বজরং দলের সদস্য, গোরক্ষক বিট্টু বজরঙ্গীকে দিল্লি সংলগ্ন হরিয়ানার শহর ফরিদাবাদে তার বাড়ির কাছ থেকে আটক করে পুলিশ।
Published : 16 Aug 2023, 12:49 PM
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের নূহ, গুরুগ্রাম ও অন্যান্য স্থানে গত মাসের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রধান উস্কানিদাতাদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার বজরং দলের সদস্য, গোরক্ষক বিট্টু বজরঙ্গীকে দিল্লি সংলগ্ন হরিয়ানার শহর ফরিদাবাদে তার বাড়ির কাছ থেকে আটক করে পুলিশ।
বজরং দলের সক্রিয় সদস্য মোনু মানেসার ও বিট্টুর উস্কানিমূলক মন্তব্যের কারণেই নূহের সহিংসতা শুরু হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রায় ২০ দিন পরে গ্রেপ্তার হলেন বিট্টু। তার বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি মামলা আছে বলে খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের।
ফরিদাবাদে বিট্টুর বাড়ির কাছে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, লাঠি ও অস্ত্রে সজ্জিত সাদা পোশাকের পুলিশ ধাওয়া করে অভিযুক্ত বিট্টুকে ধরে ফেলেন।
দাঙ্গা, সহিংসতা, হুমকি দেওয়া, সরকারি কাজে বাধাদান, সরকারি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে জখম করার দায়ে বিট্টু অভিযুক্ত বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ফরিদাবাদ পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিভিন্ন ভিডিও থেকে বিট্টু বজরংয়ের সহযোগীদেরও শনাক্ত করা হচ্ছে, তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।
এই মুখপাত্র বলেছেন, “পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া কাউকেই ছাড়া হবে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নজর রাখা হচ্ছে। যারা যে কোনো ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য বা বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়াবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।”
ফরিদাবাদের গাজিপুর বাজার ও দাবুয়া বাজারের ফল ও সবজি ব্যবসায়ী বিট্টু বজরং ওরফে রাজ কুমার গত তিন বছর ধরে একটি গোরক্ষক গোষ্ঠী পরিচালনা করে আসছেন। শুধু গত মাসেই ধর্মীয় আবেগ উস্কে দেওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।
নূহের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর ফরিদাবাদে গোরক্ষা বজরং বাহিনীর এই প্রধানের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধর্মীয় শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার পর দাঙ্গা কীভাবে শুরু হল তা নিয়ে বলতে গিয়ে নূহের এমএলএ চৌধুরি আফতাব বলেন, “লোকজন আগে থেকেই মোনু মানেসার, বিট্টু বজরংয়ের বিবৃতি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ছিল, আর ওই সময় গুজব ছড়ায় মোনু এই শোভাযাত্রায় যোগ দিতে মানেসরে এসেছেন, এই নিয়ে সহিংসতা শুরু হয়ে যায়।”
গত মাসে টানা ১৮ ঘণ্টা ধরে চলা ওই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নূহ থেকে শুরু হয়ে বিদ্যুৎগতিতে আশপাশের গুরুগ্রাম, বাদশাপুর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। এতে পাঁচজন নিহত ও অন্তত ৭০ জন আহত হন।
দাঙ্গা শুরু হওয়ার দিন মধ্যরাতের পর গুরুগ্রামে একটি মসজিদ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে নূহতে কয়েকশ গাড়ি ভাংচুর ও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। নিহতদের মধ্যে দুই নিরাপত্তারক্ষী ও জ্বালিয়ে দেওয়া মসজিদের ইমামও আছেন, তারা গুলিতে নিহত হন।
আগের খবর:
ভারতের হরিয়ানায় ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, নিহত ৪