গাজায় ত্রাণ পাঠাতে সংঘাতে বিরতির কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র; অপরদিকে রাশিয়া বলছে মানবিক যুদ্ধবিরতির কথা।
Published : 25 Oct 2023, 01:48 PM
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে জাতিসংঘে পরস্পরবিরোধী প্রস্তাব রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।
উভয় দেশই গাজায় খাদ্য, পানি, চিকিৎসা সরবরাহ এবং বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব চায়। তবে যুক্তরাষ্ট্র চায়, গাজার বাসিন্দাদের জন্য ত্রাণ-সাহায্য পাঠাতে সংঘাতে সাময়িক বিরতি। আর রাশিয়া চাইছে, মানবিক যুদ্ধবিরতি।
রয়টার্স জানিয়েছে, সাধারণত যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ‘বিরতি’ দেওয়া ততটা আনুষ্ঠানিক বিষয় নয়। এটি আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতির চেয়ে স্বল্প সময় স্থায়ী হয়। ‘বিরতি’ আর ‘যুদ্ধবিরতির’ মধ্যে শাব্দিক অর্থে এই পার্থক্য হতে পারে।
শনিবার ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাবে সংঘাতে বিরতির কথা বলা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার রাশিয়া জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনাকে সমর্থন দেবে না। এর চেয়ে নিজেদের ভাষ্য মতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। আরব দেশগুলো এই যুদ্ধবিরতির কথাই বলছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও চীন, যাদের ভিটো দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। অস্থায়ী দশটিসহ মোট ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাশ হতে হলে অন্তত নয়টি দেশের সম্মতি বা ভোট লাগে। এর মধ্যে স্থায়ী কোনো দেশ ভিটো দিলে তা বাতিল হয়ে যায়।
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যে প্রস্তাব রেখেছে, তার ওপর কখন, কীভাবে ভোট হবে সেটি স্পষ্ট নয়।
মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন দেশটির দেওয়া খসড়া প্রস্তাবকে ‘বাস্তবিক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেন। অপরদিকে, রাশিয়া এদিন বিকল্প খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে বলছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে সমর্থন দিচ্ছে না।
জাতিসংঘে রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদের কাছ থেকে গোটা বিশ্ব গাজায় দ্রুত ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাশা করছে। সুনির্দিষ্ট এই বিষয়টিই আমেরিকান খসড়াতে নেই। যে কারণে তাদের প্রস্তাবে আলোচনার কোনো পয়েন্ট দেখি না। আমরা এটি সমর্থন দিতে পারি না।”
গত সপ্তাহেও রাশিয়া মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তুলেছিল। তবে সেটি পাশ হওয়ার মত ভোট পড়েনি। পাঁচটি দেশ রাশিয়ার ওই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, বিপক্ষে দেয় চারটি। আর ভোটদানে বিরত থাকে বাকি ছয় সদস্য দেশ।
আরব দেশগুলোও মঙ্গলবার স্পষ্ট করেছে, তারাও মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকেই সমর্থন করছে।
গত ৭ অক্টোবর গাজায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস অতর্কিত এক হামলা চালিয়ে ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০ এরও বেশি মানুষকে হত্যা করে। যার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলের হামলায় সোমবার পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ৫ হাজার ৭৯১ জন নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১১ লাখের বেশি মানুষ।