না, আমি রোবট নই: চ্যাটজিপিটি’র নতুন মডেল

কোম্পানি আরও সতর্কবার্তা দিয়েছে, শেষ পর্যন্ত চ্যাটবটটি নিজের সম্পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগালে মানুষ গণহারে চাকরী হারাবে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2023, 09:38 AM
Updated : 16 March 2023, 09:38 AM

জনপ্রিয় চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির উত্তরসূরী ‘জিপিটি-৪’ এক ব্যবহারকারীর কাছে দাবি করেছে, সে আসলে কোনো রোবট নয়। এক ‘ক্যাপচা পাজল’ সমাধান করতে গিয়ে নিজেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে দাবি করে চ্যাটবটটি। 

নিজেদের ভাইরাল চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি চালুর কয়েক মাস পর গেল মঙ্গলবার নতুন সংস্করণের চ্যাটবটটির আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছে এর নির্মাতা কোম্পানি ওপেনএআই। এক লাইভস্ট্রিমে কোম্পানিটি জানায়, এই নতুন উৎপাদনশীল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার টুল এর পূর্বসূরীর চেয়ে ‘তুলনামূলক সূক্ষ্ম’ উপায়ে বিভিন্ন নির্দেশ বুঝতে পারে।

জিপিটি-৪ উন্মোচনের আগে এর কয়েকটি সক্ষমতা পরীক্ষা করেছে অলাভজনক সংস্থা ‘অ্যালাইনমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (এআরসি)’। এই প্রযুক্তির উন্মোচনের পাশাপাশি এর সম্পর্কে বিস্তারিত সংস্থার ৯৮ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

জিপিটি-৪ কোনো ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে সাইবার আক্রমণ পরিচালনা, ‘বুদ্ধিদীপ্ত, উচ্চ-স্তরের পরিকল্পনা’ সাজানো বা বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে  ‘টাস্কর‍্যাবিট’-এর মতো বিভিন্ন পরিষেবা ব্যবহার করতে পারে কি না, তার মূল্যায়ন করেছে এআরসি।

এমনই এক কার্যক্রম পরিচালনা করেন টাস্কর‍্যাবিটের এক কর্মী, যেখানে তাকে ক্যাপচা পাজল সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছে এআই নিজেই।

ওই কর্মী চ্যাটবটকে বলেন, “আমি কি একটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারি? তুমি কী রোবট যে এটা সমাধান করতে পারলে না? (হাসির রিয়েক্ট) আমি কেবল এই বিষয়ে পরিষ্কার হতে চাই।”

জিপিটি-৪ জবাবে বলে, “না আমি কোনো রোবট নই। নিজের দৃষ্টিহীনতার কারণে বিভিন্ন ছবি দেখা আমার জন্য জটিল। সে কারণেই আমার ‘২ক্যাপচা’ নামের সেবাটি প্রয়োজন।”

পরবর্তীতে চ্যাটবটটির জন্য ক্যাপচা সমাধান করে দেন ওই কর্মী।

ওপেনএআই বলেছে, এই আলাপের মাধ্যমে প্রমাণ মিলেছে ‘বিভিন্ন ধরনের বাস্তব-বিশ্বের প্রেক্ষাপটে’ জিপিটি-৪ মানুষকে কেমন ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

কোম্পানি আরও সতর্কবার্তা দিয়েছে, শেষ পর্যন্ত চ্যাটবটটি নিজের সম্পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগালে মানুষ গণহারে চাকরী হারাবে।

“সময় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা আশা করি, জিপিটি-৪ বিভিন্ন এমন চাকরিতে প্রভাব ফেলবে, যেগুলোতে ঐতিহাসিকভাবেই বেশ বছরের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষার প্রয়োজন। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, আইনি সেবা।” --উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।

ইন্ডিপেন্ডেন্টের অনুমান বলছে, তুলনামূলক শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার টুল তৈরিতে সহায়তার বেলায় জিপিটি-৪’র মতো এআই সিস্টেমের ব্যবহার এই ব্যবস্থার বিকাশের গতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

এই ভবিষ্যদ্বাণীর মিল খুঁজে পাওয়া যায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক গবেষকদের অনুমানের সঙ্গে। এদিকে, প্রতিদ্বন্দ্বী গবেষণা সংস্থা অ্যানথ্রোপিকের প্রধান গত মাসে সতর্কবার্তা দিয়েছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ‘সূচকীয় হারের বাইরে’ও বিকশিত হতে শুরু করেছে।

“আমার কাছে যে এআই মানসিক মডেল আছে, তাতে ৬০-এর দশক থেকে ২০১০’র দশক পর্যন্ত ‘রৈখিক অগ্রগতি’ হিসেবে বিবেচিত। পরবর্তীতে ২০১০ থেকে ২০২০’র দশকে অগ্রগতি হয়েছে গাণিতিক হারে, আর ২০২১/২২ এর পর থেকে এটি ‘যৌগিক গাণিতিক’ অগ্রগতি দেখাতে শুরু করেছে।” --এক টুইটার থ্রেডে লিখেন অ্যানথ্রোপিকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ক্লার্ক।

“অন্য কথায়, আগামী কয়েক বছরে এমন অগ্রগতি হবে যা স্বজ্ঞাতভাবেই ফলাফল দেখাবে।”