চন্দ্রযান-৩ এর রোভার ল্যান্ডার থেকে নেমে চাঁদের মাটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
Published : 24 Aug 2023, 02:29 PM
চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদের মাটিতে নেমে ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছে, দেশটিকে নিয়ে গেছে অভিজাত ‘মহাকাশ ক্লাবে’।
বিশ্বের চুতর্থ দেশ হিসেবে যুগান্তকারী এই মুহূর্ত যখন উদযাপন করছে গোটা ভারত, তখন মহাকাশযানটির ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান চাঁদের মাটিতে শুরু করেছে ব্যস্ত দিন।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতের সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে ল্যান্ডারের সফল অবতরণের পর ও এর রোভার চাঁদের মাটিতে চলতে শুরু করেছে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো সোশাল মিডিয়ায় লিখেছে, “চন্দ্রযান-৩ রোভার: মেইড ইন ইন্ডিয়া মেইড ফর দ্য মুন! চন্দ্রযান-৩ রোভার ল্যান্ডার থেকে নেমে এসেছে এবং ভারত চাঁদে হাঁটছে।”
ইসরো চেয়ারম্যান শ্রীধারা পানিকার সোমানাথ এনডিটিভিকে বলেন, ল্যান্ডার ও রোভার দুটোই ঠিকঠাক আছে। প্রজ্ঞান ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে এসেছে। শিগগিরই তাদের ছবি প্রকাশ করা হতে পারে।
ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান তাদের অভিযান পরিচালনার জন্য ব্যবহার করবে সৌরশক্তি। চাঁদের এক মাস সমান পৃথিবীর ২৮ দিন। এক চান্দ্রমাসে টানা ১৪ দিন রাত আর টানা ১৪ দিন দিনের ভাগ থাকে।
চাঁদ অন্ধকারে ডুবে থাকলে কাজ করতে পারবে না রোভার। তাই সূর্যের আলো থাকতেই আগামী ১৪ দিন চন্দ্রপৃষ্ঠে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাবে ছয় চাকার এই রোবট যান।
চন্দ্রাভিযানে মূল কাজটি ল্যান্ডার বিক্রমই করবে। তবে অবতরণের জায়গা থেকে সেটি নড়াচড়া করবে না। ল্যান্ডারের যোগাযোগ হবে মাটিতে ঘুরে বেড়ানো রোভার প্রজ্ঞানের সঙ্গে। এরপর রোভারের দেওয়া সব তথ্য ল্যান্ডারই পাঠিয়ে দেবে পৃথিবীতে।
প্রজ্ঞান রোভারে আছে দুটি পেলোড। এর মধ্যে লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ (এলআইবিএস) চাঁদের মাটিতে উপস্থিত রাসায়নিকের পরিমাণ এবং গুণমান পরীক্ষা করবে। খনিজের সন্ধান করবে।
আর আলফা পার্টিকেল এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার (এপিএক্সএস) পরীক্ষা করবে নানা উপাদান। যেমন- ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, টিন ও আয়রন। চন্দ্রপৃষ্ঠের এই রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণের পাশাপাশি চলবে পানির সন্ধান।
১৪ দিন কাজ করার পর সৌর শক্তি চালিত রোভারের কার্যক্রম ধীর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়ে এটি ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। আর সেই ল্যান্ডারই ইসরোকে তথ্য পাঠাবে। রোভারের সঙ্গে ইসরোর সরাসারি কোনো যোগাযোগ নেই।
পৃথিবীর এই উপগ্রহটির দক্ষিণ মেরুতে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে মহাকাশযান পাঠিয়েছে ভারত। এর আগে চাঁদের ওই অংশে কেউ যেতে পারেনি। ভারতের আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সফল চন্দ্রাভিযান পরিচালনা করেছে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে হিমায়িত জল থাকতে পারে। এটি পানি, অক্সিজেন ও জ্বালানির উত্স হতে পারে। চাঁদে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজতে নতুন নতুন গবেষণার সুযোগ তৈরি হতে পারে এই অভিযান থেকে।