রামলীলা ময়দানে বৃহস্পতিবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তাসহ নতুন মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা শপথ নেবেন।
Published : 20 Feb 2025, 12:31 AM
ভারতে দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেখা গুপ্ত। শালিমার বাগের এই বিধায়ককে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য বেছে নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
বুধবার সন্ধ্যায় নবনির্বাচিত বিধায়কদের দলীয় বৈঠকে রেখার নাম ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার দিল্লির ঐতিহাসিক রামলীলা ময়দানে দুপুর ১২ টায় মুখ্যমন্ত্রী রেখাসহ নতুন মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা শপথ নেবেন।
নয়াদিল্লি বিধানসভা আসনে আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ভোটে হারানো পরবেশ বর্মা বুধবারের বৈঠকে রেখার নাম প্রস্তাব করেন। রেখা এবারই প্রথম বিধায়ক হয়েছেন।
২৭ বছর পর এবারের দিল্লি বিধানসভা নিরবাচনে ফের ক্ষমতায় ফিরেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। অন্যদিকে, টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ভোটে হেরেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি।
ভোটে জয়ের পর ১১ দিন কেটে গেলেও নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে পারেনি বিজেপি। শোনা যাচ্ছিল এবার মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ে চমক দিতে পারে বিজেপি।
বলা হচ্ছিল, লিঙ্গ ভারসাম্য, জাতিগত ও সম্প্রদায়গত সমীকরণ এবং রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার মতো সব অঙ্ক কষেই এবার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বাছাই করতে পারে। উঠে আসছিল একাধিক নাম। তার মধ্যে ছিল একধিক নারীর নামও।
ধারণা করা হচ্ছিল, কোনও নারীই হয়ত এবারে এ পদে আসতে পারেন। অবশেষে তাই হল। একজন নারীকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিল বিজেপি।
সংবাদমাধ্যমে রেখা গুপ্ত বলেন, “আমি বিজেপি-কে ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের সবার আশীর্বাদের জন্য আমি কৃতজ্ঞ। দিল্লিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমি বদ্ধপরিকর।”
এনডিটিভি লিখেছে, বিজেপি-র জন্য, রেখা গুপ্তর নির্বাচনে জয় কেবল ধারাবাহিকতার চিহ্ন নয়, এ এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
রেখা গুপ্ত কে?
রেখা গুপ্ত বণিক সমাজের প্রতিনিধি। তিনি একসময় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র নেত্রী ছিলেন। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। এবারই প্রথম বিধায়ক হলেও রাজনীতিতে তার অভিজ্ঞতা অনেক দিনের।
রেখার জন্ম হরিয়ানার জুলানায় ১৯৭৪ সালে। দিল্লির দৌলতরাম কলেজ এবং উত্তরপ্রদেশের মেরঠের চরণ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে সভাপতি নির্বাচনে জয়ী হন রেখা।
২০০৭ সালে তিনি প্রথম দিল্লির পৌরভোটে জিতেছিলেন। হয়েছিলেন যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আরএসএস-এর সদস্য রেখা বর্তমানে বিজেপি-র নারী মোর্চার অন্যতম সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি।
তাছাড়া, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের চেয়ে গুপ্তর বয়সও কম। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে যে মুখ্য়মন্ত্রীরা আছেন তাদের গড় বয়স ৫৫। আর রেখা গুপ্তর বয়স ৫০।
সুষমার পর ফের এক নারী মুখ্যমন্ত্রী:
দিল্লিতে বিজেপির শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ, যিনি ১৯৯৮ সালে ৫২ দিনের জন্য এই পদে ছিলেন। সুষমার পর কংগ্রেসের শীলা দীক্ষিত এবং সম্প্রতি আম আদমি পার্টির আতিশী মার্লেনার পর চতুর্থ নারী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দিল্লি পেল রেখাকে।
ওদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের একমাত্র নারী মুখ্যমন্ত্রী হয়ে রয়ে গিয়েছিলেন। বিজেপি দিল্লি বিধানসভা নিরবাচনে জয়ের পর ভারতের একমাত্র নারী মুখ্যমন্ত্রী মমতাই থেকে যাবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছিল। রেখা সেই জল্পনার অবসান ঘটালেন।