অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে।
সোমবার গণমাধ্যমটি জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে এক হাজারেরও বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন।
রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তুয়ের ৯০ শতাংশেরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা বিবিসিকে জানিয়েছেন। বিবিসি অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
দেশটির সামরিক বাহিনী পুরো রাখাইন রাজ্যকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলাকা ঘোষণা করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১০ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে রাখাইনে আঘাত হানে মোখা, এতে সিত্তুয়ের ঘরবাড়ির ছাদ উড়ে যায় এবং শহরটি জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়।
সামরিক বাহিনীর টেলিভিশন সংবাদ চ্যানেল মায়াওয়াদ্দি জানিয়েছে, কয়েক বছরের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী এ ঘূণিঝড়টিতে মিয়ানমারে ৮৫০টিরও বেশি বাড়ি, ৬৪ স্কুল, ১৪ স্বাস্থ্য স্থাপনা এবং সাতটি মোবাইল টাওয়ার ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে মন্তব্য নেওয়ার জন্য ফোন করা হলেও দেশটির সামরিক সরকারের এক মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে জবাব দেননি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
রাখাইনের মিলিশিয়া বাহিনী আরাকান আর্মির মুখপাত্র জানিয়েছেন, বেসামরিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হওয়ায় ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য তারা তাদের যোগাযোগ সরঞ্জাম ব্যবহার করছেন।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক দপ্তর ওসিএইচএ জানিয়েছে, ঝড়ের আগে থেকেই রাখাইনের প্রায় ৬০ লাখ মানুষের মানবিক সহায়তার দরকার ছিল, এদের মধ্যে জাতিগত হানাহানিতে অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তু হয়ে পড়া প্রায় ১২ লাখ মানুষ আছেন।
ওসিএইচএর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের কর্মকর্তারা উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন করে দেখছেন, এই শিবিরগুলো উপকূলের কাছে এবং অধিকাংশই বাঁশের তৈরি।
রোববার স্থানীয় সময় বিকালে ঘূর্ণিঝড় মোখা স্থলে উঠে আসার আগে মিয়ানমার ও বাংলাদেশে প্রায় চার লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
টেলিফোনে সিত্তুয়ের বাসিন্দারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, শহরটির অধিকাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, নগরীর প্রধান হাসপাতালের ছাদ আংশিক ধসে পড়েছে।
২০০৮ সালে মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের তাণ্ডবে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল।