আদালত গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন।
Published : 21 Sep 2022, 11:57 PM
শত কোটি টাকার দেনার দায় নিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া ই-কমার্স সাইট ইভ্যালি অনেক নাটকীয়তার পর আবার মূল মালিকদের কাছে ফেরত যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ রাসেলের স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন আদালত গঠিত পরিচালনা পর্ষদের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেবেন বলে জানিয়েছেন ওই পর্ষদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন।
গত বছরের অক্টোবরে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে চেয়ারম্যান করে ইভ্যালির জন্য একটি পর্ষদ গঠন করে দিয়েছিল আদালত। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব মিলনকে করা হয়েছিল ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
পর্ষদে সদস্য হিসেবে ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. রেজাউল আহসান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
মূলত প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত দায়-দেনা, কাজের ধরন ও শত কোটি টাকার বকেয়া থেকে উদ্ধারের পথ বের করার উপায় আছে কি না, তা দেখাই ছিল এই পর্ষদের উদ্দেশ্য।
মাহবুব মিলন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা গতকালই আদালতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। সেই হিসাবে আমরা আর ইভ্যালির দায়িত্বে নেই। বৃহস্পতিবার তাদেরকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেব। পরে আমরা একটা সংবাদ সম্মেলন করে যা বলার বলব।”
গ্রাহক ঠকানোর মামলায় ইভ্যালির উদ্যোক্তা রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে কারাগারে ঢুকতে হয়েছিল। শামীমা গত এপ্রিল মাসে জামিনে বের হতে পারলেও এখনও বন্দিই আছেন রাসেল।
ইভ্যালি: চমক জাগানো উত্থান, পতন গ্রাহক ডুবিয়ে
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় পর্ষদ করে দিল আদালত
নিলামে ইভ্যালির গাড়ি বেচে মিলল প্রায় ৩ কোটি টাকা
ইভ্যালির সিন্দুক ভেঙে মিলল আড়াই হাজার টাকা
ইভ্যালির শেয়ার কিনে পর্ষদে থাকতে চান রাসেলের শ্বশুর-শাশুড়ি
মাহবুব মিলন বলেন, ১১ মাস ধরে দায়িত্ব পালনকালে অডিট রিপোর্ট হতে শুরু করে সব ধরনের রিপোর্ট আদালতের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিয়েছেন তারা।
লম্বা সময়ের কর্মতৎপরতায় কতটা সফল হয়েছেন- প্রশ্নে তিনি বলেন, “যুদ্ধ করতেই তো গিয়েছিলাম। আমরা মনে করি, আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমরা ঠিকভাবে পালন করতে পেরেছি। আমাদের কোনো আক্ষেপ নেই।
“এই সময়ে আমাদের প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে। অনেকে হয়ত প্রশ্ন তুলতে পারে যে, কেন এতদিন লাগল? এর উত্তর আমাদের প্রতিবেদনে থাকবে।”
ইভ্যালির আর ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা আছে কি না- জানতে চাইলে মাহবুব মিলনের কাছ থেকে মিশ্র উত্তর আসে।
তিনি বলেন, “তারা যদি আর্থিক সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটাতে পারে, যেসব বিধি-নিষেধ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো যদি পূরণ করতে পারে, তাহলে ব্যবসা তারা করতে পারবে। মাঠে তাদের যেসব দায় ও বকেয়া রয়েছে সেগুলো নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা দূর করতে পারবে। বিনিয়োগ আনতে না পারলে তো পারবে না।”
আদালতের নির্দেশে পরিচালনা পর্ষদ গঠনের আগে বাণিজ্য মন্ত্র্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইভ্যালির দায়-দেনার খোজ নেওয়া হচ্ছিল।
সর্বশেষ গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ইভ্যালির পাঠানো প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট চলতি দায় ৫৪৩ কোটি টাকা, যার মধ্যে মার্চেন্ট বা পণ্য সরবরাহকারীরা পাবেন ২০৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আর গ্রাহকদের পাওনা ৩১১ কোটি টাকা।