আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি শ্যামলকান্তি দাশ জানান, মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার জাকির হোসেন বুধবার এ মামলা দায়ের করেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ স্টেশনের আউটার ক্রসিংয়েই সোমবার রাত পৌনে ৩টার দিকে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার মধ্যে সংঘর্ষে ১৬ জনের প্রাণ যায়, আহত হন অর্ধশতাধিক।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের পাহাড়তলী নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা রাত ২টা ৪৮ মিনিটে শশীদল রেলওয়ে স্টেশন পার হয়ে মন্দবাগ স্টেশনের কাছাকাছি গেলে ট্রেনটিকে আউটার সিগন্যালে থামার সংকেত দেওয়া হয়।
আর সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস কসবা রেলওয়ে স্টেশন পার হয়ে মন্দবাগ স্টেশনে প্রবেশ করার পথে ট্রেনটিকে প্রধান লাইন ছেড়ে ১ নম্বর লুপ লাইনে যাওয়ার সংকেত দেওয়া হয়।
রাত ২টা ৫৫ মিনিটে তূর্ণা নিশীথার চালক আউটার ও হোম সিগন্যাল অমান্য করে মন্দবাগ স্টেশনের প্রধান লাইনে প্রবেশের সময় প্রধান লাইন থেকে লুপ লাইনে ঢুকতে থাকা উদয়নের মাঝামাঝি আঘাত করে।
তাতে উদয়নের তিনটি বগি দুমড়েমুচড়ে যায়। তূর্ণা নিশীথার চালক তাহের উদ্দিন সিগন্যাল না মানায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে রেল কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়।
এ দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন একটি, বাংলাদেশ রেলওয়ে তিনটি এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
তূর্ণা নিশীথার চালক তাহের উদ্দিন, সহকারী চালক অনুপ দেব, পরিচালক (গার্ড) আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
চালক ‘অটোব্রেকে ইট দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন’ বলে যে খবর কয়েকটি গণমাধ্যমে এসেছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রেলওয়ের বিভাগীয় পর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রধান রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (চট্টগ্রাম) নাসির উদ্দিন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেটা মনে হচ্ছে, হিউম্যান ফেইলিওর। এটা ড্রাইভার, সহকারী ড্রাইভার, গার্ড এদের কারণেই হয়েছে অ্যাকসিডেন্টটা। এটা আমাদের প্রাথমিক ধারণা। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে গঠিত জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। বৃহস্পতিবার তাদের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা।