ইভ্যালির শেয়ার কিনে পর্ষদে থাকতে চান রাসেলের শ্বশুর-শাশুড়ি

গ্রাহক ঠকানোর অভিযোগে আলোচিত ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির পরিচালনা পর্ষদে থাকতে চান কোম্পানিটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের শ্বশুর-শাশুড়ি ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এক নির্বাহী পরিচালক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2022, 05:20 PM
Updated : 9 Feb 2022, 05:20 PM

তারা রাসেল ও তার স্ত্রী ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের নামে থাকা শেয়ার কিনে আদালতের গঠন করে দেওয়া পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন।

বুধবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাই কোর্ট বেঞ্চে শামীমার মা ফরিদা তালুকদার, বাবা রফিকুল আলম তালুকদার ও ইভ্যালির সাবেক নির্বাহী পরিচালক এহসান সরওয়ার চৌধুরী নিজেদের ইচ্ছার কথা তুলে ধরেন।

পরে আদালত তাদের পরিকল্পনার বিষয়টি আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি হলফনামা আকারে উপস্থাপন করার কথা জানায়।

এ আবেদনের শুনানিতে পরিচালনা পর্ষদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোরশেদ আহমেদ খান। আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন।

এর আগে রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা, তাদের মেয়ে, মা-বাবা ভাই-বোনদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে গত সোমবার রুল জারি করে হাই কোর্ট।

দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের এ রুলের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি ইভ্যালির সাতটি গাড়ি নিলামে তুলতে সুপ্রিম কোর্টের একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রারসহ দুই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয় আদালত।

নিলামের দিন তাদের নিরাপত্তা ও নিলাম কার্যক্রমে সহযোগিতা দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার এবং র‌্যাব মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া ইভ্যালির লিগ্যাল টিমের কো-অর্ডিনেটর দাবি করে ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও প্রচারকারী নিঝুম মজুমদারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে হাজির হতে বলা হয়। নইলে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয় আদালত।

ইভ্যালির ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে নিতে আদালতের গঠন করে দেওয়া পরিচালনা পর্ষদের এক আবেদনে এ আদেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। এ আদেশের পরদিনই নিঝুম মজুমদার আদালতে হাজির হন।

বুধবার তার বাবা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গোলাম সারওয়ার মজুমদার হলফনামা দাখিল করলে আদালত নিঝুম মজুমদারকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।

ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে এক গ্রাহকের করা আবেদনে গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় হাই কোর্ট।

ওই আদেশে বলা হয়, বিক্রি, হস্তান্তর বা অন্য কোনো উপায়ে ইভ্যালির সম্পদে কেউ হাত দিতে পারবে না। সম্পদ হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না, সেই কারণ দর্শাতেও বলা হয়।

৩০ সেপ্টেম্বর পরবর্তী আদেশের নির্ধারিত তারিখে রিট আবেদনকারী পক্ষ ফের পরিচালনা পর্ষদ গঠনের আরজি জানালে ইভ্যালির যাবতীয় নথি তলব করেন হাইকোর্ট।

সে অনুযায়ী রেজিস্ট্রার ফর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস নথি দাখিল করলে গত বছর ১৮ অক্টোবর হাইকোর্ট ইভ্যালির ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে নিতে পাঁচ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয় আদালত।

এ পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয় আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে।

সদস্য করা হয়- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. রেজাউল আহসান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।

এছাড়া রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন আছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে।

এ পর্ষদে ঢুকতেই রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমার নামে থাকা ইভ্যালির শেয়ার কেনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন রাসেলের শ্বশুর-শাশুড়ি ও সাবেক ওই নির্বাহী পরিচালক।

আরও পড়ুন-