খনির ভেতরে ঠিকমত দেখতে না পাওয়ায় উদ্ধারকাজ পরিচালনা করা খুব কঠিন হয়ে গেছে, বলেন এক উদ্ধারকর্মী।
Published : 11 Jan 2025, 08:36 PM
ভারতের আসামের দিমা হাসাও জেলার একটি কয়লা খনিতে আটকে পড়া তিন শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে; আরও ছয়জনকে উদ্ধারের চেষ্টা এখনও চলছে।
ছয় দিন আগে হঠাৎ ঢুকে পড়া পানিতে পার্বত্য জেলাটির ওই খনির ভেতরে আটকা পড়েছিলেন তারা।
উদ্ধারকারীরা বলেন, গর্তে ঢুকে পড়া পানি অ্যাসিডিক ও ঘোলাটে হয়ে কয়লার সঙ্গে মিশে গেছে। এতে ভেতরটা ঠিকঠাক দেখা না যাওয়ায় উদ্ধারকাজ চালানো খুব কঠিন হয়ে গেছে। এরমধ্যেই উদ্ধারকারী দলের ডুবুরিরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এনডিটিভি লিখেছে, দুর্ঘটনার ষষ্ঠ দিনে এসেও এখনও নিখোঁজ আরও অন্তত ছয়জন শ্রমিক।
শনিবার সকালে খনি থেকে উদ্ধার করা তিন শ্রমিকের একজন ২৭ বছরের লিগেন মাগার, যিনি দিমা হাসাওয়ের বাসিন্দা। আরও দু'জনের পরিচয় জানার চেষ্টা চলার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
আসামের উমরাংসো থানা এলাকার ওই কয়লা খনির এক শ্রমিক ভয়াবহ সেই ঘটনার বর্ণনা দেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে।
তিনি বলেন, “ঘটনার সময় খনিতে বহু শ্রমিক কাজ করছিলেন। আচমকা পানি ঢুকে পড়ায় সবাই চিৎকার করতে শুরু করেন। কমপক্ষে ৩০-৩৫ জন উপরে উঠে আসতে পারলেও খনির মধ্যে কয়েকজন শ্রমিক আটকে পড়েন।”
ওএনজিসি ও কোল ইন্ডিয়ার আনা বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে প্রায় ৩১০ ফুট গভীর গর্তে জমে থাকা পানি বের করার কাজ চলছে।
আসামে কয়লা খনিতে আটকা ৯ শ্রমিক, ৩ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, এ ঘটনায় এরইমধ্যে উমরাংসো থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অবৈধভাবে খনিতে কয়লা উত্তোলনের কাজ চলছিল। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় শ্রমিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সংস্থার একাধিক দল এবং সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী এ উদ্ধারের অভিযানে অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
এর আগে মঙ্গলবার ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, সোমবার থেকে খনির ভেতরে আটকা পড়া ওই নয়জনকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী ডুবুরি, হেলিকপ্টার ও ইঞ্জিনিয়ার মোতায়েন করেছে।
স্থানীয় সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উদ্ধারকারী দলগুলো তিনটি মৃতদেহ দেখতে পেয়েছে, কিন্তু এখনও উদ্ধার করতে পারেনি।
সামাজিক মাধ্যমে সেনাবাহিনীর শেয়ার করা ছবিগুলোতে দেখা গেছে, উদ্ধার কর্মীরা দড়ি, ক্রেন ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে বড়, খাড়া গর্তের একটি খনির মুখে দাঁড়িয়ে আছেন।
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর কয়লা খনিতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে।
২০১৯ সালে এ ধরনের বড় একটি ঘটনায় প্রতিবেশী রাজ্য মেঘালয়ে একটি অবৈধ খনিতে কাজ করার সময় জীবন্ত অবস্থায় চাপা পড়ে ১৫ খনি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।