প্রিগোজিন যদি সত্যিই নিহত হন তবে তার অস্থির জীবনের অবসান বড়ই নিষ্ঠুর এক ঘটনার মধ্য দিয়ে হলো।
Published : 25 Aug 2023, 12:03 AM
ওয়াগনার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগেনি প্রিগোজিনকে স্মরণ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার দেশে বুধবারের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ যাওয়ার পথে একটি এমব্রায়ার লিগ্যাসি বিমান মস্কোর উত্তরে তিভিয়ের অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়ে সব আরোহী নিহত হন।
পরে রাশিয়ার বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্মকর্তারা জানান, ওই বিমানে প্রিগোজিন এবং তার প্রধান সহচর দিমিত্রি ইউতকিন ছিলেন।
প্রিগোজিনের মৃত্যু নিয়ে বিশ্বজুড়ে রীতিমত হইচই পড়ে যায়। যদিও তিনি সত্যিই মারা গেছেন কি না, তা নিয়ে সামান্য হলেও সংশয় এখনো রয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে প্রিগোজিনকে নিয়ে প্রথমবার নিরবতা ভাঙেন পুতিন।
তিনি বলেন, বুধবার যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে সেটির ঠিক কী হয়েছিল তা তদন্ত করে দেখা হবে। তবে তদন্ত করতে সময় লাগবে।
এক সময় পুতিনের খুবই ঘনিষ্ঠজনদের একজন ছিলেন প্রিগোজিন। তার ডাক নাম ছিল ‘পুতিনস শেফ’।
বছরের পর বছর ধরে চাহিবা মাত্র প্রিগোজিনের সেবা পেয়েছেন পুতিন। কিন্তু তাদের সেই সম্পর্ক টুটে যায় গত জুনে প্রিগোজিনের নেতৃত্বে কয়েক হাজার ওয়াগনার যোদ্ধার বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন ওই বিদ্রোহকে বর্ণনা করেন ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে। মস্কোতে প্রিগোজিনের সুদিন যে শেষ হয়ে গেছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল সেদিনই।
কারণ, যে ব্যক্তি বহু বছর ধরে পুতিনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তার জন্য হঠাৎ করে বিদ্রোহ করে বসা বাড়াবাড়িই হয়ে গিয়েছিল। পুতিনের জন্য এই অপমান হজম করে যাওয়া কঠিন ছিল।
গত জুনে একদিন আয়ুর ওই বিদ্রোহের মাধ্যমে ওয়াগনারের প্রধান হয়ত নিজের নামে বিশেষ এক মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে ফেলেছিলেন।
প্রিগোজিন সম্পর্কে বৃহস্পতিবার পুতিন আরো বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরে প্রিগোজিনকে জানি, সেই ১৯৯০ এর দশক থেকে।
“জটিলতায় ভরা ভাগ্যের অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন তিনি এবং জীবনে তিনি গুরুতর কিছু ভুলও করেছিলেন।”
প্রিগোজিনকে বহনকারী বিমান বিধ্বস্ত হওয়া প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, “প্রাথমিক তথ্যে ওই বিমানে ওয়াগনার কোম্পানির কর্মীরা ছিল বলে জানা গেছে।
“আমি এটা স্মরণ রাখতে চাই যে এই ব্যক্তিরা ইউক্রেইনের নব্য-নাৎসি শাসনের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আমরা এটা মনে করতে পারি এবং জানি এবং আমরা কখনো এটা ভুলে যাব না।”
বুধবার বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীই গুলি করে ভূপাতিত করেছে বলে ওয়াগান গ্রুপের টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। যদিও এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেওয়া হয়নি।