চাঁদে রোভার প্রজ্ঞানের কাজ কী

রোবটযান প্রজ্ঞান চন্দ্রপৃষ্ঠের রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ ও পানির সন্ধানসহ বিভিন্ন অনুসন্ধান চালাবে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2023, 12:21 PM
Updated : 23 August 2023, 12:21 PM

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করতে চলেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩, এরপর চাঁদের ওই অংশে বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অনুসন্ধান চালাবে চন্দ্রযানটির ল্যান্ডার বিক্রম ও রোবট প্রজ্ঞান।

স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের কথা রয়েছে ল্যান্ডার বিক্রমের। এরপর সেটির পেটে থাকা প্রজ্ঞান বের হয়ে যাবে। চন্দ্রপৃষ্ঠের গঠন বিশ্লেষণের পাশাপাশি পানির অনুসন্ধান এবং ছবি তুলে পাঠাবে বিক্রমকে। এরপর বিক্রম সেগুলো পাঠিয়ে দেবে পৃথিবীতে।

ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান তাদের অভিযান পরিচালনার জন্য ব্যবহার করবে সৌরশক্তি। চাঁদের এক মাস সমান পৃথিবীর ২৮ দিন। এক চান্দ্রমাসে টানা ১৪ দিন রাত আর টানা ১৪ দিন দিনের ভাগ থাকে। ফলে চাঁদ অন্ধকারে ডুবে থাকলে কাজ করতে পারবে না ল্যান্ডার। তাই সূর্যের আলো থাকতেই ল্যান্ডার ও রোভার চাঁদের মাটিতে অনুসন্ধান চালাবে।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর হিসাবে ২৩ অগাস্ট থেকে টানা ১৪ দিন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে দিন থাকবে। সূর্যের আলোয় ঝকঝক করবে চন্দ্রপৃষ্ঠ। ফলে সৌরশক্তি ব্যবহার করে নিজেদের কাজ চালাবে বিক্রম ও প্রজ্ঞান। পাশাপাশি, ভবিষ্যতের জন্য শক্তি সঞ্চয় করে রাখবে তারা।

রোবটযান প্রজ্ঞান চন্দ্রপৃষ্ঠের রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ এবং পানির সন্ধান করবে। এই মিশনের আয়ু হবে এক চন্দ্র দিবস।

Also Read: চন্দ্রযান-৩: ল্যান্ডারের নাম কেন বিক্রম

ইসরোর প্রাক্তন পরিচালক প্রমোদ কালের মতে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তাপমাত্রা মাইনাস ২৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যায়। তীব্র শীতে দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান চালানো সম্ভব নয়। এ কারণেই চন্দ্রযান অবতরণের জন্য এমন সময় বেছে নেওয়া হয়েছে, যখন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্যের আলো থাকবে।

চন্দ্রাভিযানে আসলে মূল কাজটি ল্যান্ডার বিক্রমই করবে। তবে অবতরণের জায়গা থেকে সেটি নড়াচড়া করবে না। রোভার প্রজ্ঞান চাঁদের মটিতে ঘুরে বেড়িয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে। রোভারের সঙ্গে যোগাযোগ হবে ল্যান্ডারের। এরপর ল্যান্ডার সেসব তথ্য পাঠিয়ে দেবে পৃথিবীতে।

চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার অবতরণের পর সেটি চাঁদের মাটিতে কিছুক্ষণ অবস্থান করবে। এরপর তার পেট থেকে খুলে যাবে ছয় চাঁকার প্রজ্ঞান।

ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানান, দক্ষিণ মেরুতে তারা পৃথিবীর হিসাবে ১৪ দিন অনুসন্ধান চালাবেন। চাঁদের মাটি, নুড়ি ও শিলার গঠন বিশ্লেষণ করবেন। এই অঞ্চলে বরফ ও খণিজ থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা।

গত ১৪ জুলাই দুপুরে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ করে ইসরো। ৪০ দিন পর বুধবার সন্ধ্যায় সফলভাবে চাঁদের মাটিতে পা রাখতে চলেছে চন্দ্রযান-৩।

ঐতিহাসিক এই অভিযানের মধ্য দিয়ে চাঁদের রহস্যঘেরা দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছানো প্রথম এবং চাঁদের বুকে সফলভাবে নামতে পারা চতুর্থ দেশ হতে যাচ্ছে ভারত। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মহাকাশযান নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পেরেছে।