চিঠিতে লেখা হয়, “কয়েকটি শীর্ষ ও ক্ষমতাবান কোম্পানি অনুমতি না নিয়েই নিজস্ব এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দিতে শিল্পীদের কাজ ব্যবহার করছে।”
Published : 06 Apr 2024, 05:39 PM
এআই ব্যবহার করে শিল্পীদের গান নকল করার প্রবণতা আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে বেড়েছে। এরই প্রতিক্রিয়ায় নিজেদের গান রক্ষার দাবিতে এক খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন কয়েকশ শিল্পী।
‘আর্টিস্ট রাইটস অ্যালায়েন্স’ নামের এক সংগঠনের চিঠিতে স্বাক্ষর করা শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন বিলি আইলিশ, নিকি মিনাজ ও জন বন জোভি’র মতো জনপ্রিয় তারকারা। এমনকি কলম্বিয়ান গায়ক জে বালভিন ও আমেরিকান গায়িকা শেরিল ক্রো’ও আছেন স্বাক্ষরদাতার তালিকায়।
এ চিঠিতে বিভিন্ন এআই নির্মাতা, প্রযুক্তি কোম্পানি ও ডিজিটাল মিউজিক পরিষেবাকে “মানব শিল্পীদের অধিকার লঙ্ঘন ও অবমূল্যায়ন করা এআই প্রযুক্তির ব্যবহার বন্ধ করার’ আহ্বান জানানো হয়েছে।
‘আর্টিস্ট রাইটস অ্যালায়েন্স’ জোটটি সঙ্গীত খাতের অভিজ্ঞ শিল্পীদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। চিঠিতে শিল্পীরা দাবি করেছেন, ভক্তদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি করতে সক্ষম এমন সৃজনশীলতা এগিয়ে নেওয়ার বেলায় এআইয়ের ‘অপার সম্ভাবনা’ থাকলেও একে দায়িত্বশীল উপায়ে ব্যবহার করা উচিৎ।
এআইয়ের এমন ব্যবহারের কারণে শিল্পীরা নিজেদের গানের প্রাইভেসি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যেখানে সম্মতি ছাড়াই এআই মডেলগুলোকে প্রশিক্ষণ দিতে তাদের গান ব্যবহার করা হচ্ছে।
চিঠিতে লেখা হয়, “কয়েকটি শীর্ষ ও ক্ষমতাবান কোম্পানি অনুমতি না নিয়েই নিজস্ব এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দিতে শিল্পীদের কাজ ব্যবহার করছে।”
“আর এ ধরনের বিভিন্ন প্রচেষ্টার লক্ষ্য হল— মানব শিল্পীদের কাজের পরিসর কমিয়ে এর বদলে এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি ‘শব্দ’ ও ‘ছবি’ ব্যবহার করা যাতে শিল্পীদের গানের জন্য যে ন্যায্য রয়্যালটি ফি, তা এড়ানো যায়।”
জেনারেটিভ এআই ব্যবহারের বিরুদ্ধে নেওয়া বড় পদক্ষেপের সর্বশেষ অগ্রগতি এ চিঠি, যেখানে গানের কপিরাইট ও কর্মীদের অধিকার লঙ্ঘনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মার্চে, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এআইয়ের মাধ্যমে শিল্পীদের কণ্ঠস্বর তৈরি বন্ধ করতে প্রথম মার্কিন অঙ্গরাজ্য হিসেবে নতুন এক আইন প্রণয়ন করেছে টেনেসি। আইনটি কার্যকর হবে জুলাইয়ের শুরুতে।
এদিকে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার লাগাম টেনে ধরার লক্ষ্যে সম্প্রতি যুগান্তকারী এক এআই আইনে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যা গোটা বিশ্বে প্রথম এমন ঘটনা।
আইনটিতে শিল্পীদের কাজের অধিকার প্রয়োগের সুযোগ রাখায় এটি ‘সিসাক’, ‘কম্পোজার’স অ্যাসোশিয়েশন’সহ সংগীত শিল্পের বেশ কয়েকটি তদারককারী সংগঠনের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
এআইয়ের ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ব্যবহার নিয়ে আইনটিতে আলাদা বিভাগ রাখা হয়েছে, যা বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে শিক্ষা, নিয়োগ ও বিভিন্ন সরকারি পরিষেবায় প্রবেশের বিষয়টি মাথায় রেখে। এতে করে বিভিন্ন কোম্পানির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের ওপর অন্যান্য বাধ্যবাধকতাও আরোপ করা যাবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম।
ধারণা করা হচ্ছে, আইনটি বাস্তবায়িত হতে পারে ২০২৫ সালে।