ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুর্ঘটনা নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন; বলেছেন, ভবিষ্যতে রেল দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্ক থাকবে তার মন্ত্রণালয়।
Published : 13 Nov 2019, 08:38 PM
ওই দুর্ঘটনায় রেলওয়ের প্রায় ৪০ লাখ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওই দুর্ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের নেওয়া নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে বুধবার জাতীয় সংসদে কার্যপ্রণালী বিধির ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দেন রেলমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে সব ধরনের রেল দুর্ঘটনা এড়াতে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের সকল কর্মকর্তা–কর্মচারী সচেষ্ট থাকবেন।”
ওই দুর্ঘটনা তদন্তে চারটি কমিটি গঠন এবং তিন রেলকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও সংসদে জানান মন্ত্রী।
মঙ্গলবার ভোররাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দভাগ স্টেশনে উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশিথার সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ ১৬ যাত্রী নিহত এবং অর্ধ শতাধিক আহত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত তূর্ণা নিশীথার ‘চালকের অবহেলায়’ কসবার ট্রেন দুর্ঘটনা ট্রেন দুর্ঘটনা: সংশ্লিষ্টদের সতর্ক হতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ |
দুর্ঘটনার বিবরণ দিয়ে রেলপথমন্ত্রী বলেন, “রাত ২টা ৪৫ মিনিটে দুর্ঘটনা ঘটে। সিলেট থেকে চট্টগ্রামগ্রামী উদয়ন এক্সপ্রেস এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেন দুটিকে মন্দবাগ স্টেশনে ক্রসিংয়ের ব্যবস্থা করা হলে উদয়ন এক্সপ্রেস ১৬টি কোচসহ মন্দবাগ স্টেশনের ৩ নম্বর লুপ লাইনে গমন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
“ট্রেনটি লাইনে প্রবেশ করছিল। ১৬টি কোচের মধ্যে ১২টি কোচ ওই লাইনে প্রবেশ করে। অন্যদিকে ঢাকাগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস ২ নম্বর মেইন লাইনের আউটার সিগন্যালে অপেক্ষায় থাকার কথা। সঙ্কেত দেওয়া হয়েছিল। তূর্ণা এক্সপ্রেসের লোকো মাস্টার ওই সঙ্কেত অমান্য করে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। ৩ নম্বর লাইনে প্রবেশরত উদয়ন এক্সপ্রেসের ১৩তম কোচে তুর্ণা এক্সপ্রেসটি আঘাত করলে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়।”
সুজন জানান, দুর্ঘটনায় মোট ১৬ জন নিহত এবং ৫৪ জন আহত হয়। হতাহতরা সবাই উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন।
তিনি বলেন, “দুর্ঘটনার খবর ভোররাতে প্রধানমন্ত্রীকে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ভোর ৬টা নাগাদ দুর্ঘটনাস্থলে রওনা হন তিনি। তার আগে রাত ৪টার দিকে রেল সচিব, ডিজি ও কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রওনা হন।”
ট্রেন দুর্ঘটনা: এসএসসির ফরম পূরণ হলো না ফারজানার স্বামীকে দাফন করে ফেরা হলো না জাহেদার |
রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১০ জন, ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩ জন, কসবা হাসপাতালে ৩ জন, ঢাকা সিএমএইচে ৭ জন এবং সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ৪ জন আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয় বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, রেলওয়ে থেকে নিহতদের পরিবারকে এক লাখ করে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তূর্ণার চালককে দায়ী করে সুজন বলেন, “তূর্ণার লোকো মাস্টার সঙ্কেত সংকত অমান্য করায় এ দুর্ঘটনা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।
“এই দুর্ঘটনার জন্য কর্তব্যরত তিনজনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন লোকমাস্টার তাসির উদ্দিন, সহকারী অপু দে, ওয়ার্কিং গার্ড আব্দুর রহমান। ঘটনা তদন্তে বিভিন্ন পর্যায়ে চারটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।”