তীব্র বিমান হামলা ও ইসরায়েলি বাহিনীগুলোর স্থল অভিযানে গাজা ভূখণ্ডের প্রায় ৬০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।
Published : 17 Jan 2025, 01:31 PM
গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এক যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে যেটি রোববার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। ১৫ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে ৪৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও গাজা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির ছয় সপ্তাহের প্রথম পর্বে গাজা ভূখণ্ড থেকে ধীরে ধীরে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করা হবে। এ সময় ইসরায়েলের কারাগারগুলোতে বন্দি থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজা থেকে জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস।
রয়টার্স জানিয়েছে, কোপার্নিকাস সেন্টিনেল-১ উপগ্রহের তথ্য অনুযায়ী দেড় বছর ধরে তীব্র বিমান হামলা ও ইসরায়েলি বাহিনীগুলোর স্থল অভিযানে গাজা ভূখণ্ডের প্রায় ৬০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।
ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিজুড়ে বিপুল ধ্বংস্তূপ জমা হয়ে আছে। যুদ্ধবিরতি শুরু হলে এসব আবর্জনা পরিষ্কার করতে ব্যাপক জটিলতা দেখা দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ আবর্জনার মধ্যে অবিস্ফোরিত গোলাবারুদও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এর পাশাপাশি অ্যাসবেস্টস অন্যান্য দূষণকারী পদার্থগুলোতো আছেই, বিশেষ করে শরণার্থী শিবিরগুলোতে।
এই ধ্বংসাবশেষ ও আবর্জনার মধ্যে অগুণতি মানুষের লাশ আটকা পড়ে আছে, যা জটিলতায় আরেকটি স্পর্শকাতর মাত্রা যোগ করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ বলেছে, ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনগুলো থেকে অনেক ধূলা ছড়িয়ে পড়েছে আর সেগুলো থেকে বের হওয়া বিপজ্জনক উপকরণ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে অথবা সরবরাহ করা পানির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, আর এসবের ফলে গাজার জনসাধারণ গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকিতে আছে।
গাজা ভূখণ্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে ছিটমহলটির উত্তরাঞ্চল। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথম মাসে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটি ঘেরাও করে এই নগরীর বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে দক্ষিণাঞ্চলে চলে যাওয়ার আদেশ দিয়েছিল। যুদ্ধ শুরুর আগে গাজা সিটি ছিল ছিটমহলটির সবচেয়ে বড় শহর।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, উত্তর গাজার ৭০ শতাংশ ভবন এবং গাজা সিটির ৭৪ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। উপগ্রহের ছবিগুলোতে এসব এলাকায় অবকাঠামোর ব্যাপক ধ্বংসাবশেষ ও আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ভূখণ্ডটির দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান শহর খান ইউনিসের ৫৫ শতাংশ অবকাঠামো ও মিশরীরে সীমান্তবর্তী শহর রাফার ৪৯ শতাংশ ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আর মধ্যাঞ্চলীয় শহর দিয়ের আল-বালাহর ৫০ শতাংশ ভবন আবর্জনায় পরিণত করে দেওয়া হয়েছে।
রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও চুক্তি হওয়ার কথা ঘোষণার পর থেকে ইসরায়েল আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অন্তত ৮৭ জনকে হত্যা করেছে। এদের মধ্যে ২১ শিশু ও ২৫ জন নারী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: