বাবা রাজীব গান্ধী এবং মা সনিয়া গান্ধীর পর এই পরিবারের তৃতীয় সদস্য হিসেবে এক দশক বাদে বিরোধী দলনেতার চেয়ারে বসলেন রাহুল৷
Published : 26 Jun 2024, 08:19 PM
ভারতের অষ্টাদশ লোকসভায় বিরোধী দলনেতা হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ১০ বছর পর বিরোধী দলনেতা পেল লোকসভা।
বাবা রাজীব গান্ধী এবং মা সনিয়া গান্ধীর পর এই পরিবারের তৃতীয় সদস্য হিসেবে বিরোধী দলনেতার চেয়ারে বসলেন রাহুল৷
বুধবার বিরোধী দলনেতা হয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখোমুখি হয়েছেন রাহুল। তার সঙ্গে করমর্দনে বিরল মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছে লোকসভা।
ভারতে এবারের লোকসভা ভোটে কেরালা রাজ্যের ওয়েনাড় এবং উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলি- দু’টি আসন থেকেই সাড়ে তিন লাখের বেশি ব্যবধানে জয়ী হন রাহুল।
এ পরিস্থিতিতেই তাকে বিরোধী দলনেতা করার জন্য কংগ্রেসের ভেতর থেকে জোরাল দাবি উঠেছিল। এরপর মঙ্গলবার রাতে দিল্লিতে বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে এ বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।
একইসঙ্গে স্পিকার নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শিবিরের প্রার্থী ওম বিড়লার বিরুদ্ধে কংগ্রেস সাংসদ সুরেশকে প্রার্থী করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
এরপর বুধবার লোকসভার স্পিকার পদে ভোটাভুটি হয়। এমন ভোটাভুটিও হল প্রায় ৪৮ বছর পর। বুধবার সকালে ১১ টা নাগাদ ওম বিড়লাকে স্পিকার করার জন্য লোকসভায় প্রস্তাব আনা হয়।
ইন্ডিয়া জোট কে সুরেশকে প্রার্থী করলেও লোকসভায় ধ্বনি ভোটে স্পিকার পদে নির্বাচিত হন ওম বিড়লা। তারপর এনডিএ-এর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী যেমন ওম বিড়লাকে অভিনন্দন জানান, তেমনই তাকে শুভেচ্ছা জানান রাহুল।
আর তখনই পার্লামেন্টে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে হাত মেলান লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল, যাদের সম্পর্ক ভারতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সাপে-নেউলে বললেও অত্যুক্তি হয় না।
রাহুল বিরোধী দলনেতা হওয়ায় এবারের লোকসভার অধিবেশনকে সরাসরি মোদী বনাম রাহুল গান্ধীর দ্বৈরথ হিসেবেই দেখা হচ্ছে৷ যদিও তার শুরুটা হল সৌজন্য দিয়েই৷
বিবিসি জানায়, লোকসভায় বিরোধী দলনেতা হওয়ার জন্য কোনও একক দলকে মোট ৫৪৩ আসনের অন্তত ১০ শতাংশ পেতে হয়। কিন্তু আগের লোকসভা নির্বাচনগুলোতে বিরোধীদল কংগ্রেস বা অন্য কোনও দল তা পূরণ করতে পারেনি। ফলে ২০১৪ সাল থেকে লোকসভা বিরোধী দলনেতা শূন্য ছিল। এবছরের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ৯৯টি আসন পাওয়ায় সেই শূণ্যতা দূর করতে পেরেছে।
এবারের নির্বাচনে মোদীর দল বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় তাকে শরিকদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ওদিকে, কংগ্রেস থেকে দলনেতা হয়ে শক্তিশালী বিরোধীপক্ষ হিসাবে পার্লামেন্টে থাকছেন রাহুল। ফলে সবসময়ই সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করবেন তিনি।
বিরোধীপক্ষের অবস্থান শক্ত হওয়ায় পার্লামেন্টে বিতর্কের সুযোগ থাকবে বেশি। ফলে সরকারের পক্ষে আলোচনা না করেই কোনও বিল পাস করা কঠিন হবে।
আর রাহুলের জন্য তার নতুন এই পদ কেবল যে অনেক দায়িত্বপূর্ণ হবে তাই নয়, তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে হবে এবং ক্ষেত্রবিশেষে ধৈর্য্যধারণেরও পরিচয় দিতে হবে, যেমনটি গত ২০ বছরেও তাকে করতে হয়নি। ফলে বিরোধী দলনেতার পদ রাহুলের জন্যও হতে চলেছে এক বড় পরীক্ষা।