গুয়াইফেনেসিন টিজি সিরাপটি ভারতের পাঞ্জাবের কিউপি ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের তৈরি।
Published : 26 Apr 2023, 07:29 PM
এবার মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ এবং মাইক্রোনেশিয়ায় ভারতের তৈরি দূষিত কফ সিরাপ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ডব্লিউএইচও-র পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, গুয়াইফেনেসিন টিজি সিরাপ এর একটি ব্যাচের কিছু নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যেটি ভারতের পাঞ্জাব ভিত্তিক কিউপি ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের তৈরি।
‘‘পরীক্ষা করা নমূনায় অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় ডাইথাইলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন গ্লাইকোল পাওয়া গেছে।”
উভয় যৌগই মানবদেহের জন্য বিষাক্ত এবং যেটির ব্যবহারে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
এই কফ সিরাপ খেয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অসুস্থ হয়েছেন কিনা তা ডব্লিউএইচও-র বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি।
মাত্র কয়েকমাস আগেই ভারতের মেইডেন ফার্মাসিউটিকেলের বানানো চারটি কফ সিরাপ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছিল ডব্লিউএইচও। সেগুলো: প্রোমেথাজাইন ওরাল সল্যুশন, কোফেক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, ম্যাকফ বেবি কফ সিরাপ ও ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপ।
যেগুলো সেবন করে গাম্বিয়া ও উজবেকিস্তানে বেশ কয়েকটি শিশুর মৃত্যু হয়।
পরীক্ষায় সেগুলোতে অনুনমোদিত মাত্রার ডাইইথিলিন গ্লাইসল ও ইথিলিন গ্লাইসল পাওয়া গেছে।
নতুন করে সতর্কতা জারি করা সিরাপটিতেও ওই উপাদান দুটি অঅনুমোদিত মাত্রায় পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে কিউপি ফার্মাসিটিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুধীর পাঠক বিবিসিকে বলেন, ওষুধ নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার সব ধরণের অনুমতি নিয়েই তারা নির্দিষ্ট ওই ব্যাচের ১৮ হাজার ৩৪৬ বোতল কফ সিরাপ কম্বডিয়া রপ্তানি করেছিল।
ওই পণ্যগুলো কী করে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ এবং মাইক্রোনেশিয়ায় পৌঁছেছে তা তারা জানেন না। বলেন, ‘‘আমরা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমাদের ওই ওষুধগুলো পাঠাইনি এবং সেগুলো সেখানে ব্যবহারের জন্য প্রত্যয়িতও ছিল না। কোনো পরিস্থিতিতে এবং কী শর্তের অধীনে ওই বোতলগুলো মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ এবং মাইক্রোনেশিয়ায় পৌঁছেছে তা আমাদের জানা নেই।”
কম্বডিয়ার যে কোম্পানি তাদের ওষুধগুলো আমদানি করেছে তাদের বিরুদ্ধে কিউপি ফার্মাসিটিক্যাল আইনী নোটিস পাঠিয়েছে বলেও জানান তিনি।
ডব্লিউএইচও-র বিবৃতিতে বলা হয়, পরীক্ষা করা ওষুধটি বুকের ভেতর কফ জমে যাওয়া এবং কাশি উপশমে ব্যবহার করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ওই ওষুধ পরীক্ষা করেছে।
হরিয়ানা রাজ্যের ট্রিলিয়াম ফার্মা ওই সিরাপটি বাজারজাত করে। বিবিসি থেকে ফোনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের সাড়া মেলেনি।
ডব্লিউএইচও-র সর্বশেষ এই সতর্কতা নিয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
আরও পড়ুন:
ভারতের নিম্নমানের কফ সিরাপ কীভাবে পৌঁছাল গাম্বিয়ায়?
গাম্বিয়ায় কফ সিরাপে শিশুমৃত্যু: ভারতীয় কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার সুপারিশ
ভারতের দুই কাশির সিরাপ নিয়ে সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা