টানা বৃষ্টিতে সড়কে পানি জমে কলকাতা শহরের নানা এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে, বিঘ্নিত হচ্ছে মেট্রোরেল চলাচল।
Published : 27 May 2024, 12:10 PM
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবের মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মাথায় সিমেন্টের চাঁই পড়ে প্রাণ গেছে একজনের। গাছ ভেঙে, খুঁটি উপড়ে অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
রোববার রাতে ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানার আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি চলছিল। সোমবারও প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে ভারতীয় আবহাওয়া অফিস। টানা বৃষ্টিতে সড়কে পানি জমে কলকাতা শহরের নানা এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
কলকাতার এন্টালি এলাকার বিবির বাগানে ৫১ বছর বসয়ী মোহাম্মদ সজীব ঝড়ের মধ্যে মাথায় সিমেন্টের চাঁই পড়ে মারা গেছেন বলে আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল রোববার রাতে খেপুপাড়া ও পশ্চিমবঙ্গের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম শুরু করে। পুরোপুরি স্থলভাগে উঠে আসার পর বৃষ্টি ঝরিয়ে শক্তি হারিয়ে সকালে এ ঝড় স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়।
আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দমদমে ঝড়ের গতি ছিল সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৯১ কিলোমিটার।
পশ্চিববঙ্গের আট জেলায় সতর্কতা কমানো হলেও কলকাতায় দিনভর ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে।
এছাড় মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এই দুই জেলায় ঝড়ের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার। কখনো কখনো বাতাসের বেগ পৌঁছে যেতে পারে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্তও। এছাড়া ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ায় ।
কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ।ভারতের আবহাওয়া অফিস।এই জেলাগুলিতে ঝড়ের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
আনন্দবাজার লিখেছে, ব্যাপক ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে সুন্দরবনেও। সকাল থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি ব্লকের একাংশ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর এসেছে। গাছ ভেঙে পড়ে বিপর্যস্ত হয়েছে সাগরদ্বীপ।
কলকাতার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র
রোববার রাতে ১৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে কেবল কলকাতাতেই। এর জেরে সোমবার সকাল থেকে শহরে মেট্রোট্রেন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। প্রায় ১০ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ট্রেন চলাচল শুরু করেছে।
কলকাতার পার্কসার্কাস, ঢাকুরিয়া, বালিগঞ্জ, আলিপুরসহ বিভিন্ন এলকার সড়কে জমেছে হাঁটুপানি। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, “আপাতত কোনো ক্রাইসিস নেই।”
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “কিছু কিছু জায়গায় ট্রান্সফরমার উড়ে গেছে। পরিস্থতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। ঝড় থামলে পুরোপুরো জানতে পারবো কোথায় কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।”
ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র জানতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।