দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল অভিশংসিত হয়ে ক্ষমতা হারানোর পর প্রধানমন্ত্রী হান অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
Published : 24 Mar 2025, 12:18 PM
দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত অভিশংসিত প্রধানমন্ত্রী হান দক-সু’কে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্বহাল করেছেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিশংসিত হওয়ার প্রায় তিন মাস পর সোমবার আদালতের আদেশে ক্ষমতা ফিরে পেলেন তিনি।
ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল হঠাৎ করে সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টা পর তা বাতিল করলেও এর জন্য অভিশংসিত হয়ে ক্ষমতা হারান, তখন প্রধানমন্ত্রী হান অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন।
কিন্তু হান সাংবিধানিক আদালতে আরও তিনজন বিচারক নিয়োগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিরোধীদল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এরপর পার্লামেন্ট তাকেও অভিশংসিত করে। ফলে দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে ২৭ ডিসেম্বর অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বরখাস্ত হন তিনি।
রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার সাংবিধানিক আদালতের রায়ের পরপরই হান তার অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট পদে ফেরেন।
আদালতের রায়ের পর হান বলেন, “সাংবিধানিক আদালতের এই প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্তে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।”
তিনি বরখাস্ত থাকার সময় দক্ষিণ কোরিয়ার মন্ত্রিসভার সদস্যরা কঠিন পরিশ্রম করায় তাদের ধন্যবাদ জানান হান।
ইউনের সামরিক আইন জারির আদেশটি এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গভীর রাজনৈতিক সঙ্কটে নিমজ্জিত করে। শীর্ষ কর্মকর্তারা একের পর এক অভিশংসন, পদত্যাগ ও ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হওয়ায় দেশটিতে নেতৃত্ব শূন্যতা তৈরি হয়।
সোমবার সাংবিধানিক আদালতের বিচারকরা সাত-এক ভোটে হানের অভিশংসন বাতিলের রায় দেন। আদালতের দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী আটজন বিচারকের মধ্যে পাঁচজন জানান, অভিশংসনের প্রক্রিয়া বৈধ ছিল, কিন্তু হান সংবিধান বা আইন লঙ্ঘন করেননি বিধায় তাকে অভিশংসিত করার মতো যথেষ্ট অভিযোগ ছিল না।
দুই বিচারক তাদের রায়ে বলেন, তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হানের বিরুদ্ধে আনা অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু থেকে বৈধ ছিল না কারণ পার্লামেন্টের দুই তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতা এর পক্ষে ভোট দেননি।
শুধু একজন বিচারক হানকে অভিংশসিত করার পক্ষে রায় দেন।
বর্তমানে ৭৫ বছর বয়সী হান তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার পাঁচজন রক্ষণশীল ও উদারনৈতিক প্রেসিডেন্টের অধীনে নেতৃস্থানীয় পদে ছিলেন।
তবে এখনও বিরোধীদল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যাচ্ছে যে তিনি ইউনের সামরিক আইন জারির সিদ্ধান্ত আটকাতে যথেষ্ট চেষ্টা করেননি। কিন্তু হান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ইউন ও হানের বিরুদ্ধে অভিশংসন মামলা সাংবিধানিক আদালতের বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় অর্থমন্ত্রী চোয়ি সান মোক দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।