বেশিরভাগ গ্রহাণুতে পাথর বা বরফের অস্তিত্ব মিললেও ধাতব কোনো জগতের দিকে এটাই নাসার প্রথম অভিযান।
Published : 15 Oct 2023, 05:34 PM
‘সাইক’ নামের এক ধাতব আদি গ্রহাণু গবেষণার জন্য নতুন রকেট উৎক্ষেপণ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
ছয় বছরের এ যাত্রায় সাইক গ্রহাণুর নামে রাখা নভোযানটিকে বহন করছে স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন হেভি রকেট। আর ২০২৯ সাল নাগাদ ওই গ্রহাণুতে গিয়ে পৌঁছাতে পারে মহাকাশযানটি।
বেশিরভাগ গ্রহাণুতে পাথর বা বরফের অস্তিত্ব মিললেও ধাতব কোনো জগতের দিকে এটাই নাসার প্রথম অভিযান। বিজ্ঞানীদের মতে, এটা হয়ত কোনো গ্রহের অবশিষ্ট ধ্বংসাবশেষ, যেটি থেকে পৃথিবী ও অন্যান্য পাথুরে গ্রহের কেন্দ্রে থাকা বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
ব্রিটিশ সংবাদপত্র ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৩ অক্টোবর সকালে নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে নভোযানটি উৎক্ষেপণ করে স্পেসএক্স। আর ২০২৯ নাগাদ ওই বড় ‘আলু আকৃতির’ গ্রহাণুটিতে পৌঁছাতে পারে এটি।
বেশ কয়েক দশক পাথর, বরফ ও গ্যাসবেষ্টিত গ্রহাণুতে অভিযান চালানোর পর এবারই প্রথম কোনো ধাতব গ্রহাণুতে পাড়ি জমানোর লক্ষ্যস্থির করেছে নাসা।
এখন পর্যন্ত নয়টির মতো ধাতব গ্রহাণুর খোঁজ মিলেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হল সাইক। এর অবস্থান মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝামাঝি, লাখ লাখ গ্রহাণুর মধ্যে। এর প্রথম খোঁজ মিলেছিল ১৮৫২ সালে। আর গ্রিক পুরাণে থাকা আত্মার দেবির নামে এর নামকরণ করা হয়।
“দীর্ঘ সময় ধরেই মানবজাতির স্বপ্ন হল পৃথিবীর ধাতব কেন্দ্রে পৌঁছানো। আপনি জুল ভার্নকেও এটা জিজ্ঞেস করতে পারেন।” --বলেন অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রধান বিজ্ঞানী লিন্ডি এলকিন্স-ট্যানটন।
“এর চাপ ও তাপমাত্রা অনেক বেশি। আর সেখানে পৌঁছানোর মতো প্রযুক্তি তৈরি করাও সম্ভব নয়। তবে, সৌরজগতে থাকা ধাতব কোনো গ্রহাণুতে গিয়ে আমরা সে সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি।”
জোতির্বিদরা রেডারের মাধ্যমে যাচাই করেছেন যে গ্রহাণুটি আকারে অনেক বড়। এর প্রস্থ প্রায় ২৩২ কিলোমিটার। আর দৈর্ঘ্য ২৮০ কিলোমিটার।
তাদের মতে, এতে লোহা, নিকেল ও অন্যান্য ধাতুর ভাণ্ডারও থাকার সম্ভাবনা আছে। আর মহাজাগতিক প্রভাবে একে হয়ত আবৃত করে রেখেছে ‘সিলিকেট’ নামের নিস্তেজ ধূসর পৃষ্ঠের দানা।
“এটা আমাদের কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যাবে, এমন সম্ভাবনা প্রবল।”
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে সৌরজগৎ গঠনের প্রথম দিকের কোনো গ্রহের টুকরা হতে পারে এটি। এলকিন্স-ট্যানটনের মতে, পৃথিবীতে কীভাবে জীবনের উৎপত্তি হল বা গ্রহটি বাসযোগ্য কেন, এমন মৌলিক প্রশ্নগুলোর জবাব মিলতে পারে এ গ্রহাণু থেকে।
এ বছরই ‘বেন্নু’ নামের আদিম গ্রহাণু থেকে নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে নাসার আরেক মহাকাশযান অসিরিস-রেক্স।
আরও খবর: