Published : 26 Mar 2025, 10:03 PM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দেশের নির্বাচন পক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি।
তার আদেশ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ভোটার হিসেবে নাম নথিভুক্ত করতে হলে দিতে হবে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র। আর নির্বাচনের দিনের মধ্যেই গোটা দেশ থেকে সব ব্যালট গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। রাজ্যগুলো আর নির্বাচনের পরের দিন পোস্টাল ব্যালট গ্রহণ করতে পারবে না।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ টি রাজ্যে নির্বাচনের দিনের পরও পোস্টাল ব্যালট গ্রহণ করার নিয়ম আছে, যে ব্যালটগুলো নির্বাচনের আগের দিন অথবা নির্বাচনের দিনে ডাকযোগে পাঠানো হয়। ট্রাম্পের আদেশে এই নিয়ম আর থাকবে না।
ওদিকে, নাগরিকত্বের প্রমাণের নতুন নিয়ম চালু হলে অ-মার্কিনিরা আর ভোট দিতে পারবেন না। যদিও অ-মার্কিনিদের ভোটদান এমনিতেই বেআইনি। ১৯৯৬ সালের ‘অবৈধ অভিবাসন সংস্কার এবং অভিবাসী দায়বদ্ধতা’ আইন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বিদেশি নাগরিকদের ভোট দেওয়া নিষিদ্ধ।
এ ধরনের ভোটারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা ও দেশ থেকে বিতাড়নের মতো আইন চালু আছে। তা হলেও নতুন নিয়মে মার্কিন নাগরিকত্বের বৈধ লিখিত প্রমাণপত্র দেখাতে হবে ভোটারদেরকে।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের সময় ট্রাম্প বলেন, “নির্বাচনি জালিয়াতি—আপনারা নিশ্চয়ই এই শব্দটি শুনেছেন। আমরা এটি বন্ধ করতে চাই। অন্তত এ পদক্ষেপ সেই লক্ষ্য অনেকটা এগিয়ে নেবে।”
“আমেরিকান নির্বাচনের সততা বজায় রাখা ও সুরক্ষা” শিরোনামের এ আদেশে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখনও "প্রাথমিক এবং প্রয়োজনীয় নির্বাচনি সুরক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নে ব্যর্থ"।
এ আদেশে রাজ্যগুলোকে হোয়াইট হাউজের সঙ্গে সহযোগিতা করার ডাক দেওয়া হয়েছে। অন্যথায়, রাজ্যগুলো ভোটারদের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র বাধ্যতামূলক না করলে তারা কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল হারাতে পারে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
বিবিসি জানায়, প্রত্যেক রাজ্যে ভোটার নিবন্ধনের জন্য একটি সাধারণ ফর্ম ব্যবহার করা হয়, যেখানে নাগরিকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হয়। ভুল তথ্য প্রদান শাস্তিযোগ্য অপরাধ, তবে নাগরিকত্ব প্রমাণে কোনও নথি জমা দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
ট্রাম্পের আদেশে প্রমাণ হিসাবে নথি জমা দেওয়ার যে নিয়মের কথা বলা হচ্ছে তাতে অনেকেরই ভোটাধিকার হারানোর আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে লাখ লাখ ভোটারের মার্কিন নাগরিকত্বের যথাযথ প্রমাণপত্র নেই।
এমনকি যোগ্য বহু মার্কিন নাগরিকের কাছে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্রও সহজলভ্য নয়। তাছাড়া, বর্তমানে যাদের পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট নেই তারা ভোট দিতে পারবেন না।
তবে ট্রাম্পের আদেশ কতটা কার্যকর হবে, তা স্পষ্ট নয়। তার এই নির্বাহী আদেশ আদালতে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তাছাড়া, নির্বাচনি বিধি নির্ধারণের ক্ষমতা মূলত মার্কিন কংগ্রেস এবং রাজ্যগুলোর হাতেই থাকে। সেখানে প্রেসিডেন্টের কোনও ভূমিকা নেই।
ডেমোক্র্যাটেরা এরই মধ্যে ট্রাম্পের আদেশ ‘অবৈধ’ বলে সরব হয়েছেন। আদালতে এ আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করারও পরিকল্পনা চলছে।