নিউ ইয়র্কে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের হস্তক্ষেপের কয়েক ঘণ্টা পর লস অ্যাঞ্জলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার এ ঘটনা ঘটে।
Published : 02 May 2024, 11:01 AM
লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সহিংসতা চলাকালে পুলিশ সময়মতো উপস্থিত না হওয়ায় সমালোচনা করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের দপ্তর।
ক্যাম্পাসে পুলিশ কর্মকর্তাদের ডাকার আগে মুখোশপরা ইসরায়েলপন্থি একটি দল ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসোমের মুখপাত্র বলেছেন, “দেরি করে আসার পর পুলিশের এই সংক্ষিপ্ত হস্তক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য।”
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর দুই থেকে তিন ঘণ্টা ধরে চলে, পরে পুলিশ সেখানে হস্তক্ষেপ করে। বুধবার পরিস্থিতি শান্ত ছিল। ক্যাম্পাসে কয়েকশ পুলিশ মোতায়েন আছে।
ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য কর্মকর্তারা ও বিশ্ববিদ্যালয়টির নেতারা দাবি করেছেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতের আগে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডিকসন প্লাজার তাঁবু শিবিরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
কিন্তু ঘটনাস্থলে থাকা বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট দ্রুততার সঙ্গে হস্তক্ষেপ করেনি।
বিবিসি জানিয়েছে, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার প্রায় দুই ঘণ্টা পর প্রতিবাদকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে শুরু করে আর বুধবার ভোরের দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তার দপ্তরের পাশাপাশি গভর্নর নিউসোমও সামাজিক মাধ্যম এক্স এ পৃথক এক পোস্টে সহিংসতার নিন্দা করেছেন।
তিনি বলেছেন, “আইনটি পরিষ্কার। বাক স্বাধীনতার অধিকার সহিংসতা, ভাংচুর বা অনাচারে পর্যবসিত হয় না।”
তিনি বলেছেন, “যারা দায়ী তাদের অবশ্যই ফৌজদারি বিচার, স্থগিতাদেশ বা বহিষ্কারের মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।”
আইনশৃঙ্খলা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস জানিয়েছে, ঘটনার সময় অল্প কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা থাকায় এবং তাদের সংখ্যা সংঘর্ষে জড়ানোদের চেয়ে অনেক কম হওয়ায় তারা পিছিয়ে আসে।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা যেসব ভিডিও করেছেন রয়টার্স সেগুলো যাচাই করেছে। সেসব ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশদের ডেকে নিয়ে আসার আগে ফিলিস্তিনপন্থি প্রতিবাদকারীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য তাদের চারপাশে রাখা কাঠের বোর্ডের অস্থায়ী ব্যারিকেডগুলো ইসরায়েলপন্থি হামলাকারীরা লাঠিসোটা নিয়ে ভাংচুর করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি বুধবার সব ধরনের ক্লাস বাতিল করেছে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর জিন ব্লক জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত করবে আর তাতে ‘গ্রেপ্তার, বরখাস্ত ও বহিষ্কারের মতো ঘটনা ঘটতে পারে’।
এক বিবৃতিতে ব্লক বলেছেন, “ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের ওপর ভয়ঙ্কর হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছে উস্কানিদাতাদের একটি দল।”
ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের শিবির স্থাপন করে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘অবৈধ সমাবেশ’ ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হামলার ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না, রয়টার্সের এমন জিজ্ঞাসার জবাব লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ দেয়নি আর বিশ্ববিদ্যালয়ও কিছু জানায়নি।
নিউ ইয়র্কে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের হস্তক্ষেপের কয়েক ঘণ্টা পর লস অ্যাঞ্জলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার এ ঘটনা ঘটে। ইসরায়েলপন্থি আক্রমণকারীরা চড়াও হওয়ার পর ফিলিস্তিনপন্থিরা তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। ফিলিস্তিনপন্থিদের মধ্যে অনেক ইহুদি শিক্ষার্থীও ছিল।
🚨 BREAKING NEWS: Brutal Assault at Protest! Metal baton strike leaves demonstrator with severe head injury. pic.twitter.com/EAVlRiakew
— Abdul Quadir - عبدالقادر (@Northistan) May 1, 2024
আরও পড়ুন:
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভকারী দুই পক্ষের ‘ভয়াবহ’ সহিংসতা
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৩০০ বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার