তিন বছরে ইউক্রেইনে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তার বিনিময়ে এই খনিজ চুক্তি চাইছেন ট্রাম্প।
Published : 26 Feb 2025, 12:54 PM
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেইন একটি খসড়া খনিজ চুক্তির শর্তাবলীর বিষয়ে সম্মত হয়েছে বলে বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেইনের যুদ্ধের দ্রুত অবসান ঘটাতে চাইছেন। এ পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনের সমর্থন পাওয়ার জন্য সচেষ্ট হয়েছে কিইভ। আর তাতেই গুরুত্বপূর্ণ খনিজ নিয়ে দেশ দু’টির সমাঝোতার পথ সুগম হয়েছে।
খসড়া চুক্তির বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞাত এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, এতে মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চিয়তা বা অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো উল্লেখ নেই; শুধু বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র চায় ইউক্রেইন হবে ‘মুক্ত, সার্বভৌম ও নিরাপদ’।
বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর কর্মকর্তা জানান, ভবিষ্যৎ অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে ওয়াশিংটন ও কিইভের মধ্যে এখনও আলোচনা হচ্ছে।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘অনেক বড় একটি চুক্তিতে’ সই করতে শুক্রবার ওয়াশিংটন যেতে চান। আগের সপ্তাহে দুই নেতা শত্রুতামূলক বাক্য বিনিময়ের পর মঙ্গলবার এমনটি জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেইনে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তার বিনিময়ে এই খনিজ চুক্তি চাইছেন ট্রাম্প। চুক্তিটি হলে ইউক্রেইনের খনিজের বিশাল ভাণ্ডার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে।
ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা এখন যা করছি আমরা বলছি, দেখুন, আমরা সুরক্ষিত হতে চাই। এখন আমেরিকান কর দাতারা তাদের অর্থ ফেরত পেতে যাচ্ছে, সঙ্গে আরও যুক্ত হচ্ছে।”
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ হাজার কোটি ডলারের খনিজ সম্পদের দাবি নিয়ে করা একটি খসড়া চুক্তিতে সই করতে অস্বীকার করেছিলেন। তখন কিইভ প্রতিবাদ করে বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সহায়তা হিসেবে এর চেয়ে অনেক কম পেয়েছে তারা আর ওই খসড়ায় ইউক্রেইনের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।
খসড়া চুক্তিরটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞাত ওই কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চুক্তির শর্তাবলীতে ইউক্রেইনের খনিজ, হাইড্রোকার্বন ও অন্য নিষ্কাশনযোগ্য উপকরণগুলো থেকে আসা রাজস্ব সংগ্রহ ও পুনর্বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেইন একটি ‘রিকনস্ট্রাকশন ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’ গঠন করবে, এমনটি বলা হয়েছে।
পরিচালনা ব্যয় বাদ দিয়ে যে রাজস্ব থাকবে ইউক্রেইন তার ৫০ শতাংশ এই ফান্ডে প্রদান করবে আর সেই অঙ্ক ৫০ হাজার কোটি ডলারে না পৌঁছানো পর্যন্ত দেওয়া অব্যাহত রাখবে। আর যুক্তরাষ্ট্র ‘স্থিতিশীল ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ একটি ইউক্রেইন’ গড়ে তুলতে দীর্ঘ মেয়াদি আর্থিক প্রতিশ্রুতি দেবে।
এই খনিজ চুক্তির বিনিময়ে ইউক্রেইন কী পাবে, এমন প্রশ্নে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ৩৫ হাজার কোটি ডলার দিয়েছে আর ‘প্রচুর সামরিক সরঞ্জাম (দিচ্ছে) আর যুদ্ধ করার অধিকার তো থাকছেই’।
আগের খবর: