এবার মন্টানা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মামলা টিকটকের

আইনটির মাধ্যমে আসলে ফেডারেল আইনে নাক গলানো হয়েছে এবং এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিও লঙ্ঘন করে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2023, 12:34 PM
Updated : 23 May 2023, 12:34 PM

প্রথম মার্কিন অঙ্গরাজ্য হিসেবে মন্টানায় নিজেদের ওপর আনা নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের করেছে চীনা মালিকানাধীন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক।

টিকটকের যুক্তি, আসন্ন পয়লা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই নিষেধাজ্ঞা কোম্পানি ও প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারী মার্কিন নাগরিকদের প্রথম সংশোধনীর অধিকারকে লঙ্ঘন করে।

মন্টানার ‘ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে’ দায়ের করা মামলায় টিকটকের অপর যুক্তি হচ্ছে, যে বিষয়গুলোকে কারণ দেখিয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সেগুলো আগে থেকেই ফেডারেল আইনের অধীনের আওতাধীন। এর ফলে আইনটির মাধ্যমে আসলে ফেডারেল আইনে নাক গলানো হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিও লঙ্ঘন করে।

“ফেডারেল আইনের আওতাধীন হওয়ায় এ বিষয়ে কোনো রাজ্যের আইন করার কর্তৃত্ব নেই।”

চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্স মালিকানাধীন এই সামজিক প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করা মার্কিন নাগরিকের সংখ্যা ১৫ কোটির বেশি। তবে, প্ল্যাটফর্মটিতে চীনা সরকারের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগকে কারণ দেখিয়ে গোটা যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আসছেন মার্কিন আইন প্রণেতা ও কর্মকর্তারা।

মন্টানার আইন অনুসারে, প্রতি লঙ্ঘনে টিকটকের ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। আর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনে দৈনিক ১০ হাজার ডলার করে অতিরিক্ত জরিমানাও গোনা লাগতে পারে। টিকটকের একক ব্যবহারকারীদের বেলায় এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়। তবে, মন্টানায় কীভাবে টিকটকের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হবে, সেটি পরিষ্কার নয়।

২০২০ সালে টিকটক ও চীনা কোম্পানি টেনসেন্ট মালিকানাধীন মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন লেনদেন ও নতুন ডাউনলোডে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রচেষ্টা চালান সে সময়ের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তবে, আদালতের বেশ কয়েকটি রায় ওই নিষেধাজ্ঞা আটকে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটি’র প্রধান মার্ক ওয়ার্নার বলেন, তিনি ‘মার্কিন প্রেসিডেন্টকে টিকটক’সহ অন্যান্য বিদেশী মালিকানাধীন অ্যাপে নিষেধাজ্ঞা আরোপের’ ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন। এখন মার্কিন ফেডারেল আদালতে মন্টানার নিষেধাজ্ঞা বাতিলের সম্ভাবনা কংগ্রেসে ওই আইন পাসের প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরেছে।

টিকটকের অনুমান, সর্বমোট ১১ লাখ মার্কিন নাগরিক বসবাস করা ওই অঙ্গরাজ্যে তাদের কয়েক লাখ ব্যবহারকারী আছে।

মামলায় টিকটক বলেছে, তারা ‘চীনা সরকারের সঙ্গে মার্কিন ব্যবহারকারীদের ডেটা শেয়ার করেনি ও করবেও না। আর ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে প্ল্যাটফর্মটি’।

গত সপ্তাহে পাঁচজন টিকটক ব্যবহারকারী এই নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে মন্টানার ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের করেন।

টিকটকের দায়ের করা মামলায় এই আইনের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেওয়ার অভিযোগে অ্যাটর্নি জেনারেল অস্টিন নুডসেনের নাম উল্লেখ করা হয়। এই প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে রয়টার্স নুডসেনের দপ্তরে যোগাযোগ করলে তাৎক্ষনিক সাড়া মেলেনি।

নুডসেনের মুখপাত্র এমিলি ফ্লাওয়ার বলেন, এইসব মামলা মোকাবেলার জন্য অঙ্গরাজ্যের কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত আছে।

“আমরা জানতাম এমন আইনি চ্যালেঞ্জ আসবে। তাই মন্টানার নাগরিকদের প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা সুরক্ষায় সহায়ক এই আইনের পক্ষে লড়তে আমরাও পুরোপুরি প্রস্তুত।” --সোমবার বলেন তিনি।