দুই লেগ মিলিয়ে ছয়বার পোস্টে বল লাগলেও একটি গোলও করতে পারেনি পিএসজি, এটা অবিশ্বাস্য লাগছে কোচ লুইস এনরিকের কাছে।
Published : 08 May 2024, 11:56 AM
প্রথম লেগে হেরে গেলেও আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছিলেন লুইস এনরিকে। পিএসজি কোচ বলেছিলের, পরের লেগে ঘরের দর্শকদের প্রেরণায় ফাইনালে খেলবেন তারাই। সেই এনরিকের কণ্ঠেই এখন অবিশ্বাসের সুর। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে যেভাবে হেরে গেছে তার দল দল, তা হজম করতেই পারছেন না কোচ।
বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মাঠে ১-০ গোলে হেরে আসা পিএসজি পারেনি সেই ব্যবধান ঘুচিয়ে দিতে। বরং ঘরের মাঠেও মঙ্গলবার তারা হেরেছে একই ব্যবধানে।
প্রথম লেগের দুই দলের লড়াইটা ছিল অনেকটাই কাছাকাছি। বল পায়ে রাখার লড়াইয়ে পিএসজি এগিয়ে থাকলেও ব্যবধান বেশি ছিল না। গোল শট নিয়েছিল এনরিকের দল ১৪টি, বরুশিয়া ১৩টি। কিন্তু দ্বিতীয় লেগে এসব পরিসংখ্যানে পিএসজি ছিল একচেটিয়া। ৭০ শতাংশ সময় বল নিজেদের কাছে রাখতে পারে তারা। এই দফায় গোলে শট নেয় ৩০টি। বরুশিয়া শট নিতে পারে ৭টি। কিন্তু আসল কাজটি করতে ব্যর্থ এনরিকের দল।
প্রথম লেগে দুবার বল পোস্টে লাগার পর ঘরের মাঠে আরও চারবার বরুশিয়া পোস্টে আটকে যায় পিএসজির গোল করার প্রচেষ্টা।
মাঠের লড়াইয়ে দল পিছিয়ে ছিল না বলেই মনে করেন এনরিকে। তবে এভাবে হেরে যাওয়াটা পোড়াচ্ছে পিএসজি কোচকে।
“পরাজয়টা সবসময়ই হতাশার। তবে এভাবে হারা আরও বেশি হতাশার। বরুশিয়াকে আবারও অভিনন্দন জানাই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তারা অসাধারণ খেলছে এবং দুই লেগে দারুণ লড়াই করেছে। তবে আমাদের ছয়টি প্রচেষ্টা পোস্টে লেগেছে। ৩১টি শট নিয়েছি গোলে। কিন্তু গোল করতে পারিনি। এটা বিশ্বাস করাটাই অসম্ভব লাগছে।”
“দুই লেগজুড়ে আমরা পিছিয়ে ছিলাম না। তবে ফুটবল তাদেরই পুরস্কৃত করে, যারা গোল করতে পারে। যারা পোস্টে লাগায়, তাদের জন্য পুরস্কার নেই।”
শিরোপার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলেও এই পর্যন্ত আসতে পারার সন্তুষ্টি আছে এনরিকের। ফরাসি লিগে তারা এর মধ্যেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলেছে। ফরাসি কাপের ফাইনালও আছে সামনে। সব মিলিয়ে দলকে নিয়ে তিনি গর্বিত।
“ফল যা হওয়ার, হয়েছে এবং আমি ওদেরকে অভিনন্দন জানাই ও ফাইনালের জন্যও শুভ কামনা জানাই। আমাদের দিক থেকে অবশ্যই এই বড় ধাক্কা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে হবে।”
“আমার লক্ষ্য ছিল সবগুলো ট্রফির জন্য লড়াই করা। আজকে আমি দলকে নিয়ে গর্বিত, সব ফুটবলারকে নিয়ে গর্বিত।”
কোচের কথারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল অধিনায়ক মার্কিনিয়োসের কণ্ঠে। পরাজয়ে হতাশ তিনিও। তবে সামগ্রিক বিচারে আশার উপকরণ অনেক পেয়েছেন বলেই দাবি এই ডিফেন্ডারের।
“আমরা যথেষ্ট কার্যকর ছিলাম না, তারা ছিল। দুটি গোল করে দুই ম্যাচেই জিতেছে তারা। তবে এই আসর থেকে অনেক কিছু নেওয়ার আছে আমাদের। মৌসুমের শুরুতে কেউই ভাবতে পারেনি যে আমরা এত দূর আসব। অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এসেছি আমরা। এখন বাদ পড়েছি বলেই সব প্রাপ্তি ছুড়ে ফেলে দিতে পারি না।”
“আমাদের মনে রাখতে হবে, নতুন কোচ নতুন পরিকল্পনা নিয়ে শুরু করেছেন। অনেক ইতিবাচক কিছু আছে, যা পরের মৌসুমে আমরা বয়ে নিতে পারি।”
নতুন আশা নিয়েই সামনে তাকাচ্ছেন পিএসজির প্রেসিডেন্ট নাসের আল-খেলাইফি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন তার পূরণ হলো না এবারও। নিজেদেরকে বঞ্চিতই মনে হচ্ছে তার। তবে দল নিয়ে তিনিও গর্বিত।
“কোচ ও ফুটবলাররা নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে। ডর্টমুন্ডকে অভিনন্দন। তবে আমাদের আরও বেশি কিছু প্রাপ্য ছিল। এই খেলায় কখনও কখনও বাস্তবতা কঠিন।”
“আমার দল নিয়ে আমি গর্বিত। ইউরোপের কনিষ্ঠতম দল এটি। পাঁচ বছরের মধ্যে তিনবার সেমি-ফাইনাল খেললাম আমরা। অবশ্যই এটা আমাদের লক্ষ্য নয়। ফাইনাল খেলতে চাই আমরা। তবে ফুটবল এমনই। এটা মেনে নিতেই হবে যে কখনও কখনও এখানে প্রাপ্যটা পাওয়া যায় না। আমরা তা মেনে নিচ্ছি।”