২০২২ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যবর্তী সময় ইলন মাস্কের প্রস্তাবিত চুক্তি পেছনে প্রায় তিন কোটি ৩০ লাখ ডলার খরচ করেছে টুইটার।
ওই সময় টুইটারের দৈনিক ব্যবহারকারী সংখ্যা বেড়ে ২৩ কোটি ৭০ লাখে পৌছালেও মাধ্যমটির ক্ষতি হয়েছে ২৭ কোটি ডলার, যা তাদের প্রত্যাশিত ধারণার চেয়েও খারাপ।
টুইটার ক্রয় নিয়ে বেশ কিছুদূর আগানোর পর অধিগ্রহন নিয়ে নিজস্ব অবস্থান পাল্টে ফেলেন মাস্ক। মাস্ককে এই চুক্তিতে রাখতে এখন অনেকটাই মরিয়া টুইটার। আদালতে এই বিষয়টির ফয়সালা হবে অক্টোবর মাসে।
কোনো পক্ষ এই চুক্তি বাতিল করলে একশ কোটি ডলার জরিমানার কথা উল্লেখ রয়েছে সমঝোতার শর্তে। ‘অধিগ্রহন মূলতবির’ কারণ দেখিয়ে নিজেদের সর্বশেষ আর্থিক ফলাফলের প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি টুইটার।
২০২২ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাসের আর্থিক তথ্য রয়েছে এই প্রতিবেদনে।
প্ল্যাটফর্মে থাকা স্প্যাম ও ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা নিয়ে এখনও আগের অবস্থানেই রয়েছে টুইটার, যেটিকে কারণ দেখিয়ে চুক্তি বাতিল করেছিলেন মাস্ক।
“আমরা এসব অ্যাকাউন্টের অভ্যন্তরীণ নমুনা পর্যালোচনা করেছি এবং অনুমান করেছি ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকেও আমাদের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভুয়া বা স্প্যাম অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৫ শতাংশেরও কম।” --বলেছে টুইটার।
২০২১ সালে প্রায় পাঁচশ কোটি ডলার আয় করেছিল টুইটার। তবে, গত এক বছরে প্ল্যাটফর্মটির শেয়ারমুল্য কমেছে ৪৫ শতাংশ।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেস্টারের বিশ্লেষক মাইক প্রোউলক্স বলেছেন, টুইটার ‘শোধানাগারে’ ছিল।
“টুইটারের একজন অধিগ্রহনকারী আছেন, যিনি এটি আর নিতে চান না, একজন সিইও এবং পর্ষদ আছে, যারা এর থেকে মুক্তির পথ খুঁজছেন আর এক দল কর্মী রয়েছে যারা এই দুয়ের মধ্যে আটকে গেছে।” --বলেছেন মাইক।
“এই নাটকের আসল ভুক্তভোগী টুইটার নিজেই।”
গেল বৃহস্পতিবার বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে আয়ের হিসাবে স্ন্যাপ জানিয়েছে, জুন মাসের আগ পর্যন্ত একশ ১১ কোটি ডলার আয় করেছে তারা, যা ওয়াল স্ট্রিটের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
এই খবর প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারমূল্য কমেছে ২৫ শতাংশ। তারা আরও বলেছে, নিজস্ব মাধ্যেমের কয়েকজন বিজ্ঞাপনদাতা খরচ কমিয়ে ফেলার কারণে এই ক্ষতির মুখে পড়েছে তারা।
২০২১ সালে অ্যাপলের গোপনতা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রভাবকেও এই ক্ষতির জন্য দায়ী করেছে সামাজিক প্ল্যাটফর্মটি, যেখানে অন্যান্য অ্যাপের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে পারেন আইফোন ও আইপ্যাড ব্যবহাকারীরা।
টার্গেট ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিজ্ঞাপন ব্যবস্থারও ক্ষতি হয়েছে একই কারণে, যা বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেবা। পাশাপাশি, অ্যাপলের এই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আসার পর থেকে অনলাইনে ব্যবহারকারীর অন্যান্য কার্যক্রম নজর দিতে এবং সেই অনুযায়ী বিজ্ঞাপন দেখাতে পারছেন না তারা।
টুইটার জানিয়েছে, বিজ্ঞাপন থেকে তাদের আয় কেবল দুই শতাংশ বেড়ে একশ আট কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মেটা ও গুগলের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক হিসেবের প্রতিবেদন আগামী সপ্তাহে আসার সম্ভাবনা রয়েছে ।