গাজার সীমান্তে ট্যাংক জড়ো করেছে ইসরায়েলি বাহিনী, শিগগিরই তারা সেখানে স্থল হামলা শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Published : 13 Oct 2023, 12:50 PM
গাজা শহরের প্রায় ১১ লাখ বাসিন্দাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরাঞ্চলের নগরীটি ছেড়ে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির দক্ষিণাঞ্চলে চলে যেতে বলেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
গাজা ভূখণ্ডের সীমান্তে ট্যাংক জড়ো করেছে ইসরায়েলি বাহিনী, শিগগিরই তারা সেখানে স্থল হামলা শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত শনিবার ভোরে হামাসের ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাটি চালানোর পর থেকে সপ্তাহজুড়ে গাজায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েল। এতে ১৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট বলেছেন, “এখন সময় যুদ্ধের।”
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, আসছে দিনগুলোতে তারা গাজা শহরে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায়’ তৎপরতা চালাবে আর শুধু পরবর্তী ঘোষণা দেওয়ার পরই কেবল বেসামরিকরা শহরটিতে ফিরতে পারবেন।
জাতিসংঘ বলেছে, তাদের বিবেচনায় ‘ধ্বংসাত্মক মানবিক পরিণতি’ ছাড়া এ ধরনের স্থানান্তর সম্ভব নয়।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তিফেন দুজারিক এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এই ধরনের কোনো আদেশ যদি নিশ্চিত হয় তাহলে জাতিসংঘ জোরালোভাবে তা বাতিলের আবেদন জানায়, কারণ এটি ইতোমধ্যেই শোচনীয় হয়ে ওঠা অবস্থাকে বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে রূপান্তর করতে পারে।”
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান গাজাবাসীদের প্রতি ইসরায়েলের আগাম সতর্কবার্তার নিয়ে জাতিসংঘের এই প্রতিক্রিয়াকে ‘লজ্জাজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন।
এদিকে হামাসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, গাজায় বিষয়ে এই সতর্কবার্তা একটি ‘ভুয়া প্রচারণা’। গাজা শহরের বাসিন্দাদের ‘এর খপ্পরে না পড়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, ইসরায়েলে চালানো ফিলিস্তিনি হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া হামাসকে নির্মূল করার প্রত্যয় জানিয়েছে ইসরায়েল, কিন্তু ওই হামলার সময় হামাস বহু ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের বন্দি করে গাজায় রেখে দেওয়ায় সেখানে স্থল হামলা চালানো খুব ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম কান বলেছে, ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১৩০০ ছাড়িয়ে গেছে।
ওই হামলার পর থেকে ২৩ লাখ বাসিন্দার ভূখণ্ড গাজাকে পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে খাদ্য, পানি ও বিদ্যুতের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে তারা। জ্বালানির অভাবে গাজার একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেছে।
রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি (আইসিআরসি) বলেছে, গাজার হাসপাতালগুলোতে জ্বালানি চালিত জরুরি জেনারেটরগুলো আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করে বলেছে, গাজায় খাবার ও পানযোগ্য পানির সরবরাহ বিপজ্জনকভাবে কমে গেছে।
আইসিআরসির আঞ্চলিক পরিচালক ফ্র্যাবিচিও কারবোনি বলেছেন, “(সংঘাতের) এই বৃদ্ধির কারণে দেখা দেওয়া মানবিক দুর্দশা বিতৃষ্ণাজনক, বেসামরিকদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য পক্ষগুলোর কাছে আমি অনুনয় করছি।”
আরও পড়ুন:
দামেস্ক ও আলেপ্পো বিমানবন্দরে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
যুক্তরাষ্ট্র সব সময় ইসরায়েলের পাশে থাকবে: ব্লিনকেন