আগের দুই ম্যাচে ১০ উইকেট ও ১০৪ রানে হারের পর শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ হারল ২০০ রানে।
Published : 22 Oct 2017, 01:39 PM
আরেকটি বড় হার
আরেকটি বাজে দিন, আরেকটি হতাশাময় পারফরম্যান্স, আরেকটি বড় হার। ব্যাটে-বলে ছ্ন্নছাড়া পারফরম্যান্সে শেষ ম্যাচেও বড় ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ।
তাসকিনকে ফেরানোর এক বল পর মিরাজকেও ফিরিয়ে ম্যাচের ইতি টানলেন ইমরান তাহির। বাংলাদেশ হারল ২০০ রানে।
সফরের আর সব ম্যাচের মত শুরু থেকেই বাংলাদেশ ছিল বিবর্ণ। শতরানের উদ্বোধনী জুটি আর পরের ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্সে দক্ষিণ আফ্রিকা গড়ে ৩৬৯ রানে পাহাড়। রান তাড়ায় শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ ৬১ রানে হারায় ৫ উইকেট। এরপর ছিল কেবলই ব্যবধান কমানোর লড়াই। সেই চেষ্টায়ও বাকিরা সফল হতে পারেনি খুব একটা।
এই নিয়ে ওয়ানডেতে চতুর্থবার ২০০ বা তার বেশি ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয়বার। ২০১১ বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের কাছে হার ছিল ২০৬ রানের।
টেস্ট সিরিজের মত ওয়ানডেতেও হোয়াইটওয়াশড বাংলাদেশ। এই ফলের চেয়েও বড় হতাশা, একটি ম্যাচেও ন্যূনতম লড়াই করতে পারেনি দল। দু:স্বপ্নের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাকি আছে এখন কেবল দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ৩৬৯/৬ (বাভুমা ৪৮, ডি কক ৭৩, দু প্লেসি আহত অবসর ৯১*, মারক্রাম ৬৬, ডি ভিলিয়ার্স ২০, বেহারদিন ৩৩*, মুল্ডার ২, ফেলুকওয়ায়ো ৫, রাবাদা ২৩*; মাশরাফি ০/৬৯, মিরাজ ২/৫৯, রুবেল ১/৭৫, সাকিব ০/৫৬, তাসকিন ২/৬৬, মাহমুদউল্লাহ ০/৩৩, সাব্বির ০/৮)
বাংলাদেশ: ৪০.৪ ওভারে ১৬৯ (ইমরুল ১, সৌম্য ৮, লিটন ৬, মুশফিক ৮, সাকিব ৬৩, মাহমুদউল্লাহ ২, সাব্বির ৩৯, মিরাজ ১৫, মাশরাফি ১৭, তাসকিন ২, রুবেল ০*; রাবাদা ১/৩৩, প্যাটারসন ৩/৪৪, মুল্ডার ১/৩২, ফেলুকওয়ায়ো ১/১৩, তাহির ২/২৭, মারক্রাম ২/১৮)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ২০০ রানে জয়ী
সিরিজ: দক্ষিণ আফ্রিকা ৩-০ ব্যবধানে জয়ী
ফিরলেন তাসকিন
অবশেষে উইকেট শিকারে নাম লেখালেন ইমরান তাহির। দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা স্পিনার তাসকিন আহমেদকে ফিরিয়ে পেলেন ম্যাচে প্রথম উইকেট।
তাহিরের লেগ স্পিনে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন তাসকিন। ক্যাচ নিয়েছেন অতিরিক্ত ফিল্ডার জেপি দুমিনি।
২ রানে ফিরলেন তাসকিন। বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ১৬৯।
মাশরাফির বিদায়
ছোট্ট একটা জুটি গড়ে তুলেছিলেন মাশরাফি ও মিরাজ। মাশরাফিকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন প্যাটারসন।
জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড মাশরাফি। প্যাটারসন পেলেন তৃতীয় উইকেট।
১৭ রানে আউট হলেন মাশরাফি। বাংলাদেশ শেষের আরেকটু কাছে। ৩৭.২ ওভারে রান ৮ উইকেটে ১৬৩।
বাজে শটে সাব্বিরের বিদায়
অফ স্টাম্পের বাইরের বলে চার মেরেছিলেন আগের বলেই। পরের বলে আবারও একই চেষ্টায় আউট সাব্বির রহমান।
আগের বলটি থেকে এবার একটু টেনে দিয়েছিলেন বোলার মারক্রাম। সাব্বির সেটি ধরতে পারেননি, যেতে পারেননি বলের পিচ পর্যন্তও। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল কিপারের গ্লাভসে।
৩৯ রানে আউট হলেন সাব্বির। ৩১ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৫ বাংলাদেশ।
ফিফটির পর ফিরলেন সাকিব
আগের বলেই বল তুলেছিলেন আকাশে। পেছন দিকে অনেকটা দৌড়ে বল স্পর্শ করেও হাতে জমাতে পারেননি এবি ডি ভিলিয়ার্স। কিন্তু জীবন পেয়ে সেটিকে কাজে লাগাতে পারলেন না সাকিব। আউট পরের বলেই।
মারক্রামের নিরীহ অফ স্পিনে সুইপ করেছিলেন সাকিব। বল রাখতে পারেননি নিচে, মারেও ছিল না তত জোর। সীমানার বেশ ভেতরেই ক্যাচ।
৬৩ রানে আউট হলেন সাকিব। ভাঙল সাব্বিরের সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি।
বাংলাদেশের রান ৩০.১ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৮।
সাকিবের পঞ্চাশ
স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে তিনি করেছেন হাফ সেঞ্চুরি।
৬৩ বলে সাকিব ছুঁয়েছেন পঞ্চাশ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তার ৩৫তম। ইনিংসে চার মেরেছেন ছয়টি।
বাংলাদেশের রান ২৪ ওভারে ৫ উইকেটে ৯৪।
ফিরলেন মাহমুদউল্লাহও
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবে প্রথম সাফল্যের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হলো না ভিয়ান মুল্ডারকে। নিজের তৃতীয় ওভারেই নিলেন উইকেট।
বিপর্যয়ে দলের ভরসা হতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহও। স্টাম্প সোজা বল জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্রস ব্যাটে উড়িয়ে মারতে চাইলেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। বাজে শট, খেসারত উইকেট হারিয়ে।
২ রানে আউট হলেন মাহমুদউল্লাহ। বড় রান তাড়ায় বড় হার ডাকছে বাংলাদেশকে। ১৪.৩ ওভারে রান ৫ উইকেটে ৬১।
গেলেন মুশফিকও
এবার আর মুশফিক পারলেন না বড় কিছু করতে। সিরিজের দলের সেরা ব্যাটসম্যানকেও হারাল বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই উইকেট নিলেন ফেলুকওয়ায়ো।
নতুন বোলারকে বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মেরেছিলেন মুশফিক। কিন্তু বলের কাছে যেতে পারেননি। তবু চালিয়ে দেন ব্যাট। মিড অফ থেকে পেছন দিকে একটু ছুটে ক্যাচ নেন রাবাদা।
৮ রানে আউট মুশফিক। ১১.৩ ওভারে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ৫১।
পারলেন না সৌম্যও
রান তাড়া করা বহুদূর, দলের মান বাঁচানোই দায়! ইমরুল ও লিটনের পর আউট হলেন একাদশে ফেরা সৌম্য সরকারও।
কাগিসো রাবাদার লেংথ বলটি ছিল ব্যাক অব লেংথ, ড্রাইভ করার লেংথে নয়। তার পরও ড্রাইভ করতে গেলেন সৌম্য। ব্যাটের কানা নিয়ে বল স্লিপে। এইডেন মারক্রাম নিলেন ভালো একটি ক্যাচ।
৮ রানে আউট সৌম্য। ৩৭০ রান তাড়ায় বাংলাদেশ ৫ ওভারে ৩ উইকেট ২০।
WICKET! Rabada claims his 1st scalp, removing Sarkar for 8. BAN 20/3, need 350. #ProteaFire #SAvBAN pic.twitter.com/QNzfo0RBSJ
— Cricket South Africa (@OfficialCSA) October 22, 2017
আম্পায়ারের আঙুল উঠতে দেখে হতবাক লিটন দাস। মুখভঙ্গি বলছিল, বিশ্বাসই করতে পারছেন না। কিন্তু রিভিউ নিলেন না। সঙ্গী সৌম্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে হাঁটা দিলেন ড্রেসিং রুমের দিকে।
টিভি রিপ্লেতে দেখা গেল বল লাগছে বেলস-এ। রিভিউ নিলে আম্পায়ার্স কলে আউট হতেনই, তবে টিকে থাকত রিভিউও।
প্যাটারসনের আরেকটি উইকেট। ৬ রানে আউট হলেন লিটন। ৩৭০ রান তাড়ায় বাংলাদেশ ২ উইকেটে ১৫।
শুরুতেই শেষ ইমরুল
বড় রান তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আউট ইমরুল কায়েস।
ডেন প্যাটারসনের লেংথ বলটি উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন ইমরুল। কিন্তু পারেননি মিড অফ ফিল্ডারের ওপর দিয়ে পাঠাতে। বল সোজা ফিল্ডার বেহারদিনের হাতে।
আগের ম্যাচে ৬৮ করা ইমরুল এবার আউট ১ রানেই।
বাংলাদেশ ১ উইকেটে ৩।
রেকর্ড সংগ্রহ
আগের ম্যাচের ৩৫৩ রানকে ছাড়িয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের সর্বোচ্চ ৩৫৮ রানকেও। ৫০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলেছে ৬ উইকেটে ৩৬৯।
ডি ভিলিয়ার্সদের ফেরাতে পারলেও শেষ দিকে বাংলাদেশকে ভোগালেন কাগিসো রাবাদা। ১১ বলে করলেন অপরাজিত ২৩। ২৪ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত ফারহান বেহারদিন। রুবেলের করা ইনিংসের শেষ ওভার থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলেছে ১৮ রান।
তাসকিনের আরেকটি
শেষ দিকে এসে দ্রুত উইকেট তুলে রানের গতিতে কিছুটা বাধ দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। ফেলুকওয়েয়োকে ফিরিয়ে তাসকিন নিয়েছেন দ্বিতীয় উইকেট।
স্টাম্পে পিচ করে সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বল ড্রাইভ করে ফেলুকওয়ায়ো ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে।
এই অলরাউন্ডার আউট হলেন ৫ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে ৩৩৫।
তাসকিনের প্রথম
অভিষেকে তেমন কিছু করতে পারলেন না প্রতিভাবান তরুণ অলরাউন্ডার ভিয়ান মুল্ডার। আউট হলেন ২ রানেই।
তাসকিনের ইয়র্কার মতো বলটিতে ফ্লিক করতে গিয়ে লাইন মিস করেন মুল্ডার। এলবিডব্লিউ হয়ে যান ২ রানে। সিরিজে এটি তাসকিনের প্রথম উইকেট। ৪৬.১ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে ৩২৯।
WICKET. Taskin Ahmed gets Mulder for 2. SA 329/5 (46.1 OVS). Phehlukwayo is the next man in. #SAvBAN pic.twitter.com/ktOS7Qw97b
— Cricket South Africa (@OfficialCSA) October 22, 2017
এবার আর তাণ্ডব চালাতে পারলেন না এবি ডি ভিলিয়ার্স। আগের ম্যাচের ১০৪ বলে ১৭৬ করা ব্যাটসম্যান আউট হলেন ২০ রানে।
রুবেলের ফুল লেংথ বলটি উড়িয়ে মারতে গিয়ে ঠিকমত খেলতে পারেননি। কাভার থেকে বাঁদিকে ছুটে ডাইভ দিয়ে দারুণ ক্যাচ নিলেন মাশরাফি।
১৫ বলে ২০ রানে আউট হলেন ডি ভিলিয়ার্স। দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ উইকেটে ৩২৫।
তিনশ পেরিয়ে
ওভারটি ভালোই ছিল। প্রথম ৫ বলে ৩ রান দিয়েছিলেন মাশরাফি। কিন্তু শেষ বলে গড়বড়। ফুল লেংথ বলটি এক্সট্রা কাভার দিয়ে উড়িয়ে দিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ওই ছক্কায় দক্ষিণ আফ্রিকার রান পেরিয়ে গেল তিনশ। ৪৩ ওভারে রান ৩ উইকেটে ৩০৪।
মারক্রাম আবার!
অভিষেক টেস্টে ৯৭ রানে হয়েছিলেন রান আউট। অভিষেক ওয়ানডেতেও প্রায় একই পরিণতি এইডেন মারক্রামের। রান আউট ৬৬ রানে!
স্কয়ার লেগের দিকে বল পাঠিয়ে দ্রুত দুটি রান নিতে চেয়েছিলেন মারক্রাম। সীমানা থেকে ছুটে এসে ৩০ গজ বৃত্তের মাথা থেকে সরাসরি থ্রোয়ে ইমরুল বল লাগালেন স্টাম্পে। ডাইভ দিয়েও রক্ষা হয়নি মারক্রামের।
৬০ বলে ৬৬ রানে আউট মারক্রাম। ৪১ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেটে ২৮৯।
চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন দু প্লেসি
.@DavidMillerSA12 carries @faf1307 off the field as our skipper retires hurt on 91*. #ProteaFire #SAvBAN pic.twitter.com/s8ENCcz9IP
— Cricket South Africa (@OfficialCSA) October 22, 2017
৯১ রানে আহত হয়ে অবসর দু প্লেসি। দলের রান ২ উইকেটে ২৮৩।
জুটির দেড়শ
ফাফ দু প্লেসি ও এইডেন মারক্রাম জুটি ছুটছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। থামানোর পথই খুঁজে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। দুজনের জুটিতে দেড়শ রান উঠে গেছে ১১৬ বলেই।
৪০.১ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ২ উইকেটে ২৮৩। দু প্লেসি উইকেটে ৯১ রানে, মারক্রাম ৬৫।
Big cheer from the crowd as the 150-run partnership comes up for du Plessis (91*) & Markram (65*). 151 from 116 balls. #ProteaFire #SAvBAN pic.twitter.com/bV6qgi0dkQ
— Cricket South Africa (@OfficialCSA) October 22, 2017
ওয়ানডেতে প্রথমবার ব্যাট করতে নেমেই শতরানের জুটির স্বাদ পেলেন মারক্রাম। ফাফ দু প্লেসির সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটিতে রান ছাড়িয়েছে শতরান।
৩৬ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ২ উইকেটে ২৪৪। ৬৬ রানে খেলছেন দু প্লেসি, ৫৩ রানে মারক্রাম।
অভিষেকেই মারক্রামের ফিফটি
পোশাক সাদা হোক বা রঙিন, এইডেন মারক্রাম একইরকম উজ্জ্বল! অভিষেক টেস্টের মত অভিষেক ওয়ানডেতেও করলেন হাফ সেঞ্চুরি।
এমনিতে ওপেনার হলেও এদিন চারে নেমে মাত্র ৪৭ বলেই অর্ধশতক করেছেন অর্ধশতক। তিনটি চারের সঙ্গে ইনিংসে ছক্কা দুটি।
দু প্লেসির ফিফটি
আগের ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়ার ঝাল ভালোভাবেই মেটাচ্ছেন ফাফ দু প্লেসি। ৪৪ বলে করেছেন হাফ সেঞ্চুরি।
ওয়ানডেতে দু প্লেসির এটি ২৯তম অর্ধশতক। ইনিংসে আছে ৪টি চার, ১টি ছক্কা।
৩৪ ওভারে স্বাগতিকদের রান ২ উইকেটে ২২১।
আরেক জুটির পঞ্চাশ
দুই ওপেনার আউট হওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে রাখতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু দারুণ ব্যাটিংয়ে ফাফ দু প্লেসি ও এইডেন মারক্রাম চাপ পেয়ে বসতেই দিলেন না। তৃতীয় উইকেটে দুজনের জুটিতে ৫০ রান এলো ৫০ বলেই।
মাহমুদউল্লাহকে পেয়ে বসেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটসম্যান। এই অফ স্পিনারের প্রথম ওভারে চার ও ছক্কা মারেন দু প্লেসি। তার তৃতীয় ওভারে চার ও ছক্কা মারেন মারক্রাম। ওভারের শেষ বলে আরেকটি চার দু প্লেসির।
মাহমুদউল্লাহর ৩ ওভারেই রান উঠল ৩৩। ৩০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেটে ১৯২।
মিরাজের আরেকটি
প্রথম উইকেটের পর মিরাজের হাত ধরেই এল দ্বিতীয় উইকেট। ফিরিয়ে দিলেন বিপজ্জনক কুইন্টন ডি কককে।
ডি কককে বেরিয়ে আসতে দেখেই একটু টেনে বোলিং করেছিলেন মিরাজ। বলের পিচ পর্যন্ত যেতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তার পরও খেলেছিলেন অন সাইডে। ব্যাটের কানায় লেগে বল উঠল শুধুই ওপরে। নিজের বলে ক্যাচ নিলেন মিরাজই।
৬৮ বলে ৭৩ রানে ফিরলেন ডি কক। ২১.১ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেটে ১৩২।
বেঁচে গেলেন দু প্লেসি
রিভিউ নিলেই আউট হতে পারতেন ফাফ দু প্লেসি। কিন্তু রিভিউ নিল না বাংলাদেশ। বেঁচে গেলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক!
মিরাজের বলে ব্যাট-প্যাড ক্যাচের আবেদনটি ছিল বেশ জোরাল। কিন্তু আউট দিলেন না আম্পায়ার। উইকেটকিপারের সঙ্গে কথা বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। হয়ত কিপারের ছিল সংশয়। নিলেন না রিভিউ।
টিভি রিপ্লেতে দেখা গেল, ব্যাটে সামান্য একটু স্পর্শ করেছিল বল। দু প্লেসি রক্ষা পেলেন ৫ রানে।
28 overs gone, SA are 171/2. Du Plessis 25*, Markram 20. RR 6/14. #ProteaFire #SAvBAN pic.twitter.com/Hf1PiS0FpN
— Cricket South Africa (@OfficialCSA) October 22, 2017
অভিষেক ওয়ানডেতে করেছিলেন সেঞ্চুরি। এক বছরের বেশি সময় পর দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমে বাভুমা ফিরলেন হাফ সেঞ্চুরির কাছে।
রাউন্ড দা উইকেটে করা মিরাজের বল উড়িয়ে মেরেছিলেন বাভুমা। বলের পিচ পর্যন্ত যেতে পারেননি, টাইমিং ঠিকমত হয়নি। লং অনে ক্যাচ নিয়েছেন লিটন দাস।
৪৭ বলে ৪৮ রানে ফিরলেন বাভুমা। অবশেষে বাংলাদেশ পেল উইকেটের দেখা। ভাঙল ১১৯ রানের উদ্বোধনী জুটি।
১৮ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ১ উইকেটে ১১৯।
শতরানের জুটি
দুবার একসঙ্গে ইনিংস শুরু, দুটিতেই শতরানের জুটি! ডি কক-বাভুমা জুটির সাফল্য শতভাগ!
এর আগে বাভুমার অভিষেক ওয়ানডেতে একসঙ্গে জুটি বেধেছিলেন দুজন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সেই ম্যাচে গড়েছিলেন ১৫৯ রানের জুটি। এবারও শতরান ছাড়িয়ে অবিচ্ছিন্ন দুজন।
১৫ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে ১০৪। ৬০ রানে খেলছেন ডি কক, ৪২ বাভুমা।
ডি ককের ফিফটি
আগের ম্যাচে আউট হয়েছিলেন ৪৬ রানে। এবার আর সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি নয়। প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি করা কুইন্টন ডি কক করলেন হাফ সেঞ্চুরি।
৪৭ বলে ডি কক স্পর্শ করেছে পঞ্চাশ। ইনিংসে ৬টি চার, একটি ছক্কা।
১৪ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে ৯৩।
শুরুর জুটিতে পঞ্চাশ
এর আগে একটিই ওয়ানডে খেলেছিলেন বাভুমা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচে কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে গড়েছিলেন ১৫৯ রানের জুটি। দ্বিতীয়বার জুটি বেঁধে দুজনের জুটি অর্ধশতক ছাড়িয়ে গেল ৮ ওভারেই।
৮ ওভার শেষে দক্ষিণ আাফ্রিকা বিনা উইকেটে ৫২। ডি কক খেলছেন ২৬ রানে, বাভুমা ১৫।
আবারও ভালো শুরু
অভিষেক ওয়ানডেতেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন টেম্বা বাভুমা। এরপর পেরিয়ে গেছে এক বছরের বেশি। এতদিন পর ওয়ানডে খেলতে নেমে শুরু করলেন প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে!
নতুন বলে মাশরাফির সঙ্গে বাংলাদেশ শুরু করেছিল মিরাজের অফ স্পিনে। কিন্তু লাভ কিছু হলো না। কিন্তু মিরাজের প্রথম ওভারেই তিনটি চার মারলেন কুইন্টন ডি কক। তিনটিই ছিল শর্ট, স্টাম্পের বাইরে। তিনটিতেই কাট শটে ডি কক পেয়েছেন বাউন্ডারি।
ডি ককের সঙ্গে আমলা নেই। তার পরও দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা হয়েছে বেশ ভালো। আরও একটি ম্যাচে শুরুতে উইকেটবিহীন বাংলাদেশ।
৬ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান বিনা উইকেটে ৪১।
দুই অভিষিক্ত দক্ষিণ আফ্রিকা দলে
হাশিম আমলাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আগেই। তার জায়গায় এইডেন মারক্রামের অভিষেকটাও অনেকটা অনুমিতই ছিল। হচ্ছে সেটিই। তবে মারক্রাম ইনিংস শুরু করবেন না। খেলবেন চার নম্বরে। কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে ওপেন করবেন টেম্বা বাভুমা।
বাভুমা একাদশে এসেছেন জেপি দুমিনির বদলে। দক্ষিণ আফ্রিকা দলে অভিষেক হচ্ছে আরও একজনের। দলে এসেছেন তরুণ অলরাউন্ডার ভিয়ান মুল্ডার। গত বছর বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভালো করার পর ঘরোয়া ক্রিকেটেও আলো ছড়িয়েছেন এই অলরাউন্ডার। নজর কেড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন কোচ ওটিস গিবসনের।
মুল্ডারকে জায়গা দিতে একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস।
একাদশে সৌম্য-মিরাজ
তামিম ইকবাল চোট নিয়ে ছিটকে গেছেন। একটি পরিবর্তন তাই হতোই। ওপেনিং এই ব্যাটসম্যানের বদলে একাদশে এসেছেন সৌম্য সরকার।
বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন আছে আরও একটি। নাসির হোসেনের বদলে একাদশে এসেছেন আরেক অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।
বাংলাদেশ একাদশ: সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন।
টস হেরে বোলিংয়ে বাংলাদেশ
দুই টেস্ট ও দুই ওয়ানডেতে টানা টস হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ভাগ্য বদলের আশায় আবার এবার বাঁহাতে কয়েন ছুঁড়লেন ফাফ দু প্লেসি। ভাগ্য বদলেও গেল। এবার টস জয়!
টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক নিলেন ব্যাটিং। মাশরাফি জানালেন, টস জিতলে ব্যাটিং নিতেন তিনিও।
মাশরাফির ৫০
এই ম্যাচে টস করতে নেমেই একটি মাইলফলক স্পর্শ করলেন মাশরাফি। বাংলাদেশের হয়ে টস করতে নামলেন ৫০তমবারের মত। অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডে খেলার হাফ সেঞ্চুরি!
বাংলাদেশের হয়ে এই স্বাদ পেয়েছেন আগে দুজন। ৬৯ ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব নিয়েছেন হাবিবুল বাশার। ৫০ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
চোট জর্জর দল
মুস্তাফিজুর রহমান ছিটকে গিয়েছেন আগেই। প্রথম ওয়ানডেতে বাইরে থাকার পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ফিরেছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু চোটে সফর শেষ হয়ে গেছে তারও। এমনিতেই দলের অবস্থা সঙ্গীন, তার ওপর নেই দলের সেরা ব্যাটসম্যান ও সেরা বোলার!
তবে সেরা দুজনকে না পাওয়াটাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে চান না মাশরাফি। দিনে শেষে জয়-পরাজয়টিই লেখা থাকে রেকর্ড বইয়ে। দল হিসেবে ভালো খেলে তামিমদের ঘাটতি পূরণ করার তাগিদ জানিয়েছেন অধিনায়ক।
একটি জয়ের সন্ধানে
টেস্ট সিরিজের পর ওয়ানডে সিরিজেও বিবর্ণ বাংলাদেশ। সঙ্গী হয়েছে আরও একটি সিরিজ হারার হতাশা। তবে বাংলাদেশের প্রাপ্তির সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। সিরিজ হারলেও শেষ ম্যাচ থেকে পাওয়ার আছে অনেক কিছু!
একটি জয় হতে পারে সান্ত্বনা। ফিরিয়ে আনতে পারে হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস। হতে পারে নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা। ম্যাচের আগের দিন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা তাই বলেছেন, একটি জয়ও হতে পারে অনেক বড় কিছু।