শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনেই দারুণ এক সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন মুমিনুল। ব্যাটিংয়ের মতো দেখার মত হলো তার উদযাপনও।
মাঠের ভেতরে-বাইরে বরাবরই অন্তর্মুখী মুমিনুল। শান্ত এবং চাপা স্বভাবের। উচ্ছ্বাস কিংবা বেদনা, কোনোটিরই বাড়াবাড়ি দেখা যায় না তার মাঝে। এর চেয়ে ভালো, বড় ইনিংসও খেলেছেন। বরাবরই উদযাপনে তিনি পরিমিত। সেই মুমিনুলই এদিন ভীষণ খ্যাপাটে।
এদিন উত্তাল ছিল তার ব্যাটও। যখন নেমেছিলেন, তামিম ইকবালের সৌজন্যে দল পেয়েছিল ভালো ভিত। কন্ডিশন-উইকেটও দারুণ ব্যাটিং সহায়ক। মুমিনুল কাজে লাগালেন দারুণ ভাবে। ছোটালেন স্ট্রোকের ফোয়ারা। টানা দুই বলে বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি করলেন ৯৬ বলেই।
বাংলাদেশের হয়ে এটি দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। ২০১০ সালে সালে লর্ডসে তামিমের ৯৪ বলে সেঞ্চুরি এখনও দ্রুততম। মুমিনুলের আরেকটি সেঞ্চুরি আছে ৯৮ বলেও।
২৬ টেস্টে এটি তার পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি। তবে চার থেকে পাঁচে আসতে পেরিয়েছেন অনেকটা পথ। ৪ সেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছিল প্রথম ১২ টেস্টেই। পরের ১৩ টেস্টে সেঞ্চুরি নেই। পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন মাত্র ৫ বার। এই সময়ে ব্যাটিং গড় ছিল ২৭.৯১। এই ধাক্কায় ক্যারিয়ার গড়ও অতিমানবীয় থেকে নেমে এসেছে সাধারণের কাতারে। অবশেষে কাটল সেই খরা। সবশেষ ২০১৪ সালে সেঞ্চুরি করেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
মাঝের ওই সময়টায় ‘আড়ি’ চলছিল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সঙ্গেও। এই মাঠে প্রথম তিন টেস্টেই করেছিলেন তিন সেঞ্চুরি। এরপর তিন টেস্টে নেই কোনো পঞ্চাশও। সম্পর্কটা আবার উষ্ণ হলো এবারের সেঞ্চুরিতে। এখানে ৭ টেস্টেই ৪ সেঞ্চুরি! চা বিরতির সময় রান ছিল তার ১০৭।
হাথুরুসিংহে কোচ হওয়ার কিছুদিন পরই শর্ট বলে মুমিনুলের দুর্বলতার কথা বলে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন। গত বছর শ্রীলঙ্কা সফরে গল টেস্টে দিলরুয়ান পেরেরা অফ স্পিনে আউট হওয়ার পর সেই সময়ের কোচ বলেছিলেন অফ স্পিনে মুমিনুলের দুর্বলতার কথাও। তাকে দেশের শততম টেস্টে একাদশ থেকে বাদ দিয়েছিলেন।
সেই মুমিনুল এবার বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সেঞ্চুরি করলেন হাথুরুসিংহের দলের বিপক্ষেই। মুমিনুলের উদযাপনে কি মিশে থাকল অতীতের ক্ষোভও?
মুমিনুলের সেঞ্চুরি উদযাপনের আগেই উল্লাস শুরু করেছিলেন উইকেটে তার সঙ্গী মুশফিকুর রহিম। হাথুরুসিংহের সঙ্গে তার শীতল সম্পর্কের কথাও ছিল প্র্রায় প্রকাশ্য। মুমিনুলের উদযাপনে মুশফিকের উল্লাসও মিশে থাকল যেভাবে, চাইলে পুরোনো ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ধরনের কিছু বলে কেউ মেলাতেই পারেন!