নাইজারের সামরিক অভ্যুত্থানকে পশ্চিমা ঔপনিবেশিকদের থেকে ‘দীর্ঘ বিলম্বিত মুক্তির ক্ষণ’ বলে বর্ণনা করেছেন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন।
Published : 29 Jul 2023, 01:42 PM
রাশিয়ার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যর্থ বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেওয়া রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন নাইজারের সামরিক অভ্যুত্থানকে ‘ভালো খবর’ বলে অভিহিত করেছেন।
ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত টেলিগ্রাম অ্যাপের চ্যানেলগুলোতে প্রকাশিত এক ভয়েস ম্যাসেজে প্রিগোজিন এই অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার দাবি করেননি, কিন্তু এই ঘটনাকে পশ্চিমা ঔপনিবেশিকদের থেকে ‘দীর্ঘ বিলম্বিত মুক্তির ক্ষণ’ বলে বর্ণনা করেছেন। নাইজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে তিনি তার সেনাদের সেবা নেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পোস্ট করা ওই বার্তায় তিনি বলেন, “নাইজারে যা ঘটেছে তা তাদের ঔপনিবেশিকদের সঙ্গে নাইজারের জনগণের সংগ্রাম ছাড়া আর কিছুই না। ঔপনিবেশিকরা তাদের জীবনাচরণ ও শর্তাবলী নাইজারের জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং কয়েকশত বছর আগে আফ্রিকা যে অবস্থায় ছিল সেখানেই তাদের রেখে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।”
তবে বার্তায় আসা কণ্ঠটি প্রিগোজিনের সঙ্গে মিললেও তা আসলেই ওয়াগনার বাহিনীর প্রধানের কি না, বার্তা সংস্থা রয়টার্স তা নিশ্চিত হতে পারেনি বলে জানিয়েছে।
“আজ তারা কার্যকরভাবে তাদের স্বাধীনতা অর্জন করছে। বাকি কী হবে এবং শাসন ব্যবস্থা কতোটা কার্যকর হবে তা কোনো সন্দেহ ছাড়াই নাইজারের জনগণের ওপর নির্ভর করবে, কিন্তু প্রধান বিষয় হচ্ছে: তারা ঔপনিবেশিকদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে,” বার্তায় এমনটিই বলা হয়েছে।
বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নাইজারের প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে ক্ষমতাচ্যুত ও বন্দি করে।
তারপর থেকে নাইজারের নেতৃত্বে কে আছেন তা পরিষ্কার না হলেও শুক্রবার দেশেটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ভাষণে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান আবদুরাহমানে চিয়ানি নিজেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া এই জেনারেল ওমর চিয়ানি নামেও পরিচিত।
বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ নাইজারে বিশাল সব ইউরেনিয়ামের খনি আছে। দেশটি বেশ কয়েক দশক ফ্রান্সের উপনিবেশ থাকার পর ১৯৬০ সালে পূর্ণ স্বাধীনতার ঘোষণা করে।
রয়টার্স বলছে, প্রিগোজিন ও তার লোকজন যে আফ্রিকায় সক্রিয় আছেন এই ভয়েস ম্যাসেজ তার সর্বশেষ নজির। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক (সিএআর) এর মতো আফ্রিকার আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গেও ওয়াগনারের নিরাপত্তা চুক্তি আছে আর তারা মহাদেশটিতে নিজের পরিষেবার আওতা আরও বিস্তৃত করার তৎপরতা চালাচ্ছে।
গত মাসে ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহের পর ক্রেমলিন জানিয়েছিল, তাদের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী প্রিগোজিন ও তার বাহিনীর যোদ্ধারা প্রতিবেশী বেলারুশে চলে যাবেন। ইতোমধ্যে বেলারুশে তার লোকদের দেশটির সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতেও দেখা গেছে। কিন্তু তারপরও প্রিগোজিন (৬২) চলাচলের স্বাধীনতা উপভোগ করছেন বলেই ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।
আরও খবর:
নাইজারের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হলেন জেনারেল চিয়ানি
নাইজারের অভ্যুত্থানের নিন্দা, শৃঙ্খলা ফেরানোর আহ্বান বিভিন্ন দেশের