কিন্তু দেশটির মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ও ঘূর্ণিঝড় দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের ধারণা, মোখায় মৃত্যুর সংখ্যা কয়েকশ।
Published : 20 May 2023, 09:52 AM
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখায় দেশটিতে ১৪৫ জন নিহত হয়েছেন।
কিন্তু দেশটির মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ও ঘূর্ণিঝড় দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের ধারণা, মোখায় মৃত্যুর সংখ্যা কয়েকশ।
দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় দরিদ্র রাজ্য রাখাইনের ওপর দিয়েই ঝড়ের মূল ঝাপটাটা গিয়েছে। গত রোববার বিকালে আঘাত হানা মোখার তাণ্ডবে রাজ্যটির রাজধানী সিত্তুয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর জলোচ্ছ্বাসে শহরটি ডুবে যায়। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১০ কিলোমিটার বাতাসের তোড়ে মোবাইল টাওয়ার ও কয়েকটি সেতু ধসে পড়ে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে সামরিক জান্তা বলেছে, ১৮ মে পর্যন্ত ১৪৫ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে, এদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের শিবিরগুলোর ৯১ জন আছেন। এর আগে তারা ঘূর্ণিঝড়ে মাত্র তিনজন মারা গেছেন বলে জানিয়েছিল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখায় মিয়ানমারে কতোজনের মৃত্যু হয়েছে তারা স্বতন্ত্রভাবে তা যাচাই করতে পারেনি।
ঘূর্ণিঝড়ের পর স্থানীয় কিছু বাসিন্দারা সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছিল রয়টার্স; তারা জানিয়েছেন, ৪০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আরও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। যারা বেঁচে গেছেন তারা খাবার ও ওষুধের অভাবে ভুগছেন বলেও জানিয়েছিলেন তারা।
রাখাইনে প্রায় ছয় লাখ মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাস। সামরিক বাহিনীর প্রাণঘাতী দমনপীড়ন ও নির্যাতনের মুখে সংখ্যালঘু এ জনগোষ্ঠীর ১০ লাখেরও বেশি মানুষ পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে আছে। প্রধানত বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারের কোনো সরকারই রোহিঙ্গাদের নিজেদের নাগরিক বলে স্বীকার করে নেয়নি।
টেলিগ্রাম, মিয়ানমার রেডিও ও টেলিভিশনে (এমআরটিভি) সম্প্রচার করা এক বিবৃতিতে সামরিক জান্তা বলেছে, “নিজ নিজ রাজ্যের ত্রাণ গোষ্ঠীগুলো উদ্ধার ও পুনর্বাসনের কাজ করছে, স্বেচ্ছাসেবী বেসামরিক সামাজিক গোষ্ঠীগুলো তাদের সহায়তা করছে।”
সামরিক জান্তা এমনটি বললেও জাতিসংঘ ও অন্য বেসরকারি সংস্থাগুলো (এনজিও) জানিয়েছে, ত্রাণ প্রচেষ্টা স্থবির হয়ে আছে, কারণ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে অতি প্রয়োজনীয় খাবার, পানি ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর জন্য এবং ত্রাণ ও চিকিৎসা কর্মীদের মোতায়েনের জন্য তারা জান্তা সরকারের অনুমতির অপেক্ষা করে আছে।
আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু এবং উপড়ে পড়া গাছের কারণে বন্ধ হয়ে থাকা সড়কও ত্রাণ সরবরাহ স্থবির করে রেখেছে।
রোববার স্থানীয় সময় বিকালে ঘূর্ণিঝড় মোখা স্থলে উঠে আসার আগে মিয়ানমার ও বাংলাদেশে প্রায় চার লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
এর আগে ২০০৮ সালে মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের তাণ্ডবে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল, তারপর থেকে মোখা দেশটিতে আঘাত হানা অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।
আরও খবর:
ঘূর্ণিঝড় মোখায় মিয়ানমারে মৃত্যু বেড়ে ২০২