Published : 14 Dec 2023, 07:52 PM
ভারতে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় নিরাপত্তা ভঙ্গের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সাজার মুখে পড়লেন বিরোধীদলীয় সাংসদরা।
উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা এবং নিম্নকক্ষ লোকসভা মিলিয়ে মোট ১৫ সাংসদকে বরখাস্ত করা হল। পার্লামেন্টে অসাংবিধানিক আচরণ এবং সভার কাজে বাধা দেওয়ার জন্য তাদের এই সাজা দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বরখাস্ত হওয়া এই বিরোধী এমপি’দের ১৪ জন লোকসভার এবং একজন রাজ্যসভার। লোকসভার বরখাস্ত এমপি’দের মধ্যে- কংগ্রেসের ৯ জন, সিপিএম এর দুইজন, ডিএমকে’র দুই জন এবং সিপিআই এর একজন। আর রাজ্যসভা থেকে বরখাস্ত হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন।
২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলবে। ততদিন পর্যন্ত এই সাংসদরা বরখাস্ত থাকবেন।
বৃহস্পতিবার লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পার্লামেন্টের নিরাপত্তার প্রশ্নে সরব হন বিরোধীদলগুলোর জোট ‘ইন্ডিয়া’র সদস্যরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করে স্লোগান তোলেন তারা। অমিত শাহের পদত্যাগও দাবি করা হয়।
এর আগে বুধবারেই লোকসভার নিরাপত্তা ভঙ্গ করে দর্শক গ্যালারি থেকে কক্ষে ঢুকে পড়েছিলেন দুই আগন্তুক। তাদের সঙ্গে ছিল রংবোমা। হলুদ রঙের ধোঁয়া তারা সভাকক্ষের চারদিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।
দু’জনকেই ধরে ফেলার পর তুলে দেওয়ার হয় নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে। পার্লামেন্টের বাইরে থেকে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৬ জন এ ঘটনায় জড়িত বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবনের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে লোকসভার কক্ষে রংবোমা নিয়ে কীভাবে আগন্তুকদের অনুপ্রবেশ ঘটল সে প্রশ্নে তোলপাড় শুরু হয়েছে। নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী এমপি’রা।
বৃহস্পতিবার ওই ঘটনা নিয়েই আলোচনায় উত্তপ্ত হয় পার্লামেন্ট অধিবেশন। দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান বিরোধী সাংসদরা। ২০০১ সালে পার্লামেন্টে হামলার বর্ষপূর্তির দিন ১৩ ডিসেম্বরে ওই অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটায় এ বিষয়ে দুই কক্ষেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করেন বিরোধীরা।
হট্টগোলের মাঝে লোকসভার অধিবেশন বিকাল ৩ টা পর্যন্ত মুলতুবি করা হয়। এদিন বারবারই ব্যাহত হয়েছে লোকসভা এবং রাজ্যসভার কার্যক্রম। বিরোধী সাংসদদের তীব্র হট্টগোলের মধ্য়েই, সংসদ বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী ১৪ জন লোকসভা সাংসদকে বরখাস্ত করার প্রস্তাব তোলেন। ধ্বনিভোটে সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়।
অন্যদিকে, রাজ্যসভায় একই বিষয় নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন বিরোধী সাংসদরা। শোরগোলের মধ্যে রাজ্যসভার উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকে অবিলম্বে কক্ষত্যাগের নির্দেশ দেন। পরে সভার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।