অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাইছেন পুতিন: জেলেনস্কি

“তারা তাদের লাখো সন্ত্রাসীকে ইউক্রেইনের ভূমিতে ডেকে এনেছে, আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং তাদের নিজ দেশে কি হচ্ছে সেটা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যাথা নেই।”

রয়টার্স
Published : 24 March 2024, 09:50 AM
Updated : 24 March 2024, 09:50 AM

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর কাছের একটি কনসার্ট হলে গত শুক্রবারের ভয়াবহ প্রাণঘাতী হামালার দায় ভ্লাদিমির পুতিন অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চাইছেন বলে মনে করেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

শনিবার রাতে তার নিয়মিত ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, “পুতিন এবং অন্যান্য লুটেরারা সব সময় শুধু অন্যের ঘাড়ে দোষা চাপানোর চেষ্টা করেন। তাদের কৌশল সব সময় একই থাকে। আমরা আগেও এর সবকিছুই দেখেছি, ভবন ধ্বংস করা, গোলাগুলি, বিস্ফোরণ। এবং তারা সবসময় দোষ চাপাতে অন্য কাউকে খুঁজে বের করে।”

১৯৯৯ সালে রাশিয়ার মস্কো, বুইনকাস্ক ও ভলগোদোনস্ক শহরে চারটি অ্যাপার্টমন্টে ভবনে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণে প্রায় ৩০০ মানুষ নিহত হয়। রাশিয়া এজন্য চেচেন বিদ্রোহীদের দায়ী করে এবং ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা পুতিন চেচনিয়ায় অভিযান চালানোর জন্য রাশিয়ার সৈন্যদলকে পুনরায় সেখানে পাঠান। চেচেন বিদ্রোহীদের দাবি ছিল, রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীই ওই বিস্ফোরণগুলো ঘটিয়েছে।

শনিবার রাতে জেলেনস্কির ওই ভিডিও বার্তা প্রকাশের পর এর প্রতিক্রিয়ায় রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “জেলেনস্কি একমাত্র রাষ্ট্রপ্রধান যিনি (মস্কোয়) ভয়াবহ ওই সন্ত্রাসী হামলার জন্য রাশিয়াকেই দায়ী করার মত যথেষ্ট পাগল।”

গত শুক্রবার রাজধানী মস্কোর কাছের ক্রাসনোগরস্কের একটি সিটি হলে কনসার্ট আয়োজনে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ১৪৩ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বিবিসি অবশ্য নিহতের সংখ্যা অন্তত ১৩৩ বলছে।

হামলার পরপরই জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট ওই হামলার দায় স্বীকার করে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও ইসলামিক স্টেটের আফগানিস্তান শাখা আইএসআইএস-কে এই হামলার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে।

কিন্তু রাশিয়ার ধারণা, হামলার পেছনে ইউক্রেইনের হাত আছে এবং চার বন্দুকধারী হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেইনে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল।

রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী এফএসবি ইউক্রেইন সীমান্ত থেকে সন্দেহভাজন ওই চার বন্দুকধারীকে গ্রেপ্তার করে। এ হামলায় জড়িত সন্দেহে মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে রাশিয়া।

অন্যদিকে, ইউক্রেইন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই হামলার সঙ্গে তাদের কোনো ধরণের সংশ্লিষ্টতা নেই। এফএসবির দাবিকে তারা ‘আরও একটি মিথ্যাচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেইনে আক্রমণ চালানো বাদ দিয়ে পুতিনের উচিত তার সৈন্যদলকে নিজ দেশে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাজে লাগনো।

“তারা তাদের লাখো সন্ত্রাসীকে ইউক্রেইনের ভূমিতে ডেকে এনেছে, আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং তাদের নিজ দেশে কি হচ্ছে সেটা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যাথা নেই।

“গতকাল, যখন এ সব কিছু ঘটেছে, নিজের সম্মানিত রুশ নাগরিকদের সঙ্গে এ দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার পরিবর্তে, তাদেরকে বার্তা দেওয়ার পরিবর্তে, কাপুরুষ পুতিন পুরো ২৪ ঘণ্টা নিরব থেকেছে এবং বসে বসে ভেবেছে কিভাবে এই ঘটনার সঙ্গে ইউক্রেইনকে জুড়ে দেওয়া যায়। এ সব কিছু সম্পূর্ণরূপে আগে থেকেই অনুমান যোগ্য।”