দিল্লিতে টহল বাড়ানোর পাশাপাশি নগরীর স্পর্শকাতর এলাকাগুলোর ওপর নজর রাখতে ড্রোন ব্যবহার করছে পুলিশ।
Published : 02 Aug 2023, 04:09 PM
ভারতের হরিয়ানার নূহ জেলায় শুরু হওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পাশ্ববর্তী গুরুগ্রাম শহরেও ছড়িয়ে পড়ছে। পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকায় দিল্লিতেও সতর্কাবস্থায় আছে পুলিশ, জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। গুরুগ্রাম থেকে রাজধানী নয়া দিল্লির দূরত্ব ২০ কিলোমিটারেরও কম।
মঙ্গলবার রাতে গুরুগ্রামের ৭০ নম্বর সেক্টরে একটি আবাসিক কমপ্লেক্সের পাশে বেশ কয়েকটি দোকান ও ঝুপড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এদিন বিক্ষিপ্তভাবে বেশ কয়েকটি সহিংসতার ঘটনা ঘটার পর প্রশাসন বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করে। অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ পেট্রল ও ডিজেলের খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে।
তবে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের কিছু ঘটনা ঘটলেও এদিন বড় ধরনের কোনো সহিংসতা হয়নি বলে দাবি করেছে গুরুগ্রামের পুলিশ।
নাগরিকদের গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো খবরও বিশ্বাস না করার অনুরোধ জানিয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে।
গুরুগ্রাম পুলিশের সহকারী কমিশনার বরুণ কুমার দাহিয়া বলেছেন, “আজ (বুধবার) স্কুল, কলেজ, কর্মক্ষেত্র বন্ধ থাকবে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে বার্তা ছড়ানো হয়েছে তা মিথ্যা। সব ধরনের গাড়ি চলাচল করছে, এক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।”
আমেরিকান এক্সপ্রেস, কেপিএমজির মতো কয়েকটি বহুজাতিক কর্পোরেশন কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে।
সোমবার দিল্লি থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে নূহতে একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রা চলাকালে সহিংসতা শুরু হয়। অনেকে এর জন্য ভাইরাল হওয়া একটি আপত্তিকর ভিডিওকে দায়ী করেছেন। একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা পাথর ছুড়ে শোভাযাত্রায় হামলা চালায়, তখন আড়াই হাজারেরও বেশি অংশগ্রহণকারী একটি মন্দিরে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সহিংসতা আরও বেড়ে যায়। নূহতে শতাধিক গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করা হয়। এক পর্যায় সহিংসতা পার্শ্ববর্তী গুরুগ্রামেও ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাতের পর দাঙ্গাকারীরা গুরুগ্রামে একটি মসজিদ পুড়িয়ে দেয়।
হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার জানিয়েছেন, নূহে সহিংসতায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সোমবার এখানে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ১১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
হরিয়ানার আরও কয়েকটি জেলায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নূহ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে বাদশাপুরে দাঙ্গা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় বিকাল প্রায় ৩টার দিকে প্রায় ২০০ জনের মতো লাঠিসোটা ও পাথর নিয়ে এলাকাটিতে প্রবেশ করে বিভিন্ন দোকানপাটে হামলা চালায়। তারা বেশ কয়েকটি মাংসের দোকানে হামলা চালানো পর কয়েকটি খাবারের দোকানে অগ্নিসংযোগ করে ও ধর্মীয় শ্লোগান দেয়।
গুরুগ্রামের পাশ্র্ববর্তী সোহনায় বুধবার স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
দিল্লিতেও সতর্কতা জারি করে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। নগরীর স্পর্শকাতর এলাকাগুলোর ওপর নজর রাখতে ড্রোন ব্যবহার করছে পুলিশ।
দিল্লির পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিবেশী এলাকাগুলোতে যে ধরনের ঘটনা ঘটছে রাজধানীতে সেরকম কিছু ঘটলে সাড়া দেওয়ার জন্য তাদের বাহিনী প্রস্তুত অবস্থায় আছে।
আরও খবর:
ভারতের হরিয়ানায় ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, নিহত ৪