Published : 06 May 2025, 10:01 AM
ইসরায়েলের প্রধান বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় একদিন পর ইয়েমেনের হোদেইদাহ বন্দরে ২০টি জঙ্গি বিমান ব্যবহার করে আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
রোববার ইয়েমেন থেকে হুতিদের ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের প্রধান বিমানবন্দর বেন গুরিয়নের ৩নং টার্মিনালের কাছে আঘাত হানে। ক্ষেপণাস্ত্রটিকে বাধা দিয়ে ধ্বংস করতে ব্যর্থ হয় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট।
এরপর সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় হোদেইদাহ ও এর আশপাশে হুতিদের বিভিন্ন লক্ষ্যে তারা হামলা চালায় বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে আইডিএফ।
ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা সাবা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত একজন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
তিনটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, হামলার পর হুতি কর্তৃপক্ষ বন্দরটির ও একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি চারপাশের এলাকা বন্ধ করে দিয়েছে।
তারা জানান, হামলায় বন্দরটির কতোটা ক্ষতি হয়েছে তা জানা যায়নি, তবে তীব্র আঘাত ও এরপর ছড়িয়ে পড়া আগুনে বন্দরটির কন্টেইনার বার্থ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রয়টার্স জানায়, আরও দুই সূত্রের হিসাব অনুযায়ী, বন্দরের পাঁচটি ডক, গুদাম ও কাস্টমস এলাকার ৭০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্দরের এক কর্মী জানিয়েছেন, দু’টি জাহাজ থেকে মাল নামানোর সময় হামলার ঘটনাটি ঘটে, এতে বন্দরটিতে যানবাহন চলাচল একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, ইয়েমেনের উপকূল বরাবর হুতিদের বিভিন্ন অবকাঠামো লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর প্রায় ২০টি জঙ্গি বিমান দিয়ে হামলাগুলো চালানো হয়েছে। লক্ষ্যস্থগুলোর মধ্যে হোদেইদাহ বন্দর ও নিকটবর্তী শহর বাজিলের একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি ছিল।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েল থেকে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরে তাদের জঙ্গি বিমানগুলো হুতি লক্ষ্যস্থলগুলোতে ৫০টি বোমা ফেলেছে। ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর জ্বালানিবাহী বিমান ও গোয়েন্দা বিমানগুলোও এ হামলায় অংশ নিয়েছে।
আইডিএফ বলেছে, হুতিরা ‘ইরানি অস্ত্র ও সামরিক বাহিনীর সরঞ্জাম আনতে’ হোদেইদাহ বন্দর ব্যবহার করে। আর বাজিলের সিমেন্ট ফ্যাক্টরি ‘হুতিদের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদ আর এটি সামরিক অবকাঠামো ও টানেল নির্মাণে ব্যবহৃত হয়’।
এডেন বন্দরের পর হোদেইদাহ ইয়েমেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর। লোহিত সাগরের এ বন্দরটি দিয়ে ইয়েমেনের আমদানি করা খাদ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ প্রবেশ করে।
হোদেইদাহ শহরের পাঁচ বাসিন্দা রয়টার্সকে জানান, হোদেইদাহ বন্দর এবং শহরের দু’টি এলাকায় ১০ বারেরও বেশি আঘাত হানা হয়েছে। বাজিলের সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে অন্তত চারবার আঘাত হানা হয়।
এসব হামলার পর হুতি কর্মকর্তা আব্দুল কাদের আল-মোরতাদা এক্স এ এক পোস্টে করা মন্তব্যে বলেছেন, ইসরায়েলের ‘অকল্পনীয়’ কিছুর জন্য অপেক্ষা করা উচিত।
রোববার ইয়েমেন থেকে ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে আঘাত হানার পর প্রতিশোধমূলক আঘাত হানার প্রত্যয় জানিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।