ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার’ অধিকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ইরানকে এ হামলার কোনো প্রতিক্রিয়া না জানানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করেছে।
Published : 26 Oct 2024, 07:07 PM
অক্টোবর মাসের প্রথমদিকে ইসরায়েলে প্রায় ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রযোগে হামলা চালিয়েছিল ইরান, ২৫ দিন পর ওই হামলার জবাব দিয়েছে ইসরায়েল।
শনিবার দুপুর রাত থেকে শুরু করে ইরানের রাজধানী তেহরান ও পশ্চিমাঞ্চলীয় দু’টি প্রদেশ দেশটির সামরিক স্থাপনাগুলোতে তিন ধাপে তীব্র বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার’ অধিকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ইরানকে এ হামলার কোনো প্রতিক্রিয়া না জানানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও এ হামলার ‘সমানুপাতিক জবাব’ দেওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছে ইরান।
তবে সিএনএনকে অস্ট্রেলিয়ান প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ম্যালকম ডেভিস বলেছেন, ইসরায়েলি হামলা ইরানের জন্য ‘বিব্রতকর’ হলেও তেহরান এবার ‘জোরালো প্রতিশোধ’ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারে।
অস্ট্রেলিয়া স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক ডেভিস বলেন, ইসরায়েল যতই তাদের হামলা 'সীমিত' বা 'সুনির্দিষ্ট' রাখুক তাও এই হামলা ইরানের জন্য ‘অবশ্যই বিব্রতকর’।
তিনি বলেন, "কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ইরান কি আসলেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধেএই হামলার প্রতিশোধ নিতে চায়?”
এমন কিছু হলে ইসরায়েল তেহরানের নেতাদের লক্ষ্যস্থল করতে পারে এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে ডেভিস বলেন, “আমি মনে করি, এখন ইরানের উচিত হবে পিছু হটা এবং ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে তা মেনে নেওয়া।”
এ হামলার পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘাত কমে যাবে বলে বিশ্বাস বাইডেন প্রশাসনের। কিন্তু কিছু বিশেষজ্ঞ সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন।
শনিবার ইসরায়েলের হামলার পর মার্কিন প্রশাসনের এক ঊধ্র্বতন কর্মকর্তা বলেন, “এর মধ্য দিয়ে ইরান ও ইসরায়েলের সরাসরি গোলাগুলি বিনিময় বন্ধ হওয়া উচিত।”
তবে ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসির জ্যেষ্ঠ ফেলো অ্যান্ড্রু টেইবলার বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষরা ও মিত্ররা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে তা নিয়ে যেকোনো প্রশাসনের পক্ষে পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী হওয়া কঠিন।"
হামলার পর ওই অঞ্চলের স্যাটেলাইট ছবিগুলোতে ইরানের ক্ষয়ক্ষতির পরিস্থিতির একটা ধারণা পাওয়া যাবে আর তার মধ্য দিয়ে ইরান কী ধরনের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে তারও একটা অনুমান করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপন্সিবল স্টেটক্রাফটের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ত্রিতা পার্সি সতর্ক করে বলেছেন, “যদি ইরানের হতাহতদের মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও থেকে থাকে, তাহলে ইরান প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য বেশি চাপ অনুভব করবে।”
ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা এখনও উত্তেজনা বৃদ্ধির পথে রয়েছি এবং গাজা ও লেবাননে হত্যাযজ্ঞ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা এভাবেই চলতে থাকবে।”
পার্সি আরও বলেন, “যদি তা না হয় তাহলে আমরা সম্ভবত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বা কয়েক মাসের মধ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে আরেক দফা হামলা-পাল্টা হামলা দেখতে যাচ্ছি আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটি এবারের চেয়ে আরও প্রচণ্ড হবে।”