মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ ভাষ্য প্রত্যাখ্যান করেছে পানামা খাল কর্তৃপক্ষ।
Published : 06 Feb 2025, 10:28 AM
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন থেকে মার্কিন সরকারি জলযানগুলো কোনো মাশুল ছাড়াই পানামা খাল পাড়ি দিতে পারবে।
বুধবার সামাজিক মাধ্যম এক্স এ করা এক পোস্টে মন্ত্রণালয়টি বলেছে, “পানামা খাল পার হতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি জলযানগুলোর জন্য আর কোনো মাশুল ধার্য না করতে পানামা সরকার সম্মত হয়েছে।”
এতে প্রতি বছর মার্কিন সরকারের কোটি কোটি ডলার বেঁচে যাবে বলে পোস্টে মন্তব্য করা হয়েছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তবে পানামা খাল কর্তৃপক্ষ মার্কিন মন্ত্রণালয়ের এ ভাষ্য প্রত্যাখ্যান করেছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, খাল পার হওয়ার অধিকার ও মাশুলে কোনো পরিবর্তন আনেনি তারা।
বেসামরিক জলযান নয়, কেবল যুদ্ধযানের খালটি পার হওয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী পানামা খাল কর্তৃপক্ষ, বিবৃতিতে বলেছে তারা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তার মধ্য আমেরিকা সফরকালে রোববার পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
মধ্য আমেরিকার এই দেশটি তাদের ওই জলপথ ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত মাশুল রাখছে, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এমন অভিযোগ তোলার পর পানামা খাল ট্রাম্প প্রশাসনের মনোযোগের একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়।
গত মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন, “যদি দানের মহৎ পদক্ষেপের নৈতিক ও আইনি- উভয় দিক অনুসরণ করা না হয়, তাহলে আমরা পানামা খাল আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করব; পুরোপুরি, দ্রুত এবং কোনো প্রশ্ন ছাড়াই।”
প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ ঘটাতে কৃত্রিম জলপথ পানামা খাল খনন করা হয়েছিল। ১৯০৪ থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে নির্মিত খালটির বেশিরভাগ অংশই যুক্তরাষ্ট্র করেছিল। তারপর থেকে কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট খাল ও সংলগ্ন এলাকাগুলো পরিচালনা করে।
১৯৭৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার স্বাক্ষরিত এক চুক্তির আওতায় ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র খালটির মালিকানা পানামার কাছে হস্তান্তর করে। তারপর থেকে খালটির মালিক পানামা।
কিন্তু মার্কিন জাহাজগুলোর জন্য মাশুল না কমালে যুক্তরাষ্ট্র খালটির নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
মুলিনো ট্রাম্পের হুমকি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, “পানামা খালের প্রতি বর্গ মিটার এবং আশপাশ এলাকা পানামার অধীনে রয়েছে এবং (পানামার) অধীনেই থাকবে।”
আলজাজিরা লিখেছে, খালটি দিয়ে বছরে ১৪ হাজার জাহাজ যাতায়াত করে। বৈশ্বিক বাণিজ্যে জলপথটির হিস্যা গড়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মার্কিন কনটেইনারের ৪০ শতাংশই ওই পথে পরিবাহিত হয়।
এশিয়া থেকে পণ্য আমদানির জন্য খালটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস-এলএনজিসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানির জন্যও যুক্তরাষ্ট্র এ নৌপথ ব্যবহার করে।