ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের খবরে স্বজনদের শোকের মাতম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবর পেয়ে দম্পতি মজিবুর রহমান ও কুলসুমা বেগমের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

আল ইমরান শোভন চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2019, 10:06 AM
Updated : 12 Nov 2019, 10:06 AM

মঙ্গলবার ভোররাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত হন।

এদের মধ্যে চাঁদপুরের মজিবুর ও কুলসুমা দম্পতিও রয়েছেন বলে তাদের স্বজনরা খবর পান। তাদের গ্রামের বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলার রাজারগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম রাজারগাঁও গ্রামে।

একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ফারজানা আক্তার নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী।

সরেজমিনে মঙ্গলবার দুপুরে রাজারগাঁও এলাকায় এই দম্পতির বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, মজিবুর ও কুলসুমাকে হারিয়ে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার। তাদের বৃদ্ধ মা, বোন, ছেলে ও ছেলের বউসহ সবাই কান্নাকাটি করছেন।

তাদের শোকে রাজারগাঁও গ্রামবাসীরাও শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।

নিহত মজিবুর ও কুলসুমা দম্পত্তির তিন ছেলে কাউসার (২২), সবুজ (২০) ও ইয়াসিন (১৭)।

ছোট ছেলে মো. ইয়াছিন অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, “আমার বাবা ২০ বছর ধরে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করতেন। বাবার সাথে দেখা করতে আমার মা গত ২২ দিন আগে শ্রীমঙ্গল যায়।

“সোমবার রাতেও বাবার সাথে আমার মোবাইলে কথা হয়। এ সময় তিনি আমার মোবাইলে রিচার্জও করে দেন।

সোমবার রাতে চাঁদপুরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন তার বাবা জানিযেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু তার সাড়ে ৩টায় জানতে পারি ট্রেন দুর্ঘটনায় আমার বাবা-মা মারা গেছেন।

“বাবা-মাকে হারিয়ে আমরা তিন ভাই এতিম হয়ে গেলাম।”

তাদের বাবা-মায়ের মরদেহ আনতে তার বড় ভাইরা ঘটনাস্থলে গিয়েছে  বলে জানান তিনি।

নিহত কুলসুমার বৃদ্ধা মা নূরজাহান বেগম বলেন, তারা আমার বড় নাতিকে বিদেশে পাঠানোর জন্য টাকার ব্যবস্থা করে ফিরছিলেন। কিন্তু জীবন নিয়ে আর আসলো না তারা।

এদিকে একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ফারজানা আক্তার নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী বলে তার স্বজনরা জানিয়েছে। সে বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করত।

ফারজানার বড় বোন শামু বেগম (২২) জানান, গত ৬ অক্টোবর খালাত বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পরিবারের সাত সদস্যের সাথে সিলেট যায় ফারজানা।

দুর্ঘটনায় ফারজানা ঘটনাস্থলেই মারা যায় উল্লেখ করে তিনি জানান, তার মা বেবী বেগম ও ভাই ইউসুফ এই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।

তাদের বাবা বিল্লাল হোসেন বেপারী কুয়েত প্রবাসী। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে ফারজানা ছিল সবার ছোট।

বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ফারজানার আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।