চোট পেয়েছে। সানজামুল তো নতুন। আমরা চিন্তা করলাম রাজ্জাক যেহেতু ঘরোয়াতে ভালো করছে, ওকে দলের সঙ্গে রাখলে যদি সুযোগ আসে তাহলে দেখা যাবে। এই চিন্তা করেই ডাকা হয়েছে।”

“সানজামুল একদম অনভিজ্ঞ, একটি টেস্টও খেলেনি। তাইজুলের ফর্মটাও চিন্তা করতে হবে, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১টি টেস্ট খেলেছে। অত ভালো করেনি। তো সেই হিসেবে ফর্মের কথা চিন্তা করেই আমরা বাড়তি স্পিনার নিয়েছি।” 

রাজ্জাককে দলে ফেরার খবর জানানোর আগেই তার চট্টগ্রামে আসার বিমান টিকিট কেটে ফেলা হয়েছিল। যেটি বোঝায়, কতটা প্রয়োজন ছিল তাকে। প্রধান নির্বাচকের কথা এমন বার্তাই দিয়েছিল যে, সাকিবের অভিজ্ঞতার ঘাটতি পূরণেই জরুরি ছিল রাজ্জাককে ডাকা। অথচ একাদশ সেসবের প্রতিফলন নেই।

একই রকম কথা বলা যায় নাঈমের ক্ষেত্রেও। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চলার সময়ই যেভাবে তাকে নিউ জিল্যান্ড থেকে ফেরানো হলো, তাতে এই ধারণাই পাওয়া গিয়েছিল যে তাকে নিয়ে দলের বিশেষ পরিকল্পনা আছে। অথচ একাদশে নেই সেটির প্রতিফলনও। অথচ নাঈমকে এভাবে নিয়ে আসায় বিশ্বকাপের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দলের অন্যতম সেরা বোলারকে পেল না অনূর্ধ্ব-১৯ দল।

দলে ডাকলেই খেলাতে হবে, এই বাধ্যবাধকতা অবশ্যই নেই। সানজামুলের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্নের ব্যাপারও এটি নয়। অভিষেকে চমক জাগানিয়া কিছু করতেই পারেন সানজামুল। কিন্তু চমক দিয়ে যুব বিশ্বকাপ থেকে একজনকে ফিরিয়ে আনার পর বসিয়ে রাখা, প্রায় ভুলে বসা একজনের অভিজ্ঞতাকে সম্মানের কথা বলেও চূড়ান্ত সময়ে উপেক্ষা করা, এসব আসলে জন্ম দেয় নানা প্রশ্নের - নির্বাচক কমিটি ও টিম ম্যানেজমেন্টের মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতি ছিল? তাদের চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনা কি স্বচ্ছ ছিল না?