“তাদের নতুন স্লোগান হওয়া উচিৎ ‘অ্যাক্ট ডিফরেন্ট’,” অ্যাপলের পুরোনো বিজ্ঞাপনী প্রচারণা ‘থিংক ডিফরেন্ট’কে ব্যঙ্গ করে বলেন ইইউ’র কমিশনার থিয়েরি ব্রেটন।
Published : 25 Jun 2024, 06:05 PM
অ্যাপলের বিরুদ্ধে নিজেদের নতুন নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে এর শাস্তি হিসেবে মার্কিন টেক জায়ান্ট কোম্পানিটিকে শত শত কোটি ডলার জরিমানা করার হুমকি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
গত মাসে ‘ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (ডিএমএ)’ নামে নতুন একটি আইন চালু করেছে ইইউ। এর লক্ষ্য, শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বাজার নিয়ন্ত্রণ করার প্রবণতা কমিয়ে আনা ও বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসকে নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা।
তবে, এই আইনের শর্তগুলো নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি ও ইইউ’র মধ্যে দ্বিমত দেখা গেছে, যার মধ্যে রয়েছে অ্যাপলও।
এখন ইইউ’র নিয়ন্ত্রকরা বলছেন, অ্যাপল এ আইনের নতুন নিয়মগুলো মেনে চলছে না। তারা এখনও সফটওয়্যার নির্মাতাদেরকে নিজেদের অ্যাপ অন্যান্য উপায়ে অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করায় বাধা দিচ্ছে।
এটি মূলত ইইউ’র দাবি করা বেশ কিছু সমালোচনার অংশ, যা প্রকাশ পেয়েছে সংস্থাটির করা এক তদন্তের প্রাথমিক ফলাফলে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ বাজার বিষয়ক কমিশনার থিয়েরি ব্রেটন বলেছেন, “দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন উদ্ভাবনী কোম্পানির গলে চেপে আসছে অ্যাপল, যার মাধ্যমে তারা গ্রাহকদেরকেও বিভিন্ন নতুন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছে।”
“তাদের নতুন স্লোগান হওয়া উচিৎ ‘অ্যাক্ট ডিফরেন্ট’,” অ্যাপলের পুরোনো বিজ্ঞাপনী স্লোগান ‘থিংক ডিফরেন্ট’কে ব্যঙ্গ করে বলেন তিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাহী কাঠামো ইউরোপীয় কমিশন বলেছে, অ্যাপ স্টোরের ক্ষেত্রে অ্যাপল যে নীতিমালা আছে, সেটির কারণে ‘অ্যাপ নির্মাতারা গ্রাহকদেরকে স্বাধীনভাবে বিকল্প চ্যানেল থেকে বিভিন্ন অফার ও কনটেন্ট ডাউনলোডের সুবিধা দিতে পারছে না।’
তবে, এখনও এইসব অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ আছে অ্যাপলের কাছে, যা পর্যবেক্ষণ করে দেখবে কমিশন, যেখানে তাদেরকে অ্যাপলের এই আইন মেনে চলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে ২০২৫ সালের মার্চ নাগাদ।
আর এই সিদ্ধান্ত অ্যাপলের বিপক্ষে গেলে তারা নিজেদের বৈশ্বিক আয়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত বা দৈনিক জরিমানার মুখে পড়তে পারে। ২০২৩ সালে অ্যাপলের বৈশ্বিক আয়ের হিসাবে তাদের জরিমানার আকার দাঁড়ায় তিন হাজার আটশ কোটি ডলার।
“আমরা অ্যাপলের নতুন ব্যবসায়িক মডেল নিয়ে উদ্বিগ্ন, যার ফলে বিকল্প মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে আইওএস ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বেগ পেতে হচ্ছে অ্যাপ নির্মাতাদের,” সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিযোগিতাবিষয়ক কমিশনার মারগ্রেথ ভেস্টেগার।
এর বিপরীতে বেশ কয়েক মাস ধরেই অ্যাপল বলে আসছে, ‘অ্যাপ নির্মাতা ও ইউরোপীয় কমিশনের মতামতের ভিত্তিতে ডিএমএ মেনে চলার উদ্দেশ্যে তারা অ্যাপ স্টোরে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে।
কোম্পানিটি আরও বলেছে, এ বিষয়ে তারা কমিশনের ‘কথা শোনার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে কাজ করা অব্যাহত রাখবে’।