“আমরা জানি কার হাতে রাশিয়া এবং রুশ জনগণের বিরুদ্ধে এ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তবে কে এর আদেশ দিয়েছে আমরা তাকেও খুঁজে বের করতে আগ্রহী।”
Published : 26 Mar 2024, 07:24 AM
জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটই মস্কোর কাছের কনসার্ট হলে শুক্রবার প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে, সোমবার এ কথা স্বীকার করে নেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তবে তিনি এও বলেন, ওই হামলায় ইউক্রেইন এবং কিইভও লাভবান হয়েছে এবং হামলার পেছনে কিইভের ভূমিকা থাকলেও থাকতে পারে।
গত শুক্রবার ক্রোকাস সিটি হলে একটি কনসার্ট আয়োজনে গান শুরু হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে চার বন্দুকধারী সেখানে বন্দুক হাতে হামলা চালায়। তারা প্রথমে দর্শকদের দিকে এলোপাড়াতি গুলি ছোড়ে, তারপর পেট্রোল ঢেলে হলে আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলায় ১৩৯ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ১৮২ জন।
হামলার পরপরই ইসলামিক স্টেট দায় স্বীকার করে টেলিগ্রামে বার্তা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো থেকেও ইসলামিক স্টেটের আফগানিস্তান শাখা আইএসআইএস-কে এই হামলা চালিয়েছে বলে জানানো হয়। রোববার ফ্রান্সও নিজেদের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আইএসআইএস-কে ই মস্কোর কনসার্ট হলে হামলা চালিয়েছে বলে জানায়।
রাশিয়া অবশ্য শুরু থেকেই হামলার পেছনে আইএসআইএস থাকার বিষয়টি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে এসেছে। বরং দেশটি হামলার সঙ্গে ইউক্রেইনের যোগসূত্রিতা খোঁজার চেষ্টা করেছে। তারা বলেছে, চার হামলাকারী কনসার্ট হলে হামলার পর ইউক্রেইন সীমান্ত দিয়ে রাশিয়া থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্তের কাছ থেকে চার সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে আটক করে।
তবে সোমবার টেলিগ্রামে এক পোস্টে পুতিন লেখেন, “আমরা জানি যে এই অপরাধটি কট্টর ইসলামপন্থিদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। যারা এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী যে মুসলমানরা শতাব্দী কাল ধরে লড়াই করে যাচ্ছে।”
পুতিন তার পোস্টে সরাসরি ইসলামিক স্টেটের নাম নেননি। তবে তিনি তার আগের ধারণা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, হামলাকারীরা ইউক্রেইনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। এখনও অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে ‘যেগুলোর উত্তর খুঁজে বের করতে হবে’।
“প্রশ্ন উঠেছে, এই হামলা থেকে কে লাভবান হয়েছে? নব্য-নাৎসি কিইভ সরকার, যারা ২০১৪ সাল থেকে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে, তারা আমাদের ক্ষতি করার যে একের পর এক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই নৃশংসতার সঙ্গে হয়তো তার সম্পর্ক রয়েছে।
“আমরা জানি কার হাতে রাশিয়া এবং রুশ জনগণের বিরুদ্ধে এ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তবে কে এর আদেশ দিয়েছে আমরা তাকেও খুঁজে বের করতে আগ্রহী।”
পুতিনের এই পোস্টের জবাবে সোমবার রাতে নিজের নিয়মিত ভিডিও বার্তায় ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, “ক্রেমলিনের নেতার কাছে তিনি নিজে ছাড়া বাকি সবাই সন্ত্রাসী। অথচ তিনি দুই দশক ধরে সন্ত্রাসের উপর ভর করে চলছেন।
“তিনি যখন চলে যাবেন তখন সন্ত্রাসবাদ এবং নৃশংসতাও তার সঙ্গে অদৃশ্য হয়ে যাবে।”
আরও পড়ুন
মস্কোয় হামলা: আইএস জঙ্গিদের দায় স্বীকার নিয়ে সন্দিহান রাশিয়া