Published : 06 May 2025, 12:25 AM
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতকে ‘পূর্ণ সমর্থন’ করবে রাশিয়া। ভারত শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের উপর রক্তাক্ত হামলার কয়েকদিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করে একথাই জানালেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
কূটনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ এই ফোনালাপে তিনি ‘ঠাণ্ডা মাথায় চালানো’ এ হামলার তীব্র নিন্দাও করেছেন। পুতিন এমন এক সময়ে এই অবস্থান জানালেন, যখন পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনা তদন্তে রাশিয়াকে চাইছে।
ঘটনাক্রমে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সন্ত্রাসী হামলার তদন্তে রাশিয়া এবং চীনকে নিয়ে তদন্ত দল গঠনের জন্য সোচ্চার হওয়ার দিন কয়েক পরই পুতিন ফোন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে।
ফোনালাপে ভারতকে রাশিয়ার দেওয়া সমর্থন, অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার এক্স বার্তায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, পুতিন কাশ্মীরে হামলায় জড়িত এবং এর পেছনে থাকা অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে বলে জানিয়েছেন।
তিনি নিরীহ মানুষের প্রাণহানির জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন যে, এই জঘন্য হামলার অপরাধী এবং তাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের বরাতে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভারত সফরের আমন্ত্রণও গ্রহণ করেছেন এবং দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন।
রণধীর জানান, মোদী বিজয় দিবসের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং বছরের শেষের দিকে ভারতে অনুষ্ঠেয় বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
দুই নেতা জোর দিয়ে এও বলেছেন যে, রাশিয়া এবং ভারতের সম্পর্ক বহির্জগতের প্রভাবে প্রভাবিত হবে না।
এর কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ রুশ বার্তা সংস্থা রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমার মনে হয় রাশিয়া, চীন বা এমনকি পশ্চিমা দেশগুলো এই সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
“তারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারে, যারা তদন্ত করবে কাশ্মীরে হামলা নিয়ে ভারত বা মোদী সত্য বলছে, নাকি মিথ্যা। পুরো বিষয়টি আন্তর্জাতিক দলকে খুঁজে বের করতে দিন।”
প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও আন্তর্জাতিক তদন্তের পক্ষে। আসুন খুঁজে বের করা যাক কাশ্মীরে হামলার ঘটনার অপরাধী এবং পরিকল্পনাকারী কারা। কথা বা বিবৃতির কোনও প্রভাব নেই।
“পাকিস্তানের এ ঘটনায় জড়িত থাকা বা হামলাকারীদের সমর্থন করার প্রমাণ থাকতে হবে। এগুলো কেবলই বিবৃতি, ফাঁকা বুলি, এর বেশি কিছু নয়।”
গত ২২ এপ্রিলে কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’।
এনডিটিভি লিখেছে, ইউক্রেইন যুদ্ধের সময় পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি চালিয়ে যাওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে পুতিনের।