গৃহযুদ্ধ কবলিত মিয়ানমারের ক্ষেত্রে আসিয়ানের নীতি মেনেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
Published : 29 Jan 2024, 01:55 PM
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকে প্রতিনিধি হিসেবে একজন আমলাকে পাঠিয়েছে সামরিক শাসিত মিয়ানমার, জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার এক শীর্ষ কূটনীতিক।
সোমবার লাওসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওই কূটনীতিক জানিয়েছেন, গৃহযুদ্ধ কবলিত মিয়ানমারের ক্ষেত্রে আসিয়ানের নীতি মেনেই ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এতে দেশটিজুড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এর দুই মাস পর দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের এক শান্তি পরিকল্পনায় সম্মত হয় দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা।
কিন্তু পরবর্তীতে ওই শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয় তারা। এর জেরে আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোতে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জেনারেলদের অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তাদের পরিবর্তে ‘অরাজনৈতিক’ প্রতিনিধি পাঠাতে বলা হয় মিয়ানমারকে।
কিন্তু দেশটির জান্তা সরকার এতে ক্ষুব্ধ হয়। আসিয়ান মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ তুলে তারা। গত দুই বছর ধরে ‘অরাজনৈতিক’ প্রতিনিধি পাঠানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে তারা।
এবার লাওসের বৈঠকে মিয়ানমার তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত স্থায়ী সচিব মালার থান হেটিকে-কে প্রতিনিধি করে পাঠিয়েছে, রয়টার্সকে এক টেক্সট বার্তায় জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি।
আরও দুইজন কূটনীতিক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
বার্তায় রেতনো বলেছেন, “আসিয়ানের নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আসিয়ানের সিদ্ধান্ত তৈরির প্রক্রিয়ায় মিয়ানমার প্রভাব ফেলবে না।”
গত বছর মিয়ানমারের যুদ্ধরত পক্ষগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরুর চেষ্টায় দৃশ্যের অন্তরালে নেওয়া এক উদ্যোগে রেতনো নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মিয়ানমারে গণতন্ত্রপন্থি মিলিশিয়ারা দেশটির ছায়া সরকারের সঙ্গে জোট বেঁধে আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র বাহিনীগুলো জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
এই পক্ষগুলোকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে দেশটির সামরিক সরকার তাদের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকেই সংকটে আছে মিয়ানমার। দেশজুড়ে চলা লড়াইয়ের কারণে অন্তত ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বিদ্রোহ দমনে জান্তা বাহিনী অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করছে আর বেসামরিকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নৃশংসতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো; জান্তা সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।